গাজীপুর: বকেয়া বেতন ভাতা ও প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সামগ্রীর দাবিতে গাজীপুরে বিক্ষোভ হয়েছে।
আজ বুধবার এই বিক্ষোভ হয়।
পুরো বেতনের দাবিতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের গাছা এলাকার একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা আজ বুধবার সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এই সময় তাঁরা বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
কারখানার শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ জানায়, করোনা পরিস্থিতিতে গাজীপুরের গাছা এলাকার এ্যাবা ফ্যাশন লিমিটেড নামের একটি পোশাক কারখানা কর্তৃপক্ষ আগে থেকেই শ্রম আইন অনুযায়ী বেতন দেওয়ার ঘোষণা দেয়। ওই ঘোষণা অনুযায়ী যেসব শ্রমিক কাজ করেছেন, তাঁরা পুরো বেতন পাবেন আর যাঁরা কাজে যোগদান করতে পারেননি বা যেসব শ্রমিক বাইরে ছিলেন, তাঁরা বেতনের ৬০ ভাগ পাবেন। কিন্তু ওই কারখানার শ্রমিকেরা গতকাল মঙ্গলবার থেকে ওই ঘোষণা না মেনে শতভাগ বেতন পরিশোধ করার দাবি জানান।
ওই পোশাক কারখানার কয়েকজন শ্রমিক বলেন, গতকাল ওই শ্রমিকেরা কারখানার কর্মরত অন্য শ্রমিকদেরও উসকানি দিয়ে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করেন। এ কারনে কারখানা কর্তৃপক্ষ কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে। আজ বুধবার সকালে শ্রমিকেরা কাজে এসে কারখানা বন্ধ দেখতে পেয়ে বেতনবৈষম্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করেন।
এ বিষয়ে কারখানার সুইং সেকশনের শ্রমিক ইউসুব আলী বলেন, ‘কারখানা খোলার পর থেকে তাঁরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তারপরও কর্তৃপক্ষ বলছে, ৬০ ভাগ বেতন দেবে। ওই টাকায় আমাদের ঘরভাড়া, খাওয়াদাওয়া কোনো কিছুই হবে না। তাই আমাদের পুরো বেতন দিতে হবে।’ একই সেকশনের আসমা বেগম বলেন, ‘বেতন কম পেলে আমরা খেয়েপরে থাকতে পারব না। শ্রমিকদের কেউ ত্রাণ বা সাহায্যও দেয় না। সামনে ঈদ আসছে, খরচ আরও বেড়ে যাবে। তাই পুরো বেতনই আমরা চাই।’
এ ব্যাপারে এ্যাবা ফ্যাশন লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ) আফতাব উদ্দিন আহম্মেদ শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের নোটিশ দিয়েছেন। ওই নোটিশে তিনি উল্লেখ করেছেন, শ্রমিকদের সুনির্দিষ্ট কোনো বৈধ আইনগত দাবি না থাকা সত্ত্বেও তাঁরা উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রাখছেন এবং অন্য সেকশনের কাজ জোরপূর্বক বন্ধ করতে বাধ্য করছেন। সবাইকে ভয়ভীতি দেখিয়ে কারখানায় অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ বারবার অনুরোধ করার পরেও শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেননি। এ কার্যক্রম অবৈধ ধর্মঘটের শামিল। যার কারণে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে শ্রম আইন ২০০৬–এর ধারা ১৩ (১) অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে।
এ বিষয়ে গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার জানান, শ্রমিকেরা শ্রম আইন না মেনে বিক্ষোভ করেন। দুপুর ১২টার দিকে শিল্প পুলিশ সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে পোশাকশ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন।