বাংলাদেশ ফেরতদের করোনা ফ্লাইট বন্ধ করলো চীন ও ইতালি

Slider জাতীয় সারাদেশ


বাংলাদেশফেরত যাত্রীদের শরীরে করোনা পাওয়ায় ফ্লাইট বন্ধ করেছে চীন ও ইতালি। দুটি দেশই এক সপ্তাহের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। চীনের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে ৬ই জুলাই থেকে। ওদিকে বাংলাদেশ থেকে দেশে ফেরা ১৪ নাগরিকের শরীরে করোনা শনাক্ত করেছে ভিয়েতনাম। এরপরই তাদেরকে কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স, সিনহুয়া, ভিএন এক্সপ্রেস। রয়টার্সের খবরে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে রোমে যাওয়া একটি ফ্লাইটে ‘উল্লেখযোগ্য সংখ্যক’ যাত্রীর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এই নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সরকার ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং শেনজেন অঞ্চলের বাইরে থেকে আসা সকল যাত্রীর জন্য নতুন পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করবে।

এদিকে ইতালি থেকে প্রকাশিত রোমা টুডে জানিয়েছে, কয়েকদিনে বাংলাদেশ থেকে রোমে যাওয়া ৩৯ জনের শরীরে (২৪ ঘণ্টায় ১২ জন) করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। তাই ঢাকা থেকে যাওয়া যাত্রীদের নিয়ে ইতালি বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন।

ওদিকে বার্তা সংস্থা সিনহুয়া বলেছে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঢাকা-গুয়াংঝু ফ্লাইট এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ করেছে চীনের বেসামরিক বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ। গত ২৮শে জুন এই বিমানে যাওয়া ৫ যাত্রীকে করোনায় আক্রান্ত বলে শনাক্ত হওয়ার ফলে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এতে আরো বলা হয়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিরুদ্ধে এই স্থগিতাদেশ শুরু হয়েছে ৬ই জুলাই থেকে। এটা এ যাবৎকালের মধ্যে তৃতীয় দফা কড়াকড়ি। বিশেষ করে বিদেশি কোনো বিমান সংস্থার বিরুদ্ধে এটা প্রথম স্থগিতাদেশ। চীনে করোনাভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণের জন্য গত ৪ঠা জুন থেকে পুরস্কার এবং স্থগিত মেকানিজম চালু করেছে সিভিল এভিয়েশন এডমিনিস্ট্রেশন অব চায়না (সিএএসি)। সিএএসি’র পলিসি অনুযায়ী, যদি চীনে যাওয়া কোনো এয়ারলাইন্সের সব আরোহীকে টানা তিন সপ্তাহ পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ পাওয়া যায়, তাহলে ওই এয়ারলাইন্সকে সপ্তাহে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়িয়ে দু’টি করার অনুমোদন দেয়া হবে। আবার যদি যাত্রীদের মধ্যে করোনাভাইরাস পজেটিভ ৫ জনের ধরা পড়ে তাহলে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হবে। তবে করোনা আক্রান্ত যদি ১০ জন পাওয়া যায় তাহলে এই স্থগিতাদেশ চার সপ্তাহের জন্য স্থায়ী হবে।
অনলাইন ভিএন এক্সপ্রেস লিখেছে, বাংলাদেশ থেকে ফেরত যাওয়া ভিয়েতনামের ১৪ নাগরিক করোনায় আক্রান্ত। তারা দেশে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষায় করোনা আক্রান্ত বলে শনাক্ত করা হয়েছে। এরপরই কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। থানহ হোয়া প্রদেশের বিম সোন টাউনে কোয়ারেন্টিনে রাখা এসব ব্যক্তির বয়স ২৬ থেকে ৫৬ বছরের মধ্যে। এ খবর দিয়েছে ভিয়েতনামের অনলাইন ভিএন এক্সপ্রেস। এতে বলা হয়, আক্রান্তদের মধ্যে তিনজন হো চি মিন সিটির। দু’জন হ্যানয়ের। দু’জন থানহ হোয়া’র। বাকিরা হাই দুয়ং, ফু থো, কুয়াং ট্রি, বিনহ ডিনহ, গিয়া লাই, বেন ট্রে এবং হাউ গিয়াং প্রদেশের। সোমবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ কুয়াং নিনহ’র ভ্যান ডন বিমানবন্দরে অবতরণ করে ভিয়েতজেট ফ্লাইট ভিজে ৫৯৬৭। এতে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান এবং মালদ্বীপ থেকে ২০০ যাত্রী বহন করে নেয়া হয়। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু জানানো হয় নি। থানহ হোয়া’র সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলে ফেরত যাওয়া ব্যক্তিদের করোনা পরীক্ষা করা হয়। এতে বাংলাদেশ থেকে ফেরত যাওয়া ১৪ ভিয়েতনামির দেহে করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে। সোমবার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হাইজিন অ্যান্ড এপিডেমিওলজি এ রিপোর্ট নিশ্চিত করে। আক্রান্তদের হ্যানয়ের ন্যাশনাল হসপিটাল ফর ট্রপিক্যাল ডিজিজেস-এ চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বাকি ১৫ জন ‘অ্যাকটিভ প্যাসেন্ট’। তাদের স্বাস্থ্য স্থিতিশীল রয়েছে। তাদেরকে ৬টি ভিন্ন ভিন্ন মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে একবার পরীক্ষায় তিনজনের নেগেটিভ এসেছে। অন্য তিনজনের দু’বারের পরীক্ষায় নেগেটিভ এসেছে। উল্লেখ্য, ভিয়েতনামে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৬৯। এর মধ্যে চিকিৎসা শেষে ৩৪০ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *