ঢাকা: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, এবার যে বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে সেটাতে মূলত মানুষকে রক্ষা করাটাকেই গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। টাকা কোথা থেকে আসবে সেটা পরে দেখা যাবে। আগে আমরা খরচ করতে চাই। পরে আয় করবো। শুক্রবার আগামী অর্থবছরের (২০২০-২১) প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, এবারের বাজেট দেয়া হয়েছে মানুষকে রক্ষার জন্য। মানুষকে খাবার দিতে হবে। চাকরি হারাদের চাকরি দিতে হবে, চিকিৎসা দিতে হবে। এবারের বাজেটে আমরা এসব গুরুত্ব দিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, এ টাকা কোথা থেকে আসছে সেটা পরে দেখা যাবে। আগে খরচ করবো। তারপর আমরা টাকার কথা চিন্তা করবো।
এদিকে ব্যাংকের কাছে অনেক টাকা থাকতে হবে, তা নট নেসেসারি (প্রয়োজনীয় নয়) বলেও মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী।
২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ধরা হচ্ছে এক লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৬ শতাংশ। বিশাল এ ঘাটতি পূরণে ব্যাংক খাত থেকে ৮৪ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার পরিকল্পনা করেছে সরকার। চলতি (২০১৯-২০) বাজেটে যা ছিল ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা। এমন প্রেক্ষিতে ব্যাংকিং খাত থেকে যে বাড়তি ঋণ সরকার নিচ্ছে, তাতে ব্যাংক খাত সঙ্কটে পড়বে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেয়ার আগে ব্যাংকিং খাত দেখেছি। আমার আগে ব্যাংকের নন-পারফরমিং লোনের পরিমাণ বেশি ছিল। সে কারণে ব্যাংকগুলো মাঝে মধ্যে লক্ষ্য করতাম, তাদের লিকুইডিটির অবস্থা একটু খারাপ হয়ে যেত। ইদানিং কোনো ব্যাংকের লিকুইডিটি খারাপ, এ কথা শুনিনি।এখন কেউ বলতে পারবে না, ব্যাংকে গিয়ে টাকা পাইনি, ফিরে আসছে। কোনোরকম খারাপ ব্যবহার করেছে গ্রাহকের সঙ্গে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এটা আমার সময় পাইনি।’
উল্লেখ্য, গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পাশাপাশি অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামালেরও এটি দ্বিতীয় বাজেট।
এর আগে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন করা হয়। জাতীয় সংসদ ভবনের মন্ত্রিসভা কক্ষে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আসন্ন অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। তার মধ্যে এনবিআরের সংগ্রহ করতে হবে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআরের বাইরে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ১৫ হাজার কোটি টাকা। কর-বহির্ভুত খাত থেকে অর্জনের লক্ষ্য রয়েছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। আর বৈদেশিক অনুদান হিসেবে আসবে ৪ হাজার ১৩ কোটি টাকা।