ত্রিফলা’ এখন বগুড়ায় মহাসড়কগুলোতে আতঙ্ক হয়ে উঠেছে যানবাহন চালকদের কাছে। লোহা দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি ত্রিভূজ আকৃতির এই ত্রিফলা। তিনটি কাটা সুচালো এবং ধারালো।
একটি কাটা আড়াই/তিন ইঞ্চি লম্বা। মহাসড়কের যে কোন স্থানে ফেলে রাখলেই চলে। যা চালকদের পক্ষে আগে থেকে দেখা সম্ভব নয়। এটির উপর দিয়ে যে কোন যানবাহনের চাকা গেলেই তা ফুটো হয়ে যায়। ফলে ধীরে ধীরে চাকার হাওয়া চলে যায়। বাধ্য হয়ে চালককে গাড়ি থামাতে হয়। আর সুযোগ বুঝে গাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে অবরোধকারীরা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সন্ধ্যার পর থেকে চলে এই ত্রিফলার ব্যবহার। ঢাকা-বগুড়া ও ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের মাটিডালী, বারপুর, গোকুল, ছিলিমপুর ও বনানী এলাকায় ত্রিফলা ব্যবহার করা হচ্ছে। ত্রিফলার কারণে এ পর্যন্ত ৩০টির বেশি বাস-ট্রাক চাকা ফুটো হয়ে বসে গেছে। এরমধ্যে ৭টি গাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে।
বগুড়ার চারামাথা এলাকায় অগ্নিসংযোগের শিকার এক ট্রাকের চালক বলেন, ‘ট্রাকটি চারামাথা এলাকায় এসে চাকা পাংচার হয়ে যায়। ট্রাক থামিয়ে পাংচার হওয়া চাকায় লোহার ধারালো ত্রিফলা পাওয়া যায়। চাকাটি বদলানোর সময় মুহূর্তের মধ্যে মুখোশ পরিহিত ৫/৬ জনের একদল লোক ট্রাকে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়।তিনি বলেন, ‘যে কোন চালকের পক্ষে এই ত্রিফলা দূর থেকে দেখা বা তাৎক্ষণিক এর অবস্থান বোঝা সম্ভব নয়।’
ত্রিফলার কবল থেকে বাদ যায়নি পুলিশের টহল গাড়িও। রোববার রাতে বিশ্ব ইজতেমার ডিউটি শেষে পুলিশের একটি পিকআপ রংপুর ফিরছিল। বগুড়ার গোকুলে পিকআপটির চাকায় ত্রিফলা বিদ্ধ হয়। ফলে আটকা পড়ে গাড়ীটি। এসময় অবরোধকারীরা অতির্কিতে হামলা চালিয়ে পিকআপটি ভাংচুর করে। অবরোধকারীদের ইটপাটকেলের আঘাতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়। তাদের মধ্যে জোবায়ের নামের পুলিশ সদস্যকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনাস্থলে ত্রিফলার কবলে পুলিশের আরো দুটি টহলগাড়ি আক্রান্ত হয়েছে।
ঢাকা-বগুড়া মহাসড়ক সংলগ্ন শাজাহানপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহিম জানান, এ পর্যন্ত ২০টির বেশি গাড়ি ত্রিফলাবিদ্ধ হয়ে চাকার হাওয়া চলে গেছে। বিভিন্ন পাম্পে এসব গাড়ি আশ্রয় নিয়েছে। আর যেসব গাড়ি অতিরিক্ত মালবোঝাই থাকে ওইসব গাড়ি রাস্তায় থেমে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। আর সুযোগ বুঝে অবরোধকারীরা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করছে।
জেলা পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক পিপিএম বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসছে। রাতে যানবাহন চলাচলে ব্যঘাত ঘটাতে এমন কৌশল নিয়েছে অবরোধকারীরা। তবে এ ব্যাপারে পুলিশ সজাগ রয়েছে।