গাজীপুর: দিনের বেলায় অস্ত্র প্রদর্শন করে গাড়ি থেকে নামিয়ে ৯ম শ্রেনীর ছাত্রী অপহরণের ১৬ দিনেও উদ্ধার হয়নি। গ্রেফতার হয়নি কোন আসামীও। ঘটনাস্থল নিয়ে দুই থানায় টানাটানির কারণে পুলিশ মেয়ের অবস্থান জেনেও অভিযান চালাতে পারেনি।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ৯ম শ্রেনীর ছাত্রী (১৪) পিতা মো: আবু তাহের গ্রাম চিনাশুখানিয়া ইউনিয়ন রাজাবাড়ি থানা শ্রীপুর জেলা গাজীপুর। সে এম আর প্রোগ্রেসিভ স্কুল, কাচারী মাঠ, রাজাবাড়ি স্কুলের ৯ম শ্রেনীর ছাত্রী। ১২ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৮ টায় বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার পথে কাপাসিয়া থানাধীন কাপাসিয়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সূর্য নারায়ানপুর পশ্চিম পাড়ারর জনৈক হাবিবুল্লাহর দোকানের পাশে চলমান অটোরিক্সার গতিরোধ করে একদল মুখোশধারী সন্ত্রাসী প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করে মেয়েটিকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিয়ে যায়। অপহরণকারীরা একাধিক প্রাইভেট গাড়ি ব্যবহার করে ওই অপহরণের ঘটনা ঘটায়। ঘটনার পর মেয়ের বাবা আবু তাহের শ্রীপুর থানায় যায়। আবু তাহেরের সাথে স্খানীয় ওয়ার্ড মেস্বার শহিদুল ইসলাম থানায় যায়।
শহিদুল ইসলাম জানায়, শ্রীপুর থানার পরিদর্শক(তদন্ত) মনিরুজ্জামান ঘটনা শোনে প্রযুক্তির সহায়তায় মেয়েটির অবস্থান চিহৃিত করেন। কিন্তু ঘটনাস্থল কাপাসিয়া থানাধীন হওয়ায় মনিরুজ্জামান বাদী পক্ষকে কাপাসিয়া থানায় পাঠায়। ঘটনার দুই দিন পর কাপাসিয়া থানায় একটি মামলা হয়। মামলায় ৪ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। আসামীরা হলেন, আমিনুল, আসাদুল, নাজমুল ও মাসুদ।
মামলার বাদী আবু তাহের জানায়, আসামী আমিনুল কয়েকবার তার মেয়েকে রাস্তায় আটকে কূপ্রস্তাব দিয়েছে। আমি গরীব মানুষ, লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি আমিনুলের পিতা ওসমান আলীকে জানাই। কিন্তু কোন কাজ হয়নি।
তিনি আরো জানান, ১৭ সেপ্টেম্বর মেয়ে উদ্ধারের দাবিতে গাজীপুর ডিসি অফিসের সামনে মানববন্ধন করতে গেলেও অনুমতি না থাকায় মানববন্ধন করা যায়নি। বর্তমানে দুই আসামী এলাকায় ঘুরাফেরা করে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন। তার মেয়েকে উদ্ধারের জন্য তিনি সরকারের নিকট দাবী করেন।
এম আর প্রোগ্রেসিভ স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাসুদ রানা জানায়, স্কুল বন্ধ থাকলেও রেজিষ্টেশনের জন্য মিমকে ডাকা হয়েছিল। স্কুলে আসার পথে সে অপহরণ হয়।
স্কুল ভবনের মালিক নারগিস সুলতানা জানান, দীর্ঘ সময় ধরে স্কুল বন্ধ। স্কুলে কোন ছেলে মেয়ে আসে না।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক(তদন্ত) মনিরুজ্জামান বলেন, বাদী পক্ষ আসার পর প্রযুক্তির সহায়তায় অপহৃত ভিকটিমের অবস্থান কাপাসিয়া থানাধীন পাবুর রাস্তার মোড় এলাকায় আল আরাফা ব্যংকের দক্ষিন পাশে কোন বাড়িতে দেখায়। কিন্তু ঘটনাস্থল কাপাসিয়া থানায় হওয়ায় অভিযান করা যায়নি।
জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, অপহরণের পর পুলিশ ভিকটিমের অবস্থান জেনেও যদি অভিযান না চালিয়ে থাকে তবে সেটা ঠিক হয়নি। এ ধরণের ঘটনার পর পর যে কোন ইউনিট পুলিশের উচিত ভিকটিম উদ্ধার করে সংশ্লিষ্ট থানায় সোপর্দ করা।
কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো: রফিকুল ইসলাম জানান, বাদী পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ভিকটিমকে স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে এমপির কাছে দেয়া হবে। কিন্তু এখনো হয়নি সুতরাং এখন জরুরী ভিত্তিতে ভিকটিম উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তবে মামলার বাদী আবু তাহের বলেছেন, অনেকবার থানায় গিয়েছি। কিন্তু ওসি স্যারের সাথে দেখা হয়নি। তদন্ত দারোগার সাথে দেখা হয়েছে।