ট্রাম্প ও তাঁর স্ত্রী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত

Slider জাতীয় সারাবিশ্ব

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের পর তাদের কোভিড ১৯ পরীক্ষার ফল পজিটিভি আসে। এর পরপরই ট্রাম্প নিজেই টুইট করে খবরটি জানান দেন। রাত ১২টা ৫৪ মিনিটে নিজের টুইটার একাউন্টে ট্রাম্প লিখেন “ফ্লোটাস অ্যান্ড আই টেস্টেড পজিটিভ ফর কোভিড নাইন্টিন। উই উইল বিগিন আওয়ার কোয়ারেন্টাইন অ্যান্ড রিকভারি প্রসেস ইমিডিয়েটলি। উই উইল গেট থ্রো দিস টুগেদার”।

অবশ্য টেস্টের রিপোর্ট পাবার আগেই বৃহস্পতিবার দিনের শেষভাগ থেকে তাঁরা কোয়ারেন্টাইন শুরু করেন। প্রেসিডেন্টের অন্যতম উপদেষ্টা হোপ হিকসের করোনায় আক্রান্তের খবর নিশ্চিত হওয়ার পরপরই তাঁরা কোয়ারেন্টাইনে গিয়ে টেস্ট রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
যদিও বৃহস্পতিবার তিনি নিউজার্সি সফর করেন। হোপ হিকস গত কয়েকদিন ধরেই প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্টলেডির সঙ্গে সফর করছিলেন। প্রেসিডেন্টকে বহনকারী বিশেষ বিমান এয়ারফোর্স ওয়ানে ভ্রমণসহ বেশ কয়েকটি কর্মসূচিতে তারা খুব কাছাকাছি ছিলেন। গত মঙ্গলবার রাতে ওহাইয়োতে অনুষ্ঠিত প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের অনুষ্ঠানেও তিনি উপস্থিত ছিলেন। পরদিন বুধবার মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যে একটি নির্বাচনী সভা থেকে ওয়াশিংটনে ফেরার পথে বিমানেই অসুস্থতা বোধ করেন হোপ হিকস। সঙ্গে সঙ্গেই তাকে সবার থেকে আলাদা করে ফেলা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার তার কোভিড ১৯ টেস্টের ফল পজিটিভ আসার পর হোয়াইট হাউজসহ সর্বত্রই তুলকালাম শুরু হয়ে যায়। এদিন বিকেলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক টুইটবার্তায় জানান যে, তিনি এবং ফার্স্টলেডি কোয়ারেন্টাইন প্রক্রিয়ার মধ্যে আছেন এবং তাঁরা কোভিড টেস্টের রেজাল্টের অপেক্ষায় আছেন। এর আগে ফক্স নিউজের সেন হেনরির সাথে টেলিফোনে সাক্ষাতকারে ট্রাম্প বলেন, ‘ কোয়ারেন্টাইন করবো কি-না তা এখনও জানিনা। তবে আমরা টেস্ট করিয়েছি। দেখা যাক রিপোর্ট কী আসে।’

এদিকে হোয়াইট হাউজের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একাধিক অনুষ্ঠানে যোগ দেবার কথা ছিল। এরমধ্যে ওয়াশিংটনের একটি হোটেলে তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠান এবং ফ্লোরিডায় একটি নির্বাচনী সভায় যোগ দেবার কথা।

প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প করোনাভাইরাস মহামারিকে শুরু থেকেই খুব বেশি পাত্তা দিতে চাননি। এমনকি মাস্ক পরার আবশ্যকতা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন এবং একটা সময় পর্যন্ত নিজে মাস্ক ব্যবহার করতে রাজি হচ্ছিলেন না। কিন্তু এক পর্যায়ে আমেরিকাজুড়ে এই রোগ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর তিনি এটিকে চায়না ভাইরাস অভিহিত করেন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তিনি নিজের ইচ্ছেমতো মাস্ক ব্যবহারও শুরু করেন। তবে সর্বশেষ গত মঙ্গলবার প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের সময়ও প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনকে মাস্ক পরা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। এ সময় তিনি নিজের পকেট থেকে মাস্ক বের করে দেখিয়ে বলেন, আমি প্রয়োজন হলে এটা পরি। কিন্তু বাইডেন সারাক্ষণ বিরাট একটা মাস্ক পরে থাকেন এবং সবসময় মাস্কের আড়ালেই থাকেন।

৭৪ বছর বয়েসী মানুষ হিসাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প করোনা’র ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের অন্তর্ভূক্ত। গত ৬ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ২ লাখ ৮ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। এ পর্যন্ত দেশটিতে ৭৩ লাখেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে কোভিড ১৯ রোগে। এখনও দেশটিতে গড়ে প্রতিদিন হাজার খানেক মানুষের মৃত্যু হচ্ছে এই রোগে। যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত এপ্রিল মাস থেকেই বলে আসছিলেন যে, করোনাভাইরাস চলে যাচ্ছে। তিনি অবিলম্বে সব ধরণের বিধিনিষেধ শিথিল করার জন্য বিভিন্ন রাজ্যের গভর্ণরদের ওপর চাপ দিয়ে আসছিলেন। তবে ঠান্ডা পড়তে শুরুর করার পর গত কয়েকদিন ধরে দেশটিতে করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে চলেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *