নারায়ণগঞ্জ:এশার নামাজের জামাতের পর সব মুসল্লি যখন মোনাজাত ধরেন ঠিক সেই মুহূর্তেই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে একাধিক এসি। সাথেসাথেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো মসজিদে। একে একে সব মুসল্লিদের শরীর ঝলসে যায়। শুরু হয় করুণ আর্তনাদ। যে যেভাবে পারছে বের হয় মসজিদ থেকে। আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে দগ্ধদের উদ্ধার করে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ৩৭ জনকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়।
এরমধ্যে হাসপাতাল নেয়ার পথে মারা যান মসজিদের সেক্রেটারি আবদুল হান্নান( ৫৫)।
জানা গেছে, ফতুল্লার তল্লা এলাকায় শুক্রবার এশার নামাজ জামাতে আদায় করছিলেন বায়তুল সালাত জামে মসজিদের মুসল্লিরা।
জামায়াত শেষের পর ইমাম মোনাজাত ধরেন। তখনই হঠাৎ একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটে বিকট শব্দে। বিস্ফোরণে মসজিদের দরজা জানালার কাঁচ ভেঙ্গে টুকরো হয়ে যায়। ফ্যান গুলো বাঁকা হয়ে যায়। দগ্ধ মুসল্লিদের বের করার পর পুরো ফ্লোরে ছিল রক্তের ছোপ।
নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যা হাসাপাতালের জরুরী বিভাগের ডাক্তার নাজমুল হোসেন জানান, গুরুতর অবস্থায় ৩৭ জনকে ঢাকা মেডিকেল পাঠানো হয়েছে। তাদের শরীরের ৭০ ভাগই পুড়ে গেছে।
তিনি জানান, রাত ৯টার পর থেকে একের পর এক দগ্ধ রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাদের অনেকের ৭০ ভাগ পুড়ে গেছে। এত রোগী হাসপাতালে নিয়ে আসার ঘটনা আগে ঘটেনি বলে জানান তিনি।
স্থানীয় কাউন্সিলর জমশের আলী মন্টু নয়া দিগন্তকে জানান, হঠাৎ বিস্ফোরণের পর ঘটনা স্থলে গিয়ে দেখি একের পর এক লোকজন পড়ে আছে। সকলেই দগ্ধ। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেই।
এদিকে কিভাবে বিস্ফোরণের সূত্রপাত তা নিয়ে ২ ধরনের বক্তব্য পাওয়া গেছে। কেউ কেউ বলেছেন, মসজিদের প্রবেশপথে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরণ ঘটে আগুনের সূত্রপাত।
আবার কেউ বলছেন, মসজিদের নিচ দিয়ে নেয়া গ্যাস লাইন বিস্ফোরণ থেকে আগুন লাগে।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন জানান, ওই মসজিদের নিচ দিয়ে গ্যাসের পাইপ লাইন নেয়া হয়েছে। সেই পাইপ ছিদ্র হয়ে গ্যাস নির্গত হচ্ছিল। পুরে মসজিদ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় গ্যাস জানালা দিয়ে বাহিরে বের হতে পারেনি। ওই অবস্থায় কেউ মসজিদের ভেতরে এসি অথবা ফ্যানের সুইচ বন্ধ করার সময় সৃষ্ট ছোট্ট স্পার্ক থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এতে মসজিদের ভেতরে আগুন ধরে যায় এবং মুসল্লিরা দগ্ধ হয়।