সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের কেনাকাটা, ব্যয় আর বরাদ্দে রাষ্ট্রের অর্থ অপচয়ের মহোৎসব চলছে। নামমাত্র কাজ করে অর্থ ভাগবাটোয়ারার অভিযোগ আসছে বিভিন্ন প্রকল্প থেকে। খিচুড়ি রান্না, ঘাস চাষ শিখতে, পুকুর খননের কৌশল দেখতে বিদেশ সফরে যাওয়ার মতো হাস্যকর প্রকল্প জমা দেয়া হচ্ছে। এমন প্রকল্পের কিছু কিছু পরিকল্পনা কমিশনের তদারকিতে আটকে যাচ্ছে। আবার কিছু অনুমোদনও পাচ্ছে। অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পেও নানা ছল-ছুতোয় সরকারি অর্থের লুটপাট হচ্ছে। সরকারি কাজ আর প্রকল্প যেন টাকার মেশিন। প্রকল্প হলেই শুধু টাকা উড়ে।
শুধুই উড়ে। সেই টাকা যায় অনেকের পকেটে।
অর্থ লুটপাটের জন্য অসাধু কর্মকর্তারাও বড় ও নতুন প্রকল্পে গুরুত্ব দিচ্ছেন বেশি। এসব কারণ সরকারের উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বড় বাধা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, দেশের প্রবৃদ্ধি বাড়তে থাকার মতো অর্থনৈতিক অগ্রগতির খবর যেমন আশা জাগানিয়া, তেমনি সর্বগ্রাসী দুর্নীতির খবর সেই আশাভঙ্গের কারণ। বিষয়টা এমন, সরকারি প্রকল্প প্রণয়ন বা বাস্তবায়ন নয়, যেন দুর্নীতির নকশা প্রস্তুত করা রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেমন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত শত শত সেতু মানুষের কোনো কাজে লাগছে না। কারণ এসব সেতুর কোনো সংযোগ সড়ক নেই। কোথাও কোথাও ফসলি জমির মাঝে নির্মাণ করা হয়েছে সেতু। এমনো আছে- আশেপাশে রাস্তা নেই, কিন্তু পাশাপাশি দু’টি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এসব সেতু নির্মাণের প্রকল্প কীভাবে গ্রহণ করা হলো? সরকারি অর্থ লুটপাট করা ছাড়া আর কোনো যুক্তি খুঁজে পাওয়া যায় না এসব প্রকল্প নির্মাণের পেছনে। এভাবে রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি, সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা আর ঠিকাদাররা মিলে লুটপাট ও অপচয় করেছেন রাষ্ট্রীয় কোষাগারের বিপুল অর্থ। অথচ করোনাকালে স্বাস্থ্যের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ খাত উপেক্ষিতই থেকে গেছে। তাই দুর্নীতির লাগাম টানতে না পারলে সমাজ ও রাষ্ট্রকে সামগ্রিকভাবে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া কোনোভাবেই সম্ভব হবে না।
অবশ্য দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে উন্নয়ন কার্যক্রমের সুফল থেকে জনগণের বঞ্চিত হওয়ার কথা সমপ্রতি সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেও উচ্চারিত হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির সাবেক সভাপতি ও পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম বলেন, বিদেশ সফরের চেয়ে এই টাকা গবেষণায় ব্যয় করলে দেশ আরো উপকৃত হতো। উন্নয়ন প্রকল্পে এ রকম ব্যয় বাদ দেয়া বাঞ্ছনীয়। বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পে এমন কিছু বরাদ্দ আছে যা হাস্যকর। এ ধরনের ব্যয় হওয়া প্রস্তাবে প্রশ্ন থেকে যায়।
এনআইডি: জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা অব্যাহত রাখার জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ‘আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) (দ্বিতীয় পর্যায়)’ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে এ প্রকল্পেও বিদেশ ভ্রমণের সংস্থান রাখা হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় বিদেশ ভ্রমণ করবেন ৬২ সরকারি কর্মকর্তা। এতে খরচ হবে ১ কোটি টাকা। এ ছাড়া আইডিইএ দ্বিতীয় পর্যায় প্রকল্পের আওতায় প্রবাসে নিবন্ধন টিম পাঠানো এবং প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের নিবন্ধন সংক্রান্ত খাতেও খরচ করা হবে ১০০ কোটি টাকা। কেবল বিদেশ নয়, দেশের অভ্যন্তরে ভ্রমণের জন্যও খরচ করা হবে ২ কোটি টাকা। এর মধ্যে স্মার্ট কার্ড কেনা, উৎপাদন, পারসোনালাইজেশন ও উপজেলা পর্যায়ে পাঠানোর জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৫৫৪ কোটি টাকা, যা মোট খরচের ৩০ শতাংশ। উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছার পর ৫ কোটি স্মার্ট কার্ড বিতরণ ও ব্যবস্থাপনায় খরচ করা হবে ৭৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ উপজেলা পর্যায়ে প্রতিটি স্মার্ট কার্ড বিতরণ ও ব্যবস্থাপনায় ১৫ টাকা করে খরচ করবে ইসি।
১৪ হাজার বীর নিবাস নির্মাণের প্রস্তাব: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্যতম উপহার হিসেবে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনা, শহীদ ও প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের স্ত্রী-সন্তানদের ১৪ হাজার ‘বীর নিবাস’ নির্মাণ করে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এতে খরচ প্রস্তাব করা হয়েছে ২ হাজার ৮১৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও উপজেলা প্রশাসন। প্রতিটি বীর নিবাস নির্মাণের জন্য খরচ ধরা হয়েছে ১৯ লাখ ৫৫ হাজার টাকা করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা দেশের গর্ব। তাদের মধ্যে যারা বেঁচে আছেন যেন যথাযথ সম্মান পান সেটি নিশ্চিত করা জরুরি। শুধু একটি ঘর দিয়ে তাদের সম্মান দেয়া যায় না। অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা যাদের ঘর নেই তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় প্রকল্প নেয়া যেতে পারে।
ঘাস চাষ শিখতে বিদেশ ভ্রমণ: ঘাস চাষ শিখতে বিদেশ সফরের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। ঘাসের চাষাবাদ শিখতে বিদেশ যাবেন ৩২ কর্মকর্তা। এতে মোট বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা, যা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এমন একটি প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব করেছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। ঘাস চাষের কৌশল শিখতে ডজন তিনেক কর্মকর্তাকে বিদেশে পাঠানোর সুযোগ রাখায় এ প্রকল্প নিয়ে সমালোচনা চলছে গত কয়েকদিন ধরে। তবে একনেক সভায় ঘাস চাষ শেখার জন্য বিদেশ সফরে যাওয়ার ক্ষেত্রে কর্মকর্তার সংখ্যা ও বরাদ্দ কমানোর পাশাপাশি ‘সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় লোক’ ছাড়া অন্য কাউকে বিদেশে না পাঠাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আসাদুল ইসলাম।
খিচুড়ি রান্না শিখতে বিদেশ ভ্রমণ: প্রথমবারের মতো শতভাগ সরকারের টাকায় দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য দুপুরে রান্না করা খাবার বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়। এতে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়। এ লক্ষ্যে পরিকল্পনা কমিশনে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) জমা দেয়া হয়। প্রকল্প প্রস্তাবনায় বিদেশে প্রশিক্ষণে অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। পরে বিদেশে ভ্রমণের এই পরিকল্পনা বাতিল করেছে পরিকল্পনা কমিশন।
লিফট ও এসি ক্রয়: যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের প্রস্তাবনায় প্রতিটি লিফটের দাম প্রায় ২ কোটি টাকা, এসির দাম ৫২ লাখ টাকা, সিকিউরিটি ও গেট লাইট প্রতিটি সাড়ে ১২ লাখ টাকা ও সভা কক্ষের টেবিল ১২ লাখ টাকা দাম ধরা হয়েছে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এ ধরনের অবাস্তব দামের প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছিল বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে।
মাটি ভরাটে দুর্নীতি: জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের (জাগৃক) তিনটি প্রকল্পে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মাটি ভরাটের নামে বিপুল পরিমাণ সরকারি অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামের একটি প্রকল্পে প্রায় ২ কোটি টাকার স্থলে মাত্র ৭৫ লাখ টাকার মাটি ভরাটের প্রমাণ পাওয়া গেছে। আর নোয়াখালীর মাইজদীর একটি প্রকল্পে ২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা খরচ দেখিয়ে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা বেশি বিল করা হয়েছে। একই ঘটনা ঘটেছে সংস্থাটির পিরোজপুর জেলার সাইট অ্যান্ড সার্ভিসেস প্রকল্পেও। সেখানে অসত্য তথ্য দিয়ে ১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা বেশি বিল করা হয়েছে। এসব প্রকল্পে প্রাথমিক অনিয়মের সত্যতা পেয়ে একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ।
৫ বছর পর বিদেশ ভ্রমণে বরাদ্দের আবদার: বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলা পল্লী অবকাঠামো উন্নয়নে ৩৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প হাতে নেয়া হয় ২০১৫ সালের জুলাইয়ে। গত ৫ বছরে প্রকল্পের প্রায় ৭০ শতাংশ কাজও শেষ হয়েছে। এখন নতুন করে কিছু অঙ্গ (কম্পোনেন্ট) যুক্ত করে প্রকল্পে ব্যয় বাড়িয়ে বিদেশে শিক্ষা সফর বাবদ আলাদা বরাদ্দের আবদার করা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর আগেও একবার প্রকল্পের সংশোধনী এনে ব্যয় ও মেয়াদ বাড়িয়েছিল। নতুন করে আবার ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। যদিও এই বিদেশ ভ্রমণে বরাদ্দ দাবি নিয়ে আপত্তি তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন। প্রস্তাবের ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভার কার্যপত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
৭ গুন বেশি অর্থ বরাদ্দের আবদার: ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক চার লেনে উন্নীত করতে চায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। সাড়ে ১৫ কিলোমিটার উপজেলা সড়ক ও ৬ মিটার গ্রামীণ সড়ক নির্মাণে ১ হাজার ২০ কোটি টাকা রবাদ্দ চেয়ে প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পে সড়ক নির্মাণের একক দর এলজিইডির প্রচলিত দরের প্রায় ৭ গুণ বেশি। পরিকল্পনা কমিশন বলছে, বর্তমানে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে থাকা সত্ত্বেও কেরানীগঞ্জে চার লেন সড়কের আদৌ প্রয়োজন আছে কি-না, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এ ছাড়া প্রকল্পের আওতায় বিপুল পরিমাণ জমি অধিগ্রহণ করতে চায় এলজিইডি। কিন্তু ওই অঞ্চলে বেদখল হওয়া সরকারি জমি কিংবা স্থাপনা উদ্ধারের পরিকল্পনা নেই। আরো বেশ কয়েকটি খাত নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সমপ্রতি প্রস্তাবের ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভার কার্যপত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে চলতি বছরের অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের জুন নাগাদ।
মানহীন কাজ নিয়ে অসন্তোষ: চলতি অর্থবছরে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীন বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ৩০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এর আওতায় বরাদ্দ রয়েছে ৪৮৪ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়েছে মোট বরাদ্দে মাত্র ৩ শতাংশ। কিন্তু প্রকল্পের পূর্তকাজে চলছে অনিয়ম। এসব মানহীন কাজ নিয়ে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে মন্ত্রণালয় থেকে। প্রকল্পের কাজের গুণগত মান নিশ্চিত করতে তদারকি বাড়াতে প্রকল্প পরিচালকদের (পিডি) হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, দেশব্যাপী বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিম্নমানের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহারের ফলে শর্টসার্কিট ও প্রাণহানি ঘটছে। প্রকল্পের কাজের গুণগত মান খারাপ হলে পিডিদের দায় নিতে হবে। সমপ্রতি মন্ত্রণালয়ের মাসিক এডিপি পর্যালোচনা সভায় এই হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
অস্বাভাবিক প্রকল্প ব্যয় রোধে কঠোর নির্দেশনা: ক্ষমতাসীন সরকারের টানা প্রায় এক যুগের শাসনামলে বেশকিছু মেগা প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় প্রকল্প সংখ্যা ও বরাদ্দে পরিমাণও হু হু করে বেড়েছে। কিন্তু এসব প্রকল্পের বিপরীতে অস্বাভাবিক বরাদ্দের হারও কম নয়। অন্যদিকে উন্নয়নে মেগা বরাদ্দ দেয়া হলেও কাজের গুণগতমান নিশ্চিত করা যায়নি। ফলে উন্নয়ন হলেও তা টেকসই হচ্ছে না। বিষয়গুলো নিয়ে এবার নড়েচড়ে বসেছে পরিকল্পনা কমিশন। জানা গেছে, সম্প্রতি গুরুত্বপূর্ণ ২৩ সচিবের সঙ্গে বৈঠকে করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। সভায় উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) তৈরি ও গুণগত মানসম্মত প্রকল্প বাস্তবায়নে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়। এছাড়া সর্বশেষ একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে কড়া নির্দেশনা দিয়েছেন। কোনো ঠিকাদার হাতে থাকা কাজ শেষ করার আগে অন্য কোনো কাজ পাবে না বলে তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন। বিষয়টি যাতে ভালোভাবে তদারকি হয় এজন্য প্রত্যেক মন্ত্রণালয়কে এ সংক্রান্ত তালিকা নিয়মিত জমা দিতে বলা হয়েছে।