‘একদিন ঝড় থেমে যাবে, পৃথিবী আবার শান্ত হবে

Slider জাতীয় সারাদেশ


ঢাকা: বসন্তের নয়ানাভিরাম সবুজের বুক চিরে বাহারি ফুলের রঙ আর সৌরভ নিয়ে প্রকৃতিতে গ্রীষ্ম আসে নির্মল আনন্দ নিয়ে। গ্রীষ্ম ফলের ঋতু হলেও বৈশাখ তার রূপের জানান দেয় আগুন ঝরা কৃষ্ণচূড়াসহ নানা চটকদার ফুলের পসরা সাজিয়ে। কিন্তু প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের আতঙ্কে ম্লান হয়ে গেছে কৃষ্ণচূড়ার শোভিত ডালে ভ্রমরের অভিসার আর গন্ধরাজ, বেলীর মন মাতানো সৌরভ।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ঘোষিত সাধারণ ছুটি ও লকডাউনে সৃষ্ট স্থবিরতার মাঝে প্রতিদিন নতুন আক্রান্তের খবর, লাশের মিছিলে প্রকৃতির এই মায়া সত্যিই যেন হতশ্রী। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে খাঁ খাঁ রোদ্দুরের উত্তাপে হৃদয় জুড়ানো ফুলের মায়া প্রশান্তির ফাগুনধারা বইয়ে দিতে ব্যর্থ হয়েছে। মহামারির মাঝে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মানুষের মনে প্রভাব ফেলতে না পেরে দাঁড়িয়ে আছে এক বিশাল শূন্যতা নিয়ে।

প্রতিবছর গ্রীষ্ম আসে বাহারি ফুলের সমারোহ নিয়ে। আগুন রঙা কৃষ্ণচূড়া ছাড়াও জারুল, সোনালু, স্বর্ণচাঁপা, ভাঁট, গন্ধরাজ, গোলাপ, বেলী ইত্যাদি গ্রীষ্মের প্রধানফুল হলেও পালান, দুরন্তলতা, শ্যামটিউলিপ, মে ফ্লাওয়ার, অনন্তলতা, সোনালী শাপলা, বেলি, জহুরিচাঁপা, বনপারুল, কার্ডওয়েল লিলিসহ কয়েকজাতের লিলিও এই সময়ে প্রকৃতির শোভা বর্ধণ করে। কিন্তু এইবার প্রকৃতির এই শোভা মানসপটে নতুন কোনো চিহ্ন আঁকাতে পারেনি। ভুবন মাতানো সৌন্দর্য ব্যর্থ হয়েছে মনকে ভরিয়ে দিতে।

‘ঐ এল বৈশাখ’ কবিতায় -সুকুমার রায় বলেছিলেন, মনে হয় বুঝি তার নিঃশ্বাস মাত্রে/
তেড়ে আসে পালাজ্বর পৃথিবীর গাত্রে!

সত্যিই আজ বাংলার গায়ে কালবৈশাখী রূপে করোনার পালাজ্বর সকল সৌন্দর্যকে গ্রাস করে নিয়েছে। প্রতিটি নাগরিকের হৃদয় জুড়ে বিষমুক্ত নিঃশ্বাস নেয়ার আকুতি। প্রতিটি সজীব মনে স্থান করে নিয়েছে শুধুই বেঁচে থাকার করুণ মিনতি। প্রতিটি নাগরিকের মনে আজ ভাইরাস ঝড় থামার প্রত্যাশা।

সবাই আশায় আছেন এই গানটির মতো-
‘একদিন ঝড় থেমে যাবে,
পৃথিবী আবার শান্ত হবে।
বসতি আবার উঠবে গড়ে,
আকাশ আলোয় উঠবে ভরে,
জীর্ন মতবাদ সব ইতিহাস হবে – পৃথিবী আবার শান্ত হবে…।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *