করোনা ভাইরাসের মহামারি সংকটের মধ্যেও বিদেশি বিনিয়োগ আনতে যে সুযোগ হয়েছে সেগুলোকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের গভর্নিং বোর্ডের সভায় এ পরামর্শ দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যোগ দেন। সভার অন্যপ্রান্তে যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
বাংলাদেশে বিনিয়োগে সুবিধা ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনা সংকটের মধ্যেও সম্ভাবনা রয়েছে আমাদের দেশের জন্য। করোনাভাইরাসে একটা ধাক্কা এসেছে এটা ঠিক। আবার সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে। সেটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। কাজেই কারা বিনিয়োগ করতে চায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে সেই বিনিয়োগ যাতে আমাদের দেশে আসে সে ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদেরকে আরো বেশি ইনভেস্টমেন্টটা আনতে হবে, এটার সুযোগ আছে।
অনেক দেশে এখন ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ। আমাদের জনসংখ্যা আছে, জমি তৈরি আছে, অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা আছে। এই সুযোগটায় আমরা কিন্তু ইনভেস্টমেন্ট আরো বেশি আকর্ষণীয় করতে পারিএবং আনতে পারি; আমাদের সেই সুযোগটা রয়েছে। সেই সুযোগটা আমাদের কাজে লাগাতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে বিনিয়োগের পরিবেশ আমাদের রয়েছে, করোনাভাইরাসের কারণে সব দেশেই সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু এই সমস্যার মধ্যে দিয়েই কীভাবে আমাদের দেশের অর্থনীতি এগিয়ে নিয়ে যাবো সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের কাজ করতে হবে।
করোনা পরিস্থিতিতে ব্যবসা-বিনিয়োগের সমস্যার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বসে থাকলে চলবে না। সীমিতভাবে হলেও আমাদের কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা জাতিসংঘ নির্ধারিত এমডিজি খুব দক্ষতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করেছি। এখন এসডিজি (সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল) বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। যে কারণে, ইতিমধ্যে আমরা কতকগুলো বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। যার মধ্যে অবকাঠামো উন্নয়ন অন্যতম।
অবকাঠামো উন্নয়ন না হলে দেশে কখনো বিনিয়োগ আসতে পারে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে নৌপথ, রেলপথ, আকাশ পথে যোগাযোগ উন্নত করার জন্য তার সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
বর্তমান সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে দেশে ইতিমধ্যে বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশে আসা সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ ২.৪৫ মিলিয়ন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৩.৮ মিলিয়ন ডলার হয়েছে।
মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বিনিয়োগকে আরো আকর্ষণীয় করার জন্য ‘বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট সামিট’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন আয়োজনের যে পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে পরিবর্তিত করোনা পরিস্থিতির কারণে সেটা ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে করার বিষয়েও প্রধানমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন।