লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত এদেশে কোনো সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যের অবমাননা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী কোটি বাঙালির হৃদয়ে আঘাত উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, এদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং অর্জনের প্রতি প্রতিক্রিয়াশীলদের চ্যালেঞ্জ। এর নেপথ্যে যারা মদদ এবং অর্থের যোগান দিচ্ছে তাদেরও খুঁজে বের করা হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অতীতে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে, এখনো হচ্ছে। এখন হঠাৎ করে আবার বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির অপচেষ্টা চলছে, তাদের জনস্বার্থে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। ভাস্কর্য ইস্যুতে দেশি- বিদেশি রাজনৈতিক কোনো ষড়যন্ত্র আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদেশে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির ঐক্য সুদৃঢ় জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণকে সাথে নিয়ে রাজনৈতিকভাবে সব অপকৌশল মোকাবিলা করা হবে,তাই সবাইকে ঐকবদ্ধ থাকতে হবে।
তিনি বলেন, উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ধর্মকে ব্যবহার করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী কর্মকাণ্ডে সমর্থন দিয়ে বিএনপি নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। তারা ইতোমধ্যেই এর প্রমাণ করেছে এবং মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী বলয়ের পৃষ্ঠপোষক।
দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, এক্ষেত্রে কিছু কিছু ভাস্কর্যের সাথে বঙ্গবন্ধুর ছবির মিল থাকছে না,কখনো কখনো নকশা বা ডিজাইনেরও ত্রুটি দেখা যাচ্ছে। তাই ভাস্কর্য নির্মাণে বঙ্গবন্ধু ট্রাস্টের অনুমতি গ্রহণ ছাড়া ভাস্কর্য নির্মাণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
সরকার নির্বাচন কমিশনকে দলীয় সংস্থায় পরিণত করেছে, বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই ধরনের বক্তব্য ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যমূলক। বিএনপি জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়ে ব্যর্থতার দায় চাপাচ্ছে নির্বাচন কমিশনের উপর। যারা ভোটের দিন কেন্দ্রে না যাওয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচন ব্যবস্থা ও নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে, তাদের এ অপপ্রয়াস জণগণের কাছে স্পষ্ট।
এর আগে বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তাফা ওসমান তুরান সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
এ সময় বাংলাদেশ ও তুরস্কের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অনেক পুরনো এবং অভিন্ন বিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, মুসলিম প্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ও তুরস্ক উদার গণতন্ত্র চর্চায় বিশ্বাসী। ইউরোপ ও এশীয় সংস্কৃতির সংযোগস্থল তিন সমুদ্রের দেশ তুরস্ক। দু’দেশের মাঝে রয়েছে সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রম।
এসময় দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অদম্য গতিতে এগিয়ে যাওয়া এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলাসহ সামাজিক খাতের উন্নয়নে তুরস্ক সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেন তুরস্কের রাষ্ট্রদূত।
রাষ্ট্রদূত জানান, ২০১৮ সালে গৃহিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তুরস্কের আঙ্কারায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য এবং ঢাকায় কামাল আতাতুর্কের ভাস্কর্য স্থাপনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। তিনি আরো জানান, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে তুরস্কজুড়ে অনেক ভাস্কর্য রয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে তুরস্কে কোনো ভিন্নমত কিংবা বিতর্ক নেই।
অর্থনীতি, অবকাঠামো, কর্মসংস্থান এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার আরো সুযোগ রয়েছে বলে মন্ত্রী এসময় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সূত্র : বাসস