সিলেট: এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণী গৃহবধূকে দলবদ্ধভাবে ছাত্রলীগ ক্যাডারদের ধর্ষণের ঘটনার রেশ না কাটতেই এবার নগরীতে এক কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষক ছাত্রলীগ ক্যাডার রাকিব হোসেন নিজু (২০) ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী না হলেও ইতিমধ্যে ‘বড় ভাইদের’ হাত ধরে নানা অপরাধ কর্মে জড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় মদন মোহন কলেজের শিক্ষার্থী নিজু একটি সন্ত্রাসী ঘটনায় দায়ের করা মামলারও আসামি। মামলায় কিছু দিন জেলও খেটেছেন তিনি। নগরীর দাঁড়িয়াপাড়ায় ধর্ষণের শিকার ১৪ বছরের কিশোরীকে গত শুক্রবার সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতেই কিশোরীর মা থানায় মামলা দায়ের করেন।
কিশোরীর মায়ের দায়েরকৃত মামলায় অভিযোগ করা হয়, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই কিশোরীকে ২৯ সেপ্টেম্বর বাসার ছাদে নিয়ে ধর্ষণ করে রাকিব হোসেন নিজু। তিনি দাঁড়িয়াপাড়ায় এলাকার মেঘনা ১৪/বি বাসিন্দা আব্দুল কাইয়ুমের ছেলে। তাদের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানাধীন জাউয়া বাজার এলাকায়। ধর্ষিতা কিশোরী খাসদবির এলাকার একটি স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী । তারা নগরীর আরেকটি এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। তাদের মূল বাড়ি সদর উপজেলায়।
এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম মিঞা বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ মামলার আসামিদের গ্রেফতার করতে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
মামলায় অভিযুক্ত নিজু ছাত্রলীগের কর্মী। তিনি মহানগর সেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি পিযুষ কান্তি দে গ্রুপের সাথে জড়িত।
স্থানীয় সিটি কাউন্সিলর (২ নম্বর ওয়ার্ড) বিক্রম কর সম্রাট সংবাদ মাধ্যমকে জানান, অভিযুক্ত নিজু ছাত্রলীগের মিছিল-মিটিংয়ে যায় বলে শুনেছি। এখন তো সবাই-ই ছাত্রলীগ। তবে, শনিবার সকাল থেকে ফেসবুকে একটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে। যাতে দেখা যায় নিজুসহ আরো কয়েকজনকে জেলগেটে ফুলের মালা দিয়ে সংবর্ধিত করছেন কাউন্সিলর সম্রাট। কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়া উপলক্ষে নিজুসহ অন্যদের গলায় মালা পরিয়ে দেন তিনি। পিযুষ গ্রুপ, সিলেট নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ২৭ জানুয়ারি জেলগেটের এই ছবিটি আপলোড করা হয়।
একটি সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৭ আগস্ট নগরীর জিন্দাবাজারের পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্টের সামনে তিন প্রবাসীর উপর হামলা করে ছাত্রলীগের পিযুষ গ্রুপের কর্মীরা। এই মামলায় গ্রেফতার হয়ে গত ২৭ জানুয়ারি নিজুসহ ৬ জন মুক্তি পান। তাদের জেল গেটে সংবর্ধনা জানান কাউন্সিলর সম্রাট। তিনি নিজেও পিযুষের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত। এই ঘটনার পর পিযুষ কান্তি দেও গ্রেফতার হন। বর্তমানে তিনি কারাবন্দি অবস্থায় হাসপাতালে আছেন।