মাসুদ পারভেজ চৌধুরী, কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি: জাল নাগরিকত্ব সনদ ব্যবহার করে কাপাসিয়া পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতির এক পরিচালক নির্বাচিত হয়ে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে রোববার বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবরে উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শাহীন বাদী হয়ে অনলাইনে একটি অভিযোগ পাঠিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর গাজীপুর সদরের আউটপাড়া এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা মোঃ জাকির হোসেন জাল সনদ ব্যবহার করে গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর আওতাধীন কাপাসিয়ায় পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতির পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন। অথচ তার নামে ইস্যুকৃত জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি নং-১০১৬৩৬১৬৩৪) পিতা- মোঃ আবদুল লতিফ, মাতা মঞ্জুয়ারা বেগম ও ঠিকানা-আউটপাড়া, চান্দনা, গাজীপুর সদর। তিনি টোক ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বীর উজলী গ্রামকে নিজের বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা দেখিয়ে এবং পিতা ও মাতার নাম ঠিক রেখে এ এস এম মুমিত নামে একটি নাগরিকত্ব সনদ (নং-২০২০৩৩১৩৬৯৪০১৩৪০৩) সংগ্রহ করেছেন। পরে চলতি বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি ওই সনদ দিয়ে পল্লী বিদ্যুতের সিংহশ্রী, রায়েদ ও টোক এলাকার পরিচালক মনোনীত হয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পছন্দে জমি ক্রয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ইতোমধ্যে উর্ধ্বতন কর্তর্ৃপক্ষ তার মাধ্যমে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের ৫টি ৩৩ কেভি উপকেন্দ্র স্থাপনের জন্য জমি ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যাতে ন্যায্য মূল্যের অতিরিক্ত দাম দেখিয়ে সরকারের কোটি কোটি টাকা অপচয় হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। জমি ক্রয়ে অনিয়মের খেঁাজ নিতে গিয়ে বেরিয়ে আসে তার জাল সনদ দিয়ে পরিচালক হওয়ার বিষয়টি। এ নিয়ে কাপাসিয়ায় ব্যাপক আলোচনা শুরু হলে গত ২৫ জুন টোক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরীফ মোঃ ওয়াহিদ একটি লিখিত প্রত্যয়ন পত্রে এ এস এম মুমিত ওরফে জাকির হোসেন নামে কোনো ব্যক্তি তার ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা ও ভোটার নন বলে দাবি করেন।
এ বিষয়ে গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ রাজেন্দ্রপুর জোনাল অফিসের সিনিয়র জোনাল ম্যানেজার প্রকৌশলী মোঃ হাসান শাহনেওয়াজ জানান, পচিালক নিয়োগের বিষয়টি নির্বাচন কমিশন দেখেন। কারো ব্যাপারে কোনো অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট অফিসে আসবে, সাংবাদিকের কাছে যাবে কেন? জমি ক্রয়ে কোনো রকম অনিয়ম হয়নি বলেও তিনি দাবি করেন।
এ ব্যাপারে মো: জাকির হোসেন মুঠোফোনে বলেন, আমি কাপাসিয়ার টোক ইউনিয়নের বীর উজলীর পেওরাইট নামক স্থানে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ৩ বিঘা জমি ক্রয় করেছি। এখানে ফিলিং ষ্টেশন করার জন্য টোক ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মেসার্স মুমিত ফিলিং ষ্টেশন নামে ব্যবসায়ীক ট্রেড লাইসেন্সও নিয়েছি। টোকের ভোটার না হলেও জায়গা কিনার সুবাদে এলাকার বাসিন্দা এবং আমার নামে পল্লী বিদ্যুতের মিটারও আছে। এ হিসাবে আমি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পরিচালক হতে আগ্রহ করে আবেদন করেছি। এটা সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ অফিসের ব্যাপার। আমি পল্লী বিদ্যুতের কাছে জায়গা বিক্রি করেছি। জমি ক্রয় বিক্রয়ের সাথে তার দালালির সর্ম্পক নেই বলে অস্বীকার এবং অনেকেই তা করেন বলে মন্তব্য করেন। গাজীপুর আদালতে হলফনামার মাধ্যমে তার নাম পরিবর্তন করে জাকির হোসেনের স্থলে ‘এ এস এম মুমিত ওরফে জাকির করেছেন বলে জানান।