ঈদুল আজহার ছুটিতে বেড়ে যেতে পারে করোনার সংক্রমণ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আগেই এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। এজন্য কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি প্রয়োগের পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। আদতে বিশেষজ্ঞদের এমন পরামর্শ গ্রহণ করে বাড়তি কোনো ব্যবস্থাই নেয়া হয়নি। ফলে সংক্রমণ বাড়ার ঝুঁকি বেড়েছে বহুগুণ। ঈদে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ কর্মস্থলে থাকার নির্দেশনা রয়েছে। পোশাক কর্মীদেরও বাড়ি ফিরতে মানা করা হয়েছে। কিন্তু এসব নির্দেশনা মানা হচ্ছে কিনা তার তদারকি না থাকায় অনেকে ঈদের ছুটিতে কর্মস্থল থেকে বাড়ি যাচ্ছেন।
এক সঙ্গে অনেক মানুষের যাতায়াতে সড়কে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়েছে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত যানবাহন না পাওয়ায় অনেকে বিকল্প যানে গাদাগাদি করে নিজ নিজ গন্তব্যে যাচ্ছেন। এতে বাড়ছে করোনা ঝুঁকি।
ঈদকে সামনে রেখে ঈদের আগের কয়েকদিন বিভিন্ন মার্কেট ও বিপণিবিতানেও ছিল ক্রেতাদের ভিড়। এসব মার্কেট এবং বিপণিবিতানে মানা হয়নি স্বাস্থ্য নির্দেশিকা। মার্কেটে প্রবেশের সময় তাপমাত্রা মাপা ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারে শুরুতে কিছুটা চেষ্টা থাকলেও সর্বশেষ কিছুদিন ঢিলেঢালা ভাব দেখা গেছে। এ ছাড়া দোকানে দোকানে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেলেও তাদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি অনেকেই মানেনি।
করোনার ঝুঁকি বাড়িয়েছে কোরবানির পশুর হাট। সারা দেশেই পশুর হাট বসেছে। এসব হাটে খুব একটা মানা হয়নি স্বাস্থ্যবিধি। ভিড়ের মধ্যেই পশু কেনাবেচা হচ্ছে সারা দেশে। তবে কোথাও কোথাও কিছু ব্যতিক্রমও দেখা যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শহর এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ গ্রামে গেছেন। তারা নিজ নিজ এলাকায় ঘোরাফেরা করবেন। তাদের মধ্যে করোনা সংক্রমিত মানুষও থাকতে পারেন। এসব মানুষের মাধ্যমে গ্রামে সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে।
ওদিকে ঈদে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। গতকাল তিনি বলেছেন, ঈদুল আজহা এবং বন্যাকে ঘিরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার বাড়তে পারে। মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের আওতাধীন দপ্তর ও সংস্থার মধ্যে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিপত্র (এপিএ) স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, করোনা সংক্রমণের বিস্তার রোধে বেশকিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে। কিন্তু আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে কোরবানির পশুর হাটে ও ঈদযাত্রায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাটা ব্যাহত হতে পারে। এতে করে করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বন্যার কারণে অনেক এলাকায় একসঙ্গে এক জায়গায় অনেক মানুষকে আশ্রয় নিতে হচ্ছে। এতে করেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাটা ব্যাহত হতে পারে। এই দুই কারণে করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।