আমীন মোহাম্মদ
সৌদি আরব করেসপনডেন্ট
রিয়াদঃ চলতি শিক্ষাবর্ষের শিক্ষা কার্যক্রম শেষ হলে অর্থাৎ রমজানের পর পরই বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল জেদ্দা (বাংলা শাখা)র স্কুল ভবন খালি করে দেয়ার জন্য গত সপ্তাহে সৌদি শিক্ষা মন্ত্রনালয় জেদ্দা শাখার মহা পরিচালক আব্দুল্লাহ ইবনে আহমদ আল সাকাফী স্বাক্ষরিত একটি চিঠি আসে স্কুল পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যানের কাছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির স্কুল খালি করার সিদ্ধান্ত মুল্যয়ন পুর্বক মক্কা অঞ্চলের মাননীয় গভর্ণর মহোদয়ের ১৬/৫/১৪৩৫ তারিখের (৫৯৩৮০শীন,আইন) এবং ২২/৫/১৪৩৫ (৮৫৩৮৫৪বা,ফা) বার্তার আলোকে প্রেরিত।
যেহেতু উক্ত কমিটি স্কুলের ছাত্র/ছাত্রী ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিরাপত্তার অর্থে আপনার স্কুলসমুহকে (ছাত্র/ছাত্রী) খালি করার জন্য বিশোয়িত করেছে এবং স্কুলের ১,২,৩ নং ভবন খালি করার প্রয়োজনীয়তার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
সেহেতু, আপনার উচিৎ ১৪৩৪/১৪৩৫ হিজরী সনের শিক্ষাবর্ষের শেষ নাগাদ ভবনগুলো খালি করে দাওয়া ও ছাত্রদের ফাইল পত্র তাদের অভিবাবকদের নিকট হস্তান্তর করা এবং অন্য একটি এমন ভবন খুজে বের করা যা শিক্ষা মন্ত্রনালয়, সিটি কর্পোরেশন ও সিভিল ডিফেন্সের যাবতীয় শর্তের সাথে পুর্ণ হয়।
আগে একাধিকবার মৌখিকভাবে জানানো হলেও এবারের চুড়ান্ত নোটিশ হাতে পাওয়ার পর নড়েচড়ে বসে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল জেদ্দার পরিচালনা পর্ষদসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং অভিবাবকরা। কিন্ত কিছুই করার নেই তাদের।
নো-লস, নো-প্রফিট নীতিতে পরিচালিত স্কুলের বড় কোন ফান্ড। তাই এই স্বল্প সময়ের মধ্যে ৮০/৯০কোটি টাকার যোগান দেয়া স্কুল কতৃপক্ষ আর অভিবাবকদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আড়াই হাজার ছাত্র/ছাত্রীর শিক্ষাজীবন নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তা কামনা করেছেন স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলে।
এ উপলক্ষে রোববার সকালে জেদ্দা বাংলাদেশ কনস্যুলেটের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্বারকলিপি দিয়েছে স্কুলটিতে অধ্যয়নরত ছাত্র/ছাত্রীরা।
প্রধানমন্ত্রী বরাবর ছাত্র/ছাত্রীদের দেয়া স্বারকলিপি গ্রহন করেন জেদ্দা বাংলাদেশ কন্স্যুলেরটের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল আলম।এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রধানমন্ত্রীর সমীপে যথাশীঘ্র প্রেরণের আশ্বাস দেন তিনি।
এ সময় শিক্ষার্থীরা “শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাঁচাও, প্রবাসী বাঁচাও” দাবীতে কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে একটি মানববন্ধন করে।এতে “বাংলাস্কুলরক্ষায় সরকারের এগিয়ে আসা ছাড়া কোনইবিকল্পনাই”, “শিক্ষার সুযোগ থেকে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হবে প্রবাসী প্রজন্ম?”, “প্রবাসীরা বাঁচলে বাঁচবে বৈদেশিক মুদ্রার যোগান বাঁচবেবাংলাদেশ!”, “প্রবাসে বেড়ে উঠছি আমরা মেধাবী নতুন প্রজন্ম আমরা মুর্খ থাকব??’সহ নানা শ্লোগান সমৃদ্ধ প্লেকার্ড।
জেদ্দা কনস্যুলেটে মানব বন্ধনে অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকগণ আবেগ জড়িত কন্ঠে বাংলাদেশ সরকার বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানান। জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজের ভাগ্য এখন ঝুলে আছে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের উপর। কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা, বৈদেশিকমূদ্রার যোগানদাতা অভিভাবকরা তাই এক বুক প্রত্যাশা নিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুণছেন।