সাইফুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ এর দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে সকলেই ঘোর অন্ধকারের মধ্যে রয়েছেন। লকডাউন ছাড়ার পরে, কর্মজীবী মানুষদের কর্ম ব্যস্ততা বাড়লেও ঘুড়েনি, শিল্পীদের ভাগ্যের চাকা। বিশেষ করে মধুপুরের পেশাজীবী শিল্পীগোষ্ঠীদের অবস্থা খুবই করুণ। তারা কোনো প্রোগ্রাম করতে পারছেন না। ফলে তারা কোনো পারিশ্রমিকও পাচ্ছেন না।
অনেকেই হয়তো মনে করেন যে, “শিল্পীদের প্রচুর টাকা, তারা অনেক ইনকাম করেন। এমনকি এটি ভাবাও স্বাভাবিক (যেহেতু সরকারি সব অনুষ্ঠানে শিল্পীদের অংশগ্রহণে বিশেষ একটি ভূমিকা থাকে ) প্রকৃতপক্ষে সব কিছুর বাজেট থাকলেও শুধুমাত্র সরকারি প্রোগ্রামে, শিল্পীদের পারিশ্রমিক বাজেট থাকে না।একজন শিল্পী শিল্পকলা একাডেমি থেকে খুবই অল্প পরিমাণে বেতন পেয়ে থাকে কিন্তু চার মাস যাবত তারা কোন বেতন পাচ্ছেন না।
মধুপুর নৃত্যাঙ্গন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক মো: সাইফুল ইসলাম জানান,”কোভিড-১৯ এর পূর্বে শিল্পকলাতে সারা মাস অনুষ্ঠান লেগেই থাকতো। উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক জাতীয় দিবস গুলোর প্রগ্রাম হতো কিন্তু অনেক সময় সেই অনুষ্ঠানে আমরা রিক্সা ভাড়াও পেতাম না। তবে, আমরা সবার সাথে তাল মিলাতে চাক-চিক ভাবে চলি, আমাদের ভেতরের অবস্থানটা কাউকে বুঝতে দেইনা । গত মার্চ মাস থেকে বেতন পাইনা। আমাদের মতো পেশাজীবী শিল্পীরা বেশীর ভাগ ক্লাস,প্রোগ্রাম করেই রোজগার করে কিন্তু সকল ক্ষেত্রে সুবিধা থাকলেও এই শিল্পীদের তেমন সুযোগ সুবিধা নেই। অথচ এ শিল্পীরাই দেশে-বিদেশে বহু সুনাম অর্জন করেছেন। বিনিময়ে দর্শকদের বাহঃবা ও হাততালি ছাড়া আর কিছুই পায়নি।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের মতো পেশাজীবী শিল্পীরা করোনা মহামারী বিপর্যয়ের সময় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। উদাহরণ স্বরুপ আরো বলেন, তাদের যে চর্চা কেন্দ্র সেই ঘরটির অর্থের অভাবে চার মাস যাবত ভাড়া দিতে পারছেন না ফলে বিলিন হয়ে যাচ্ছে শিল্প চর্চা। তিনি এই দুর্দিনের কথা চিন্তা করে মধুপুর উপজেলা প্রশাসন সহ -স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের কাছে সবিনয় আবেদন করছেন এই মহাবিপদের সময় পেশাজীবী শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের করোনাকালীন সময়ে পেশাজীবী শিল্পীদের কর্মবিরতি ভাতা প্রদান কর্মসূচি থাকলেও এখনো মধুপুর উপজেলার শিল্পীরা পাননি কোনো প্রকার অনুদান ভাতা।
উল্লেখ্য যে, দীর্ঘ ৪ মাস যাবত তারা ঘরে বসে আছেন। স্কুল বন্ধ, শিল্পকলা বন্ধ, বিভিন্ন সংগঠন বন্ধ এবং কোনো প্রোগ্রাম ও না থাকায় তারা কোনো পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না।পেশাজীবী শিল্পীদের রোজগারের টাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে তাদের সংসার চলতো কিন্তু আজ তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
এমনকি জীবিকা নির্বাহের তাগিদে পেশার পরিবর্তন ঘটাতে চাচ্ছেন তারা ; কিন্তু মিলছে না কোনো প্রকার কাজের সন্ধান। হাজারো দর্শকের হাত তালি ও সবার মন জয় করলেও এই দুর্দিনে নেয়নি কেউ শিল্পীদের খোঁজ খবর।