ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন অধ্যাদেশে স্বাক্ষর করেছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ। আজ মঙ্গলবার সংশোধনী এ অধ্যাদেশে স্বাক্ষর করেন তিনি। প্রেসিডেন্টের প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রীসভায় ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০০০’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়।
সংসদ অধিবেশন না থাকায় সরকার অধ্যাদেশ আকারে আইনটি জারি করল। সংসদের পরবর্তী অধিবেশনে এই অধ্যাদেশ উপস্থাপন করতে হবে। আইনটি বলবত রাখতে হলে পরে বিল আকারে তা আনবে সরকার।
২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ছিলো যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
আর ধর্ষণের শিকার নারী বা শিশুর মৃত্যু হলে বা দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। পাশাপাশি দু’ক্ষেত্রেই রয়েছে অর্থ দণ্ডের বিধান ছিলো এ আইনে।
এ আইনে শাস্তির মাত্রা বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ডের বিধান করার পাশাপাশি দ্রুততম সময়ে বিচার ও রায় কার্যকর করার জন্য আইন সংশোধনের দাবি দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছিলো বিভিন্ন সংগঠন।
সম্প্রতি নোয়াখালীতে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, সিলেটের এমসি কলেজে তুলে নিয়ে ধর্ষণসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যৌন নিপীড়নের ঘটনার প্রেক্ষাপটে দেশজুড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভে মৃত্যুদণ্ডের দাবির প্রেক্ষিতে আইনে এই সংশোধনী আনা হলো।
মন্ত্রিসভায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) উপ-ধারা সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়। সেখানে এতদিন বলা ছিল- যদি কোনো পুরুষ কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করে, তাহলে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দণ্ডিত হবেন এবং অতিরিক্ত অর্ধদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
আইন সংশোধনে ‘যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ শব্দগুলোর পরিবর্তে ‘মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ শব্দগুলো প্রতিস্থাপিত হয়েছে বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ এর ১ (গ) ধারায় যৌতুকের জন্য সাধারণ জখম করার ঘটনা আপসযোগ্য ছিল না। সংশোধনে সেটা আপসযোগ্য করা হয়েছে বলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন।
