মোঃ ইসমাঈল হোসেন:করোনার প্রথম ঢেউয়েই নাকানিচুবানি খাওয়া কিন্ডারগার্টেন সেক্টর করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে নিমজ্জিত হওয়ার আশঙ্কা প্রবল।
দেশের অর্ধলক্ষাধিক কিন্ডারগার্টেন স্কুল করোনা মহামারিতে প্রায় ৯ মাস বন্ধ থাকায় বিপাকে কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৮ লক্ষাধিক শিক্ষক-কর্মচারী।
অর্ধ লক্ষাধিক কিন্ডারগার্টেন শিক্ষা উদ্যোক্তা আজ দিশেহারা। বাড়ি ভাড়া, শিক্ষক কর্মচারীর বেতন পরিবার পরিজন নিয়ে মহা বিপাকে আছেন কিন্ডারগার্টেন স্কুল পরিচালকগণ।
আপাতদৃষ্টিতে সরকার করোনার ক্ষয়ক্ষতি রক্ষায় পোষাক, শিল্প, কৃষি সহ প্রায় সকল খাতে প্রনোদনার ব্যবস্থা করলেও কিন্ডারগার্টেন সেক্টর রক্ষায় কোন ধরনের পদক্ষেপ এখনো দৃশ্যমান হয়নি।
বিগত সময়ে সরকার কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোতে বিনামুল্যে শিশুদের বই দেয়া ছাড়া আর কোন ধরনের সহযোগিতা খবর নেই। অথচ বর্তমানে দেশের কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোতে প্রায় এক কোটি শিক্ষার্থী অধ্যয়ণরত।
এই সীমিত সুযোগ-সুবিধা ও নানান সীমাবদ্ধতার মাঝেও সামর্থ্যরে সবটুকু দিয়ে শিক্ষাগ্রহণের পথে শিশুদের প্রথম হাতেখড়ি দেয়া হয় কিন্ডারগার্টেন স্কুলেই।
করোনার মহামারিতে মানুষ গড়ার এই কারিগরদের এখন এক প্রকার মানবেতর জীবনযাপনই করতে হচ্ছে। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে গত মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ কিন্ডারগার্টেনগুলো। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সরকার থেকে নিয়মিত বেতন পেলেও সম্পূর্ণ নিজস্ব আয়ে চলা কিন্ডারগার্টেনগুলো পড়েছে চরম বিপাকে। স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাসিক টিউশন ফি পাচ্ছেন না স্কুল কর্তৃপক্ষ। এতে মাসের পর মাস স্কুলের ভবন ভাড়া, শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দেয়া সম্ভব হচ্ছে না স্কুল উদ্যোক্তাদের। দেনা শোধ করতে না পেরে স্কুল বিক্রি করে দেয়ার বিজ্ঞাপনও চোখে পড়েছে কোথাও কোথাও।
একমাত্র আয়ের এই পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত ৮ মাস ধরে বিপাকে আছেন বেতন না পাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীরা। কিন্ডারগার্টেনের এসব শিক্ষক-কর্মচারী এ অবস্থা থেকে উত্তরণে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে কয়েকবার সংবাদ সম্মেলন, স্মারকলিপি প্রদান ও মানববন্ধনও করেছেন কিন্ডারগার্টেন স্কুল এসোসিয়েশন।
মানববন্ধন থেকে এসোসিয়েশন নেতারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত আর্থিক প্রণোদনা, কিন্ডারগার্টেন শিক্ষকদের জন্য বরাদ্দ দেয়া এবং সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করে এই আর্থিক দুরবস্থা থেকে উত্তরণে সরকারি সহায়তার দাবি জানানো হলেও এখনো পর্যন্ত কোন ধরনের ঘোষণা না আসায় চরমভাবে হতাশাগ্রস্থ হয়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে নিমজ্জিত হওয়ার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন কিন্ডারগার্টেন সেক্টরে নিয়োজিত কয়কলক্ষ শিক্ষক।