নাটোর: করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকায় সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ছোটাছুটি করেও বিনা চিকিৎসায় মারা গেলেন মুক্তিযোদ্ধা আব্বাস আলী গাজী। এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধাসহ সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গেছেন সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জনসহ স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আজ বিকেলে মুক্তিযোদ্ধা আব্বাস আলী গাজীর মৃত্যু হয়। নাটোর সদর উপজেলার আগদিঘা গ্রামেই তাঁর বাড়ি।
এদিকে, এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দায়িত্ব অবহেলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল।
মুক্তিযোদ্ধা আব্বাস আলী গাজীর ছেলে আসকান আলী গাজী জানান, মুক্তিযোদ্ধা আব্বাস আলী গাজী দুই বছর ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে রবিবার সকালে সদর উপজেলার আগদিঘা কাটাখালী গ্রামের বাড়ি থেকে তাঁর বাবাকে নাটোর শহরের একটি হাসপাতালে নেয়া হয়। করোনার উপসর্গ থাকায় সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দুপুর ১টার দিকে পাঠানো হয় নাটোর সদর হাসপাতালে। কিন্তু করোনার উপসর্গ থাকায় সরকারি এই হাসপাতালেও ঠাঁই হয়নি তাঁর। সদর হাসপাতাল থেকে দুপুর দেড়টার দিকে ফিরিয়ে দেয়া হয় তাঁকে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার চিকিৎসা না করায় দুপুর আড়াইটার দিকে পুনরায় তাকে একটি ক্লিনিকে নেয়া হয়। সেখানে ক্তিযোদ্ধা আব্বাস আলী গাজীকে অক্সিজেন ও নেবুলাইজার দেয়া হয়। শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিকেল ৩ টার দিকে ক্লিনিক থেকে বের করলেই তার মৃত্যু হয়। এরপর বিকেল ৫টার দিকে করোনার নমুনা সংগ্রহের জন্য সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয় মুক্তিযোদ্ধা আব্বাস আলী গাজীর মরদেহ। সেখানে নমুনা সংগ্রহ শেষে তাঁর মরদেহ সদর উপজেলার আগদিঘা এলাকায় নেয়া হয়।
মুক্তিযোদ্ধা আব্বাস আলী গাজীর ছেলে আসকান আলী এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন।
নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল জানান, এভাবে অসহযোগিতায় কারও মৃত্যু মেনে নেয়া যায় না। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
নাটোর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহরিয়াজ ঘটনার তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আর সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য বিভাগের কেউ দায়িত্ব অবহেলা করে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নাটোর সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগে দুপুরে কর্মরত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রাসেল জানান, মুক্তিযোদ্ধা আব্বাস আলী গাজীকে করোনা ইউনিটে ভর্তি করার কথা বললে তাঁর পরিবারের সদস্যরা করেননি।