ঢাকা: জনস্বার্থে রিট মামলা পরিচালনা করে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে আন্তর্জাতিক প্রো বোনো অ্যাওয়ার্ড-২০২০ পেলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান। ইংল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান এবং ইকুয়েডরের ৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে লড়াই করে তিনি এই পুরস্কার পেয়েছেন। সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৫ মিনিটে লন্ডনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক বার এসোসিয়েশনের ভার্চ্যুয়াল কনফারেন্সে ইশরাত হাসানের নাম ঘোষণা করা হয়। খুব শিগগিরই ফ্রান্সের প্যারিসে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুরস্কার তুলে দেয়া হবে। ইশরাত হাসান ২০১২ সালে ঢাকা বারে আইন পেশায় যুক্ত হন। এরপর প্র্যাকটিস শুরু করেন হাইকোর্টে।
বাংলাদেশের জনগণের বিশেষ করে দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথে বাধা দূরীকরণ এবং নারী ও শিশুর আইনি অধিকার রক্ষার জন্য অসামান্য অবদানের জন্য আইনজীবী ইশরাত হাসানকে এই পুরস্কার দেয়া হয়। ইন্টারন্যাশনাল বার এসোসিয়েশন হলো সারাবিশ্বের আইনজীবীদের আন্তর্জাতিক সংগঠন।
আন্তর্জাতিক এই সংগঠনের অধীনে রয়েছে ৮০ হাজারের বেশি আইনজীবী এবং ১৯০টি আইনজীবী সমিতি (বার এসোসিয়েশন)। যার কেন্দ্রীয় কার্যালয় ইংল্যান্ডের লন্ডনে অবস্থিত। সংগঠনটি প্রতিবছর সারা দেশের আইনজীবীদের মধ্য থেকে প্রো বোনো ক্যাটাগরিতে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য আইনজীবী, ল’ ফার্ম এবং আইনজীবীদের সংগঠনকে পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়ে থাকে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনীতদের মধ্য থেকে একজনের হাতে বিজয়ীর পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।
এব্যাপারে আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, ভাবতে খুবই ভালো লাগছে বিশ্বের এতোগুলো দেশের আইনজীবীদের মধ্যে আমাকে পুরস্কৃত করা হলো। এটা নিঃসন্দেহে আমার জন্য, আমার দেশের জন্য অত্যন্ত গৌরবের বিষয়। এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মানবাধিকার রক্ষায় বিশেষ করে নারী ও শিশুর অধিকার রক্ষায় কাজ করতে আমাকে আরো উৎসাহ যোগাবে।
পুরস্কারদাতা সংস্থা আইনজীবী ইশরাত হাসান সম্পর্কে বলা হয়েছে, তিনি একজন মানবতাবাদী আইনজীবী, যিনি তার দেশে প্রো বোনো কার্যকলাপের মাধ্যমে গভীর এবং অনন্য ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করেছেন। মামলা পরিচালনার মাধ্যমে আইনজীবী ইশরাত হাসান তার প্রো বোনো উদ্যোগের জন্য স্বীকৃতি পেয়েছেন। ইশরাত হাসানের অসংখ্য কাজের মধ্যে আলোচিত হলো তার রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রেলস্টেশন, বাসস্টেশন, শপিং মল, আদালতসমূহ এবং সকল অফিসসহ জনবহুল স্থানে ব্রেস্টফিডিং রুম এবং শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য আদালত রুল জারি করেন। ফলশ্রুতিতে, বাংলাদেশের অনেক কর্মস্থলে কর্মজীবী মায়েদের শিশুদের জন্য আলাদা রুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আইনজীবী ইশরাত হাসান এই রিটে তার ৯ মাস বয়সী শিশু উমাইর-বিন-সাদীকে পিটিশনার করেছিলেন।
এর আগে জনস্বার্থে মামলা পরিচালনার জন্য আন্তর্জাতিক প্রো বোনো অ্যাওয়ার্ড-২০২০’-এ মনোনয়ন পেয়েছিলেন ইশরাত হাসান। তিনি বাংলাদেশ থেকে প্রথম আইনজীবী হিসেবে প্রো বোনো ক্যাটাগরিতে মনোনীত হন।