সাইফুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ দুই পুলা আর এক ছোট মাইয়্যা নিয়া খুব কষ্টে আছি। ঘরে প্রতিদিনই কেঁচো, সাপ, ব্যাঙ, পোকা উঠে। চারিপাশে পানি আর পানি। পয়ঃপুলাপান নিয়া সারাদিন বিছানায়ই থাকন লাগে। আমাগো এখন পর্যন্ত কেউ দেখতেউ আসে নাই। একমাত্র ভরসা (ভুরা) ভেলা। ভেলা দিয়া পাশের বাড়িতে যাইয়া এক বেলা রাইনদা তিনবেলা খাই। কথাগুলো বলছিলেন টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের থলপাড়া মধ্যপাড়া গ্রামের (প্রবাসী) ডা. আব্বাসের স্ত্রী আছিয়া বেগম (৪০)।
দক্ষিণ পাশের বাসার কৃষক বদর উদ্দিনের মেয়ে ফারজানা আক্তার (২৫) বলেন, বাড়িতে পানি উইঠা গেছে। চুলায়ও পানি উঠছে। ইটমিট বিছাইয়া যেমনেই হোক রানদন লাগবো। না খাইয়াতো থাকতে পারুম না। আমগোতো দেহার মতো কেউ নাই।
সম্প্রতি বন্যার পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে অন্যান্য উপজেলার মতো মির্জাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত শুরু হয়েছে। এদিকে ফতেপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সাথে পানি বন্দি হয়েছে বেশ কয়েকটি পরিবার। তবে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধি তাদের কোনো খোঁজ-খবরই নেননি বলে অভিযোগ তোলেন তারা।
এ বিষয়ে ফতেপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুর রউফ জানান, “প্রত্যেক মেম্বারকে বলে দেয়া হয়েছে যে যে গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে সেসব এলাকার তালিকা তৈরি করতে। ইতিমধ্যে ২শ জনের তালিকা করে ইউএনও অফিসে পাঠানো হয়েছে। আজ-কালের মধ্যে ওইসব পরিবারের জন্য ত্রাণ আসার কথা রয়েছে।”
উপজেলা প্রকল্প অফিস তথ্যমতে উপজেলার বহুরিয়া, ফতেপুর, ভাদগ্রাম, তরফপুর, মহেড়া ও পৌরএলাকার প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার বন্যাকবলিত। এছাড়াও উয়ার্শী, আনাইতারা, বানাইল ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম প্রায়। দিনের পর দিন এভাবে পানি বাড়তে থাকলে উপজেলাজুড়ে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ অবস্থার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক রাস্তাও তলিয়ে গেছে।
আর এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবদুল মালেক বলেন, “বন্যাকবলিত এলাকার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ আছে। ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম দু,একদিনের মধ্যেই চালু করা হবে।”