সাইফুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ বেশ কয়েকদিন যাবত ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জনজীবনে চরম দুর্দশা নেমে এসেছে। বর্তমানে আনারসের পুরোদমে মৌসুম চলছে, কিন্তু অতি বৃষ্টিপাতের কারণে আনারস চাষী ও ব্যবসায়ীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
বিভিন্ন জাতের আনারস রয়েছে। যেমন- হানিকুইন, জায়েন্টকিউ, ঘোড়াশাল প্রভৃতি। এদের মধ্যে মধুপুরে হানিকুইন জাতের আনারস সবচেয়ে বেশি পরিমাণে চাষ করা হয়ে থাকে। হানিকুইন সবচেয়ে মিষ্টি আনারস। পাকা আনারসের শাঁস হলুদ রঙের। চোখ সুঁচালু ও উন্নত। গড় ওজন ১ কেজি। আনারসের সাথে বিভিন্ন ধরনের সাথী ফসলও চাষ করা হয়ে থাকে। আনারসের সাথে আদা, সয়াবিন, সরিষা, কলাই, কচু ইত্যাদি সাথী ফসল হিসেবে চাষ করা যায়।
সারাদেশ ব্যাপী টানা বৃষ্টিপাত ও ভারী বর্ষণ হচ্ছে। এতে অনেক জায়গায় বন্যার সৃষ্টি হয়েছে এবং বন্যার অবনতিও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। টাঙ্গাইলের মধুপুরেও ভারী বর্ষণে ইতোমধ্যেই কয়েকটি জায়গা প্লাবিত হয়েছে। এতে বিভিন্ন ধরনের ফসল বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
সারেজমিনে মধুপুরের জলছত্র ও মোটের বাজারে গিয়ে দেখা যায় যে, “ভোরবেলা থেকে শুরু করে দুপুর পর্যন্ত প্রচুর পরিমাণে আনারস বাজারে এসেছিল। কিন্তু আনারস কেনার তেমন আগ্রহ দেখা যায়নি ব্যবসায়ীদের মধ্যে। ফলে খুবই স্বল্পমূল্যে আনারস চাষীরা তা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।”
এদিকে কয়েকজন আনারস চাষীরা বলেছেন, “আমরা অনেক দূর-দূরান্ত থেকে সাইকেল, অটোভ্যান, অটো দিয়ে ফল নিয়ে আসি বাজারে। কিন্ত টানা বৃষ্টিপাতের কারণে যানবাহনও আসতে চায় না, এতে তাদেরকে বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে। বাজারে যেখানে আনারস প্রতি গড়ে ৩৫-৪০ টাকা বিক্রি করতাম, সেখানে বৃষ্টিপাতের কারণে আনারস প্রতি ২০-২৫ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।”
আনারস চাষী রফিজ মিয়া জানান, “চার বৎসরের বাগানে আনারস আকারে খুব ছোট হয়। এগুলো আনারস প্রতি ১২-১৫ টাকা করে আগে বিক্রি করতে পারতাম। কিন্তু এখন তা ৬-৭ টাকা করেও নিতে চায় না।”
কয়েকজন আনারস ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বললে তারা জানিয়েছেন, “বৃষ্টিপাতের কারণে আমরা আনারস ময়ালে (আড়ৎে) সময়মতো পৌঁছাতে পারছি না। পূর্বে যেগুলো আনারস আড়ৎে নেওয়া হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে বেশকিছু আনারস যানবাহন থেকেই নামানো সম্ভবপর হয়ে উঠেনি। এমতাবস্থায় নতুন করে আরও বেশি পরিমাণে আনারস ক্রয় করে কি করবো।”