লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত ও চীনের সেনা সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে এমনটাই দাবি করেছে সংবাদ সংস্থা এএনআই। ভারতীয় সেনাবাহিনীকে উদ্ধৃত করে এএনআই জানিয়েছে, সোমবার রাতের সংঘর্ষে তিনজন ভারতীয় সেনা নয়, কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছেন। অন্য দিকে, সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, চীনা বাহিনীরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এএনআই-এর দাবি, চীনা বাহিনীর অন্তত ৪৩ জন নিহত নয়তো গুরুতর আহত।
মঙ্গলবার সকালে পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় পয়েন্ট ১৪ ভারত-চীন সেনার সংঘর্ষের খবর প্রকাশ্যে আসে। প্রাথমিকভাবে সেনা সূত্রে জানা গিয়েছিল, সোমবার রাতের সংঘর্ষে, ভারতীয় সেনার ১ কর্নেল-সহ তিন জন নিহত হয়েছেন। সেনা এবং সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে, একাধিক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করে, চীনের অন্তত পাঁচজন সেনা নিহত হয়েছেন সোমবার রাতের সংঘর্ষে। কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকেই পরিস্থিতি বদলাতে থাকে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, সোমবার রাতে সংঘর্ষে আরো ১৭ জন গুরুতর ভাবে জখম হয়েছিলেন। হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রায়, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অত উঁচুতে, খোলা আকাশের নিচে আহত অবস্থায় দীর্ঘক্ষণ থাকার ফলে তাদের মৃত্যু হয়। ওই সেনা সূত্রকে অভিহিত করে সংবাদ সংস্থা এএনআই দাবি করেছে, ওই সংঘর্ষস্থল থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর পিছু হটেছে দু’পক্ষই। সেনা জানিয়েছে, ভারতীয় ভূখণ্ডের সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতা রক্ষা করতে তারা বদ্ধপরিকর।
সংবাদসংস্থা এএনআই ১০ জন ভারতীয় সেনা মৃত্যুর খবর প্রকাশ করলেও এখনো প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। এ দিন সন্ধ্যায় বিবৃতিতে বিদেশ মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র সোমবার লাদাখে সংঘর্ষের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। সেই বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়েছে, চীনা বাহিনী বিনা প্ররোচনায়, একতরফাভাবে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার স্থিতাবস্থা ভাঙার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সংঘর্ষে দু’পক্ষের সেনাই হতাহত হয়েছেন। তবে ওই বিবৃতিতে হতাহত সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে খবর, কিছু ক্ষণের মধ্যেই বিবৃতি প্রকাশ করা হবে।
এ দিন, চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত, তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। লাদাখ পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদিকে রিপোর্ট দেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা