🍁পত্রকাব্য-৯🍁

প্রিয় মন বালক,
এখন রাত ২ টা বাজে।সবাই ঘুমাচ্ছে। সেই সাথে তুমিও।
তোমার অবহেলা আমাকে মেখলেসকে মনে করিয়ে দেয়।
মোখলেস,যে আমাকে ভীষণ পছন্দ করে। শুধু আমাকেই না আমার লেখা গল্প,কবিতা সব সে পছন্দ করে।

আমার একটা লাইকের জন্য যে তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষা করে।তার মেসেজের একটা রিপ্লাই দিলে সে নিজের জীবন ধন্য মনে করে, সেই মোখলেসই আমার কাছে ভীষণরকম গুরুত্বহীন।তার মেসেজ আমার বিরক্তির কারণ বলে তার মেসেঞ্জার আমি সব সময় ইগনোরে রাখি। আমি দেখবো ভেবে সে একের পর এক মেসেজ দিতেই থাকে।অথচ আমি সেদিকে ফিরেও দেখি না।আমাকে হয়তো তার ভালো লাগে কিন্তু আমার তো তাকে ভালো লাগে না।আমার ভালো লাগে তোমাকে।

কার কাছে যেন শুনেছিলাম মানুষের সাথে যেমন ব্যবহার আমি করবো।তেমনই ফেরত
পাবো আমি। সেটাই মনে হয় এখন ফেরত পাচ্ছি।
মোখলেসের সাথে যা যা করেছি, তুমি আমাকে তাই তাই ফেরত দিচ্ছো।আমি মোখলেসের মেসেঞ্জার ইগনোরে রেখেছি তাই তুৃমিও আমার মেসেঞ্জার ইগনোরে রেখেছো।তার জমে থাকা মেসেজের পাহাড় আমি যেমন সিন করি না।তেমনি তুমিও সিন করোনা আমারটা।
হায়রে নিয়তি!!!
প্রতি সেকেন্ডে সেকেন্ডে হোয়াটসঅ্যাপ চেক করি আর ভাবি তোমাকে লেখা মেসেজের পাশের সাদা টিক চিহ্নগুলো কখন নীল হবে।সেকেন্ড যায়,মিনিট যায়,ঘন্টা যায়,দিন যায়, সপ্তাহ যায়, মাস যায় তবুও তোমার সময় হয় না আমার মেসেজ সিন করার।
আমি এও শুনেছি ভালোবাসার টানেই কেবল ভালোবাসা ফিরে আসে।কিংবা মানুষ মন থেকে যেটা চায় সেটা আজ হোক কাল হোক পূরণ হবেই।তবে আমার এই ছোট ছোট ইচ্ছেগুলো পূরণ হয় না কেন?তোমার কথা ভাবতে গিয়েই আমার বার বার মোখলেসের কথা মনে পড়ে যায়।
মোখলেসও তো তাহলে এই ভাবেই আমার অপেক্ষায় থাকে। আমি তার মেসেজ সিন করলে সে ভীষণ খুশি হয়।আমার কারণে যদি মোখলেসের জীবনটা কিঞ্চিত ধন্য হয় হোকনা।তাই আমি আজ মোখলেসের মেসেজ সিন করলাম।তার সাথে ফোনে কথা বললাম।মোখলেস আনন্দে কেঁদে ফেললো।
একটা কথা মনে রেখো, আমি তার মেসেজ সিন করলাম,রিপ্লাই দিলাম, হায় হেলো করলাম তারমানে এই নয় যে আমি মোখলেসের প্রেমে পড়ে গেলাম। মোখলেসের মেসেজ সিন করে, তার সাথে কথা শেষ করে হোয়াটসঅ্যাপ ওপেন করতেই দেখি তোমাকে লেখা আমার মেসেজগুলোর পাশের সাদা টিক চিহ্ন গুলো সব নীল হয়ে আছে।আমিও তখন আনন্দে ইয়াহু বলে চিৎকার করে উঠলাম।শুধু তাই নয় পেলাম তোমার বিশাল এক মেসেজ।তুমি তো ভালো আর Thank u এই দুইটা শব্দ ছাড়া আর কিছুই শিখনি জীবনে।সেই তুমিই আজ আমাকে এত বড় আবেগময মেসেজ দিয়েছো!
প্রথমে আমার বিশ্বাস হয়নি।বিষয়টা সত্য কিনা এটা ভাবতে আমার টানা ১০ মিনিট সময় লেগেছিল। তুমি নিজ থেকে যেদিন আমায় ফোন দিলে সেদিন আমার নিজেকে
মানুষ মনে হতে লাগলো।
রোজ রাতে আমি তোমাকে স্বপ্নে দেখি।হৃদয় দিয়ে ছুঁয়ে দেই তোমার মনের অলিগলি।আমি কখনই তোমাকে ছুঁতে চাইনি কিংবা তোমার শরীর নিয়েও আমার কোনো দাবী দাাওয়া নাই।
আমি ছুঁতে চেয়েছি তোমার হদয়ের কষ্টাবেগকে।
আচ্ছা আমি মেসেজ দিলে তুমি এত বিরক্ত হও কেন?আমার মেসেজ সিন করলে কি তোমার গায়ে ফোস্কা পড়ে?মাঝে মাঝে মন চায় তোমার সাথে তুমুল ঝগড়া করি।ঝগড়া করে বলি এই পাঁজি ছেলে, মেসেজ সিন করিস না কেন?খুব বেশি রেগে গেলে আমি তোমাকে চরম বকা দেই। ” তিকরি,একরি কিকরি বিকরি” বলে।
তোমার একটা লাইকের জন্য আমি প্রতিদিন ৪/৫ শ লাইক ঘেটে তোমাকে খুঁজতাম।তোমার কোনো লাইক আমার কোনো পোস্টে পড়লো কিনা তা দেখতাম।এখন আর দেখি না।কারণ আমি জানি আমি তোমার লাইক,কমেন্টের যোগ্যই নই।মোখলেস আমার সব পোস্টেই লাভ রিয়াকশন দেয় বাট সেটা আমার মন কাড়ে না।তোমার সামান্য লাইকও আমার মনকে নাড়া দেয়।
কদিন ধরেই শরীরটা খুব খারাপ।একটু সিঁড়ি ভাঙ্গলেই দম বন্ধ হয়ে আসে।নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়।প্রেশারও অনেক বাড়তি,কোলোস্টেরল অনেক হাই,ডায়াবেটিসও মারাত্মক। বয়স হলে যা হয়।হয়তো মরে টরে যাবো।মরে গেলে আমাকে ক্ষমা করে দিও।আমি মরে গেলে কেউ আর তোমাকে মেসেজ যন্ত্রণায় রাখবে না।কেউ কখনই আমার মতো তোমাকে বিরক্ত করবে না।
বিশ্বাস করো আমি যতই কসম কিরা কাটি তোমাকে আর লিখবো না,তবুও ভুল করেই তোমাকে মেসেজ দিয়ে ফেলি।কারণ আমার চেতনে, অবচেতনে শুধুই তুমি।
ভালো থেকো মন বালক।

ইতি
তোমার কেউ না।