গাজীপুর:করোনা নামক ভয়ানক ভাইরাস বিশ্বকে অস্থির করে অতীতের সকল সময় থেকে বেশী বেসামাল করে দিচ্ছে। আমরা বিত্তশালী রাষ্ট্র নই। তাই আমাদের এই পরিস্থিতির সামাল দেয়া অধিক কষ্ট হচ্ছে। করোনা উত্তর সময়ে আমদের অর্থনীতির চাকা কি ভাবে ঘুরবে তা নিয়ে বড্ড চিন্তিত আমরা। বিশ্বের মত আমরাও প্রস্তুত ছিলাম না, এ ধরণের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য। তাই প্রস্তুুতি ও ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি রয়েছে আমাদের। এই অবস্থায় বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতের চরম দৃ:সময় যাচ্ছে। বিশ্ব মহামারী মোকাবেলা করতে গিয়ে বাংলাদেশও অন্যন্য দেশের মত কঠিন পরিস্থিতির মোকাবেলা করছে। এই সময়ে আমাদের সকলকে দল মতের চিন্তা না করে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটনো উচিত।
কিন্তু পরিস্থিতি বলছে আমরা দেশের কঠিন বিপদের সময়ও এক জায়গায় দাঁড়াতে পারছি না। আমাদের মধ্যে মৃত্যুর আগে বা পরেও যেন কেমন মিল নেই। আমরা যেন কেমন হয়ে যাচ্ছি। জীবদ্দশায়ই শুধু নয় মৃত্যুর পরও আমরা শোক প্রকাশ করতে সংকোচবোধ করছি। আমরা মুত্যু নিয়ে ব্যবসতায় মেতে উঠছি। অসুস্থতা ও সুস্থতার সনদ বা মৃত্যুর সনদ নিয়ে আমাদের বানিজ্য, বিশ্বে আমাদের মাথা নীচু করে দিচ্ছে। এই ধরণের নেতিবাচক মানষিকতা থেকে এখনও বের হতে না পারলে আর রক্ষা হবে না আমাদের। তাই সবাইকে একট্রা হয়ে চলমান বিশ্ব মহামারীতে বাংলাদেশকে রক্ষা করা উচিত।
বিশ্ব মহামারীর একমাত্র অস্ত্র এখন করোনা ভাইরাস। আরো কিছু অস্ত্র আছে যাদের প্রকোপ এখনো তীব্র নয়। এখন করোনা মোকাবেলায় আমাদের এক হয়ে কাজ করতে হবে। এই কাজটি করার জন্য বিশেষ করে স্বাস্থ্য খাতের দিকে সকলের কড়া নজর রাখতে হবে। কারণ সৃষ্টিকর্তার নির্দেশে জন্ম ও মৃত্যু হয়। কিন্তু চিকিৎসা হয় মানুষের হাতে। মানুষ মানুষের চিকিৎসা করে। আল্লাহর রহমতে মানুষ মানুষের সেবা করে। জন্ম আর মৃত্যু মানুষের সেবার মধ্য দিয়েই হয়। এই সেবাকে মানবসেবা বলা হয়।
কিন্তু মানুষ যখন মানুষের সেবা নিয়ে ব্যবসা করে, সেবা করতে গিয়ে মানুষ মানুষকে মেরে ফেলে তখন আর সেটাকে সেবা বলা যাবে না বলতে হবে খুন। মানে মানুষ মানুষকে খুন করে। এই কষাইপানা থেকে বের করতে গিয়ে সেবাখাতের দিকে সকলের নজর রাখতে হবে কঠিন ভাবে। শুধু সরকারের দিকে চেয়ে থাকলে সেবাখাত থেকে কষাইরা বিতারিত হবে না।
বাংলাদেশের চলমান বাস্তবতায় গাজীপুর জেলার স্বাস্থ্যখাত নিয়ে আমাদের এই ধারাবাহিক প্রতিবেদন। কারণ বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের চরম অব্যবস্থাপনার কিংখ্যাত আলোচিত শাহেদ করিমের সহযোগী মাসুদ পরভেজ গাজীপুর জেলার সন্তান। মৃত্যুর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ার্যাম্যান শাহেদ করিমের সহযোগী রিজেন্ট হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজ। মাসুদ পারভেজ গাজীপুর জেলার কাপাসিয়ার সন্তান। শাহেদ করিমকে যখন আমাদের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী পাচ্ছিল না, তখন মাসুদ পারভেজ নিজ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন এবং তার কয়েক ঘন্টা পর শাহেদ গ্রেপ্তার হন। র্যাব বলছে, মাসুদ পারভেজের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে শাহেদকে গ্রেপ্তার সহজ হয়েছে। মানে হল, এত বড় ঘটনা ঘটিয়ে মাসুদ পারভেজ নিজ এলাকায় ছিলেন বীরের বেশে। আর নিজ এলাকায় থেকেই শাহেদকে নিয়ন্ত্রন করেছেন। বিশাল ক্ষমতার বিষয় এটি নিঃসন্দেহে। এ ছাড়া শাহেদ গ্রেপ্তারের পর পুলিশকে বলেছেন, পালতক অবস্থায় তিনি কাপাসিয়ায় এসেছিলেন। কিন্তু পুলিশের ধাওয়া খেয়ে কাপাসিয়া থেকে পালিয়ে যান। এই অবস্থায় গাজীপুর জেলা করোনা পরিস্থিতির সময় একটি গুরুত্বপূর্ন ভূমিকায় আছে, এতে কোন সন্দেহ নেই। তাই দেশের ক্রান্তিলগ্নে গুরুত্বপূর্ন দায়িত্বে থাকা গাজীপুর জেলার স্বাস্থ্যখাত নিয়ে আমাদের এই ধারাবাহিক আয়োজন।
শিল্পের শহর গাজীপুর। পুরো জেলায়ই কম বেশী শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। শিল্পখাতের প্রায় অর্ধেক শ্রমিক গাজীপুরে কাজ করে। অনেকেই গাজীপুরকে শিল্পরাজধানী বলতে চায়। কারণ বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক শ্রমিক গাজীপুরেই কর্মরত। তাই স্থানীয় বাসন্দিাদের সঙ্গে সারাদেশ থেকে আসা লাখ লাখ মানুষ গাজীপুরে বসবাস করছেন কর্মের প্রয়োজনে। বিশাল জনগোষ্ঠির এই জেলায় স্বাস্থ্য সেবাখাতও দৃশ্যমান উন্নত। কিন্তুু কার্যত কতটুকু উন্নত, তা নিয়েই গ্রামবাংলানিউজের এই ধারাবাহিক প্রতিবেদন।
অনুসন্ধানে মাঠে থাকা আমাদের ২৪ জনের একটি কর্মী বাহিনী কয়েকভাগে ভাগ হয়ে ইতোমধ্যে কাজ করছেন। অনুসন্ধান চলছে, ইতোমধ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্যও আসছে। বড় বড় হাসপাতালের ডাক্তারদের নাম লিখে চেয়ারে বসে আছেন অন্যরা। নুন্যতম ট্রেডলাইসেন্সও নেই, এমন হাপসাতালে অপারেশন করছেন সরকারী ডাক্তার। গাজীপুর জেলায় কতগুলো বেসরকারী সেবামূলক প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার তালিকা নিয়েও আছে বিভ্রান্তি। এই জেলায় কতগুলো সেবামূলক বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র আপডেট রয়েছে তা নিয়েও আসছে চমৎকার তথ্য। আমাদের এই আয়োজন নিঃসন্দেহে সরকার ও জনগনকে করোনা মোকাবেলায় সেবাখাতকে শক্তিশালী ও ত্রুটিমুক্ত করতে সহায়ক হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
গাজীপুর জেলার স্বাস্থ্যখাত নিয়ে গ্রামাবাংলানিউজের ধারাবাহিক প্রতিবেদন কাল আসছে-“স্বাস্থ্যবান গাজীপুর”-১ । দেখতে চোখ রাখুন—–গ্রামবাংলানিউজে