সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে কোনোভাবেই স্বৈরাচার বলা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন তার ভাই ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের এমপি। গায়ের জোরে এরশাদকে স্বৈরাচার বলা হয় উল্লেখ করে জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় এই উপনেতা বলেন, এরশাদ ছিলেন প্রকৃত গণতন্ত্রমনা রাষ্ট্রনায়ক। আদালত তাকে বৈধ রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তিনি বৈধ রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবেই ক্ষমতা হস্থান্তর করেছেন। গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় সংবিধানকে সমুন্নত রেখেই তিনি ক্ষমতা হস্থান্তর করেন।
রোববার রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান কার্যালয়ের মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে জিএম কাদের এসব কথা বলেন। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর এরশাদ সরকারের পতন হয়। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিজোটসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল এদিনটিকে স্বৈরাচার পতন দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। তবে জাতীয় পার্টি এই দিনটিকে ‘সংবিধান সংরক্ষণ দিবস’ হিসেবে পালন করে।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, এরশাদ ক্ষমতা হস্তান্তরের পর থেকে দেশ উল্টো পথে হেঁটেছে। ৯৬ সালের পর থেকে পরপর চারবার বাংলাদেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ঘুষ, দুর্নীতি, বিচার বহির্ভূত হত্যা বেড়েছে। জাতীয় পার্টির শাসনামলে হত্যার রাজনীতি ছিল না। তিন জোটের রুপরেখা অনুযায়ী সংসদীয় সরকার পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়েছে। সংবিধানে ৭০ ধারা সংসদীয় গণতন্ত্রের মূল স্বাদ ধংস করেছে। ৭০ ধারার কারণে সংসদ সদস্যরা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে ভোট দিতে পারেনা। তাতে সরকার প্রধান যা করতে চায় তার বাইরে কিছুই করা সম্ভব হয় না। এই ধারা বিদ্যমান থাকায় নির্যাতন ও দুর্নীতি বেড়ে যায়। সুশাসনের অভাব হয় এবং আইনের শাসন কার্যকর করা যায় না।
আলোচনা সভায জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতেই ডা. মিলন ও নূর হোসেনকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে হত্যা করা হয়েছে। ৩০ বছরেও ডা. মিলন ও নূর হোসেনর হত্যার বিচার হয়নি। জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় গেলে অবশ্যই এই ষড়যন্ত্রমূলক হত্যার বিচার করবে। তিনি বলেন, কেউই ক্ষমতা ছাড়তে চায় না। কিন্তু, এরশাদ রক্তপাত চায়নি বলেই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন।
এসময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, এস.এম. ফয়সল চিশতী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, এডভোকেট মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, আব্দুস সাত্তার মিয়া, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মিসেস শেরিফা কাদের প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।