ঢাকা: সারাদেশে নৃশংস ও জঘন্য ন্যাক্কারজনকভাবে চলছে শিশু থেকে বয়স্কদের সম্ভ্রম লুণ্ঠন। মূলত এসবের পেছনে ভারতীয় চলচ্চিত্র, ওয়েব সিরিজ, পর্ণোগ্রাফিসহ দেশীয় সিনেমা দায়ী মন্তব্য করে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের নেতারা বলেছেন, দেশীয় সিনেমার জন্য হাজার কোটি টাকা অনুদান বন্ধসহ ভারতীয় চলচ্চিত্র এবং সব অশ্লীলতা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
তারা বলেন, এদেশে এতোদিন যাবত কোন ধর্ষণ প্রবণতা ছিলনা। এখন এটা মহামারীরূপে ব্যাপকতা ছড়াচ্ছে। এর পেছনে মূল কারণ হলো স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে ভারতীয় চলচ্চিত্রের প্রচার প্রসার। কাজেই এদেশে ধর্ষণ প্রবণতা রুখতে হলে ভারতীয় চলচ্চিত্র, পর্নোগ্রাফি ইত্যাদি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
সোমবার (১২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ১২ দফা দাবী জানিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগসহ সমমনা ১৩ দলের আয়োজনে মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রদ্বীন পবিত্র দ্বীন ইসলাম। এদেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান। কিন্তু মুসলমান জানেনা তাদের নবী-রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জীবনী মুবারক। মুসলমান হিসেবে নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বত মুবারক আজ মুসলমানদের মাঝে নেই।
এর কারণ হচ্ছে বর্তমানে যথাযথভাবে পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা হচ্ছেনা।তাই আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসের মতো ১২ই রবিউল আউয়াল শরীফ দিবসকে বিশ্বছুটির ঘোষণার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আন্তর্জাতিক সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ আন্তর্জাতিক উদযাপন কমিটিকে সর্বোচ্চ সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে।
বক্তরা বলেন, আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রী ও কুচক্রীমহল দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে বন্ধ এবং দেশের অবস্থা পুনরায় নাজুক করার জন্য জনগণকে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলার জন্য আসন্ন শীতকালে দ্বিতীয় দফা করোনার কথা প্রচার করছে। অথচ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলেন, বাংলাদেশে করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ বলতে কিছু আসেনি।দেশের অর্থনীতিকে আরো ধ্বংস করার জন্য, উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে আরো নিম্মগামী করার জন্য আসন্ন শীতকালে কারোনার দ্বিতীয় ওয়েভের নামে আবারো লকডাউনের মতো আত্মঘাতী পদক্ষেপের আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্র রুখতে সরকারী ও বেসরকারী সম্মিলিতভাবে সক্রিয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
তারা বলেন,’ভারত মুখে বন্ধুত্বের কথা বলে এদেশ থেকে হাজার হাজার টন ইলিশ নিচ্ছে। ট্রানজিট, ট্রান্সশিপমেন্টসহ অসংখ্য সুবিধা দিচ্ছে। বিনিময়ে পেঁয়াজ বন্ধ করছে। আর গরুর, মহিষের পঁচা গোশত এবং অন্যান্য নিম্মমানের দ্রব্যাদি পাঠিয়ে এদেশের বাজার অর্থনীতি ধ্বংস করছে। বাণিজ্য বৈষম্য দিন দিন পাহাড়সম হচ্ছে। তিস্তা চুক্তি করছেনা, গঙ্গা চুক্তির সম্পূর্ণ বরখিলাপ করছে। ভারতের এসব আগ্রামী ও বাংলাদেশ বিধ্বংসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
এসময় বক্তারা রাষ্ট্রীয়ভাবে বছরব্যাপী ইসলামী ও সামাজিক অনুষ্ঠানসূচী ঘোষণা করা। যেমন, ওয়াজ মাহফিল, দ্বীনি তা’লীম উনার ব্যবস্থা, বই প্রদর্শনী, সামরিক প্রদর্শনী, সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা, পতাকা উত্তোলন, অস্বচ্ছল ও বেকারদের চাকুরীর ব্যবস্থা দেয়া, গৃহহীনদের গৃহ দেয়ার ঘোষণা দেয়ার দাবি জানান।
সমাবেশ ও মানববন্ধনে সমন্বয় করেন, বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের সভাপতি-আলহাজ্জ মাওলানা মুহম্মদ আখতার হুসাইন বুখারী,বক্তব্য রাখেন- সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্জ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদের সভাপতি- আলহাজ্জ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, মাওলানা মুহম্মদ শওকত আলী শেখ ছিলিমপুরী প্রমুখ।