করোনায় বাদ পড়া পাঠ্যসূচি যুক্ত হচ্ছে ওপরের ক্লাসে

Slider ফুলজান বিবির বাংলা


করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় বাদ পড়া পাঠ্যসূচি শিক্ষার্থীরে ওপরের ক্লাসে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীই যাতে পাঠ্যসূচির সব অংশের ওপরেই জ্ঞান অর্জন করতে পারে সেই জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।

সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে এনসিটিবি থেকে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) বরাবরে পাঠানো হয়েছে। এনসিটিবির ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে যাতে কোনো শিক্ষার্থীই তাদের নিচের ক্লাসের (বর্তমান ক্লাস) পাঠ্যবই নষ্ট না করে। একই সাথে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান প্রধান বরাবরেও এমন নির্দেশনা পাঠানো হচ্ছে বলেও সূত্র জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রতি বছর সরকারের ব্যবস্থাপনায় প্রথম থেকে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। কিন্তু এ বছর করোনার কারণে গত মার্চ মাস থেকেই বন্ধ রয়েছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ফলে শিক্ষাবর্ষের শেষ সময়ে এসে এখন শিক্ষার্থীদের ওপরের ক্লাসে প্রমোশন দেয়ার আগে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ওপরে অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে তাদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে। তবে পাঠ্যবইয়ের পুরো অংশ তাদের এখন এই করোনার মধ্যে পড়ানো কিংবা অ্যাসাইনমেন্ট দেয়াও সম্ভব হচ্ছে না। এই অবস্থায় এনসিটিবি কর্তৃক প্রণীত সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি করে তার ওপরেই শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

ইতোমধ্যে মাউশি সিদ্ধান্ত নিয়ে মাধ্যমিক পর্যায়ের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বাছাই করা নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের ও অধ্যায়ের ওপর সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি করে সেখান থেকে শ্রেণী শিক্ষকের মাধ্যমে অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে তা আবার আদায়ও করছে। ছয় সপ্তাহ ধরে চলবে এই অ্যাসাইনমেন্ট ও পাঠপর্ব। এরপর এই অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়ন করে শিক্ষার্থীদের ওপরের ক্লাসে প্রমোশন দেয়া হবে।

মাউশি সূত্র জানায়, শিক্ষার্থীদের সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ওপর মূল্যায়ন করা হলেও এখানে অনেক অধ্যায় বাদ রয়ে যাচ্ছে। অবশ্য করোনার প্রভাব আর শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে এ ছাড়া অন্য কোনো উপায়ও ছিল না।

এনসিটিবি সূত্র জানায়, শিক্ষার্থীদের এবং তাদের পিতামাতাকেও এখন সচেতন হতে হবে। পাঠ্যবই অন্য বছরের মতো এ বছর নষ্ট করা যাবে না। এ বছর অ্যাসাইনমেন্ট শেষ হলেও সব বই ভালোভাবেই সংরক্ষণ করতে হবে শিক্ষার্থীদেরকেই। সাধারণত বার্ষিক পরীক্ষার পর কেউ কেউ বইগুলো ছোটভাইবোনদের দিয়ে দেয়, কেউ আত্মীয়স্বজনদের কেউ প্রতিবেশীদের দিয়ে দেয়। আবার কেউ কেউ কেজি দরে বিক্রি করে দেয়। কিন্তু এবার তা করা যাবে না। সরকার কর্তৃক বিনামূল্যে দেয়া পাঠ্যবইগুলো সংরক্ষণ করতে হবে।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র সাহা জানিয়েছেন, এনসিটিবির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে একটি চিঠি প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে এ বছর প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের তাদের নিজ দায়িত্বে পুরনো বই সংরক্ষণ করতে হবে। কেননা করোনা পরবর্তী সময়ে স্কুল খুললে শিক্ষার্থীরা ওপরের ক্লাসে প্রমোশন পেলেও গুরুত্বের বিবেচনায় নিচের ক্লাসের কিছু বিষয়ে তাদের ওপরের ক্লাসেও পাঠ দান করা হবে। সেই বিবেচনায় অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের নিজ দায়িত্বেই পুরনো বই সংরক্ষণ করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *