প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে যে গভীর আঁধারে নিমজ্জিত এই পৃথিবী, সে আঁধার ভেদ করে আমরা একদিন নিশ্চয়ই বেরিয়ে আসবো নতুন দিনের সূর্যালোকে। মনে রাখতে হবে, দুর্যোগেই হয় মনুষ্যত্বের পরীক্ষা। এ ভাইরাস মোকাবিলাও একটি যুদ্ধ। এই অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমরা জয়লাভ করবই, ইনশাআল্লাহ।
আজ সকালে গণভবনে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এসএসএফের ৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ সব কথা বলেন। গণভবন থেকে অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার সরাসরি সম্প্রচার করে।
করোনাভাইরাস সংকটে সারাবিশ্বের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি চাই, আমাদের মানুষের ভেতর যেন একটি আস্থা- বিশ্বাস থাকে। সেই বিশ্বাস-আস্থাটা ধরে রাখতে হবে। কারণ আমরা হার মানব না। মৃত্যু তো হবেই।
মৃত্যু যে কোনো মুহূর্তে যে কোনো কারণে হতে পারে। কিন্তু তার জন্য ভীত হয়ে হার মানতে হবে এই ধরনের একটা অদৃশ্য শক্তির কাছে, এটা তো কাম্য না। সেজন্য আমাদেরকেও প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের সরকারের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত ও যথাযথ পদক্ষেপের কারণে মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে উন্নত অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে আক্রান্ত, মৃত্যুর হার অনেক কম।
তিনি বলেন, আমাদের এই মুহূর্তের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এই প্রাণঘাতী ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিহত করা এবং অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখা। দুর্যোগ মোকাবিলায় আমি ৩১ দফা নির্দেশনা দিয়েছি এবং ব্যক্তিগতভাবে মাঠপর্যায়ে এর বাস্তবায়ন তদারকি করছি।
২০২০ সাল আমাদের জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ বছর উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ বছর আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ উদযাপন করছি। এই মহান নেতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করি। তবে আমাদের দুর্ভাগ্য যে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে আমরা পরিকল্পনামাফিক অনুষ্ঠানসমূহ উদযাপন করতে পারছি না। জনগণের সার্বিক কল্যাণের কথা বিবেচনা করে জনসমাগম হয় এমন অনুষ্ঠান আমরা স্থগিত করেছি। টেলিভিশন, বেতার এবং ডিজিটাল মাধ্যমে কিছু কিছু অনুষ্ঠান আয়োজন করা হচ্ছে। তবে আমি সুনিশ্চিতভাবে বলতে পারি, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে আমরা তারই আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে আমাদের দায়িত্ব পালন করে যাবো।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসজনিত বৈশ্বিক মহামারির ফলে সমগ্র বিশ্বই আজ বিপর্যস্ত। এই মহামারি গোটা বিশ্বের অর্থনীতি, সমাজব্যবস্থা, রাজনীতিসহ সকল বিষয়ে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। আমাদের দেশও এই বিপর্যয় থেকে মুক্ত নয়। এই কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ইতিমধ্যে দুর্যোগ মোকাবিলায় বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছি। যার মধ্যে মানবিক সহায়তা প্রদান, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখাসহ নানা আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা ও সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম অন্যতম।
অনুষ্ঠানে এসএসএফের সদস্যদের উদ্দেশ শেখ হাসিনা বলেন, আমি বিশ্বাস করি, সুযোগ্য নেতৃত্বে সঠিক দিক-নির্দেশনা এবং এই বাহিনীর প্রত্যেক সদস্যের পেশাদারিত্ব এবং আন্তরিকতার মাধ্যমে এসএসএফের উত্তরোত্তর উন্নতি অব্যাহত থাকবে। শৃঙ্খলা, আনুগত্য এবং পেশাগত মান বিচারে এই বাহিনী হয়ে উঠুক একটি আদর্শ নিরাপত্তা বাহিনী। ৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে আমি এই প্রত্যাশা করছি।’