বেনাপোল (যশোর): নিখোঁজ থাকার পর বেনাপোলে ‘উদ্ধার হওয়া’ সাংবাদিক কাজলের স্মৃতিতে নেই বিগত ৫৪ দিনের ইতিহাস। দীর্ঘ বন্দীজীবনে অপহরণকারীরা তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে।
সারাক্ষণ হাত, পা, চোখ, মুখ বেঁধে রেখেছে। শুধু খাওয়ার সময় মুখ ও চোখ খুলে দেওয়া হতো। পুলিশের কাছে কাজল এমনই তথ্য দিয়েছেন বলে গতকাল নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছেন।
পুলিশের এক সূত্র দাবি করেছেন, সাংবাদিক কাজল এত দিন কোথায় ছিলেন সে সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেননি পুলিশকে। তিনি সারাক্ষণই ছিলেন আতঙ্কগ্রস্ত। তবে সাংবাদিক কাজল ‘কী বলেছেন’, তা জানতে চাইলে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা বিজিবির সূত্র ধরেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। কবে কীভাবে ভারতে গেছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি চুপ ছিলেন। তদন্তের প্রয়োজনে তাকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।’ এক সূত্র বলছেন, কাজল তার অপহরণ নিয়ে মুখ খুলেছেন পুলিশের কাছে। তিনি ধারণা দিয়েছেন, পাপিয়াকান্ডে দেশের কিছু রাঘববোয়ালের ছবি ছেপে ফেসবৃকে মন্তব্য করায় তাকে অপহরণ করা হতে পারে।
এদিকে সাংবাদিকের হাতে হাতকড়া কেন- প্রশ্নের জবাবে এই প্রতিনিধিকে নাভারন সার্কেল এএসপি জুয়েল ইমরান ও বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন খান জানান, আইনের বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই। আসামি যে-ই হোক পুলিশের আইনে এভাবেই হাতকড়া লাগানোর নিয়ম। তারা বলেন, ‘উনি শুধু অবৈধ অনুপ্রবেশের আসামি নন, তার নামে ডিজিটাল আইনেও একাধিক মামলা থাকায় নিরাপত্তার বিবেচনায় হাতকড়া লাগানো হয়েছে। আইন সবার জন্যই সমান।’
মুক্তি দাবি : এদিকে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল সভাপতি বদরুদ্দীন উমর ও সম্পাদক ফয়জুল হাকিম এক বিবৃতিতে গুম থেকে ফিরে আসা সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে ৫৪ ধারার মামলায় গ্রেফতার করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিবৃতিতে তারা বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে সরকার জনগণের কণ্ঠরোধ করে চলেছে। সরকারের দুর্নীতি, দুঃশাসন, গণবিরোধী কাজের কোনো সংবাদ সংবাদপত্র বা সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করা হলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক বা সম্পাদক বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে গ্রেফতার, হয়রানি, হুমকি-ধমকি চালানো হচ্ছে। বিবৃতিতে অবিলম্বে সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের নিঃশর্ত মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।