যুক্তরাষ্ট্রে শুরু গণতন্ত্রের উৎসব। ঘড়ির নিয়ম মেনে তা শেষ হবে। তারপর? যুযুধান দুই প্রার্থী কী করবেন, তা ঘিরে চলছে জোর জল্পনা। শোনা গিয়েছিল, ভোট শেষ হতেই আগাম জয় ঘোষণা করবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। রোববার অবশ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট সেই জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে তিনি আগাম পার্টির ডাক দিয়ে ফেলেছেন বলে সূত্রের খবর। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন নির্বাচনের দিনটি কাটাবেন পরিবারের সঙ্গেই। ভাষণও দেবেন। অর্থাৎ, ভোটের ফল ঘোষণায় দেরি হলেও মঙ্গলবার রাত যে খুব আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে চলেছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
দিনকয়েক আগেই টিম-ট্রাম্পের পক্ষ থেকে রিপাবলিকানদের ওয়াশিংটন ডিসিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ১১০০ পেনসিলভেনিয়া অ্যাভিনিউ, নিউ ইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসি-২০০০৪-এ। ট্রাম্পের হোটেলে। উদ্দেশ্য, আগাম জয় উদযাপনের পার্টি। কিন্তু বাদ সাধেন ওয়াশিংটন ডিসি’র ডেমোক্র্যাট মেয়র ম্যুরিয়েল বাউসার। স্পষ্ট জানিয়ে দেন, করোনা পরিস্থিতিতে বড় জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এর পরই পার্টির ঠিকানা বদলে যায় হোয়াইট হাউসে। সোমবার জানা গেছে, ইস্ট রুমে আয়োজিত এই পার্টিতে প্রায় ৪০০ জন অতিথি হাজির থাকবেন। যদিও কোভিড পরিস্থিতিতে জমায়েতে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে এই পার্টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে হোয়াইট হাউস এবং টিম ট্রাম্প। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট, করোনা নিয়ে আতঙ্কিত নন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট। ‘ফোর মোর ইয়ার্স’ উদযাপনে ব্যস্ত তিনি।
তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিডেন অবশ্য ভোট পর্বের পরও বিশ্বব্যাপী মহামারীকে হাল্কাভাবে নিতে রাজি নন। তাই ৩ নভেম্বর কোনো উৎসব-উদযাপন নয়, ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সারাদিনই থাকবেন নিজের প্রদেশ ডেলাওয়ারে। স্ত্রী জিল বাইডেন এবং রানিং মেট কমলা হ্যারিসের পরিবারের সঙ্গে। ডেমোক্র্যাট শিবিরের খবর, উইলমিংটনে বক্তব্য রাখবেন তিনি। সেখানে হাজির হওয়ার জন্য অবশ্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মাস্ক পরতে হবে জনতাকে। নির্বাচনের ফল যাই হোক না কেন, তা মেনে নিয়ে বিজয়ী প্রার্থীকে অভিনন্দন জানিয়ে বক্তৃতা করার কথা জানিয়েছেন বাইডেন।
ট্রাম্পও কী একই পথে হাঁটবেন? স্পষ্ট নয়। ভোটের পরও মেইল-ইন-ব্যালট গোনার অনুমতির বিষয়টি নিয়ে প্রথম থেকেই অখুশি ট্রাম্প। এনিয়ে আইনি লড়াইয়ের পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, ‘ভোটের পরও বেশ কয়েক দিন ধরে কয়েকটি ব্যাটেলগ্রাউন্ড স্টেটে মেইল-ইন- ব্যালট গোনার অনুমতি দেয়া হয়েছে। ভয়ঙ্কর ব্যাপার। ভোট শেষ হলেই আমরা আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠকে বসব।’ তবে রিপাবলিকান প্রার্থী যদি ফল নিয়ে বেসুরো কিছু বলেন, বিভিন্ন শহরে উত্তেজনা ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। সে ব্যাপারে আগাম প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে প্রশাসন।
অন্যদিকে, করোনা ইস্যুতে ট্রাম্প প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে লাগাতার সমালোচনা করেছেন সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যাল প্রিভেনশনের প্রধান অ্যান্টনি ফাউসি। যা নিয়ে প্রবল ক্ষুব্ধ বিদায়ী প্রেসিডেন্ট। ফ্লোরিডার ওপা-লোকায় বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গেই সমবেত জনতা ফাউসিকে সরানোর দাবি তোলেন। পরামর্শ শুনে স্বভাবতই খুশি ট্রাম্প বলেন, ‘কাউকে কিছু বলার দরকার নেই। আমি শুধু ভোট মেটার অপেক্ষায়।’ ফলে নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে ফাউসির উপর কোপ পড়বে, আশঙ্কা রাজনৈতিক মহলের।
সূত্র : বর্তমান