সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জের সীমান্ত নদী যাদুকাটায় রাতের আধারে চলছে বালু লুটের মহোৎসব। ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে অবৈধ বালু বোঝাই ৪টি ইঞ্জিনের নৌকাসহ ৫জনকে গ্রেফতার করে আজ ১৪.০৯.২০ইং সোমবার সকালে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলেন-জেলার বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার মিয়ারচর গ্রামের কামাল মিয়া(৫০),হযরত আলী(২৪),রুবেল মিয়া(২২),রবিউল আউয়াল(২৫) ও নুর মিয়া(২২)।
তাদের বিরুদ্ধে তাহিরপুর থানার মামলা নং-৭ দায়ের করা হয়েছে। এব্যাপারে যাদুকাটা নদী তীরবর্তী বাসিন্দা জানান,জেলার তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের গাগটিয়া জালরটেক হতে অদৈত মহাপ্রভুর বাড়ির পশ্চিমপাড় পর্যন্ত প্রায় ২কিলোমিটার এলাকায় চললে অবৈধ ভাবে বালু বিক্রির মহাতান্ডব। প্রতিদিনের মতো গত শনিবার রাত ১২টায় যাদুকাটা নদীতে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা প্রায় অর্ধশতাধিক নৌকায় বালি বোঝাই করার সময় ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে অবৈধ বালু বোঝাই ৪টি ইঞ্জিনের নৌকাসহ ৫ জনকে আটক করে আর অন্যান্যরা নৌকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে প্রথমে যাদুকাটা নদীর তীর ও তীর সংলগ্ন জায়গা থেকে বালি উত্তোলন করে ৭শত থেকে ১হাজার ফুট স্টিলের ইঞ্জিনের নৌকা বোঝাই করে। পরে যাদুকাটা নদী হয়ে রক্তি ও সুরমা নদীপথ দিয়ে জামালগঞ্জ হয়ে কুমিল্লা,চাঁদপুর,কিশোরগঞ্জ ও ঢাকায় সেই বালি পাঠায়। প্রশাসন মাঝে মধ্যে অভিযান চালিয়ে নৌকাসহ শ্রমিকদের আটক করলেও বালু খেকো স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত কোন পদক্ষেপ না নেওয়ার ফলে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছেনা। এব্যাপারে মিয়ারচর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার আজাদ বলেন, প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে পরদিন ভোর পর্যন্ত যাদুকাটা নদী থেকে শতাধিক নৌকা বোঝাই করে প্রায় ১০লক্ষ টাকা বালু বিক্রি করা হচ্ছে। তাতে সরকার লক্ষলক্ষ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে আর আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে কিছু সংখ্যক ব্যক্তিরা কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে প্রসাশন কখনোই জোরালো কোন পদক্ষেপ নেয়না।
কোনাটছড়া গ্রামের গোলাপ মিয়া বলেন,সিন্ডিকেড তৈরি করে পুলিশের নাম ভাংগিয়ে প্রতিফুট অবৈধ বালু থেকে ৫টাকা ও স্থানীয় সাংবাদিকদের নাম ভাংগিয়ে প্রতিফুট বালু থেকে ২টাকা চাঁদা নিচ্ছে স্থানীয় একজন সংবাদকর্মী,তার বিরুদ্ধে মাদক ও চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এব্যাপারে আমি সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার,র্যাব ও জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। গাগটিয়া ৬নং ওয়ার্ড কমিটির কৃষকলীগের সভাপতি সামসুজ্জামান বলেন, রাতের বেলায় যাদুকাটা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে বাড়িঘর নদীতে বিলিন হয়ে যাচ্ছে,আমরা গ্রামবাসী বাধা দিয়েও বাড়িঘর রক্ষা করতে পারছিনা,প্রশাসন সঠিক ভাবে কোন পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে শতশত পরিবার বাড়িঘর হারিয়ে নিঃস্ব হয়েগেছে।
এব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমজাদ হোসেন (০১৬১১-০৫৩১৮২) বলেন, অভিযান চালিয়ে অবৈধ বালু বোঝাই ৪টি নৌকা লোক আটক করা হয়েছে এবং এব্যাপারে থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। অবৈধ বালু উত্তোলনকারী প্রভাবশালী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহযোগীতা কামনা করছেন যাদুকাটা নদীর তীরে বসবাসকারী লক্ষলক্ষ অসহায় জনসাধারণ।