মীর ফারুক
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
টঙ্গীর ইজতেমা ময়দান থেকে: জু’মার নামাজের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন লাখো মুসুল্লী। ইজতেমা ময়দানে দলে দলে আসছেন ধমপ্রাণ মুসলমানেরা। এরই মাধ্যমে আনুষ্ঠাকিভাবে শুরু হচ্ছে ৫০তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পব। দ্বিতীয় পবের শুরুতে মারা গেলেন তিন মুসুল্লী।
তারা হলেন, আঃ রহমান (৬৫) বাড়ি বগুড়ার শাহজাহানপুরে। আব্দুল কুদ্দুছ(৬২) বাড়ি লক্ষীপুর জেলার ডুমনীতে। এর আগে বুধবার রাতে বিল্লাল হোসেন(৩০) নামে একজন মুসুল্লী বাথরুমে পরে গিয়ে মারা যান। তার বাড়ি পটুয়াখালী জেলায়।
সরকারী সূত্র জানায়, বৃহসপতিবার রাত ১২টা পযন্ত ইজতেমা ময়দানে ৮৮ রাষ্ট্রের ৪হাজার ৩০০জন বিদেশী মেহমান এসে পৌঁছেছেন।
শুক্রবার(১৬জানুয়ারী) সকাল ১০টায় বিশ্ব ইজতেমার মুরুব্বী প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গত রাতে দুই জন মুসুল্লী শীত জনিতকারণে শ্বাষকষ্টে মারা গেছেন। তাদের নাম পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। একজন বৃহসপতিবার সন্ধ্যায় ও আরেকজন শুক্রবার ভোররাতে মারা যান। ফজরের নামাজের পর দুই জনের জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এদিকে বিশ্ব ইজতেমায় জু’মার নামাজকে সামনে রেখে স্থায়ী অস্থায়ী মুসুল্লীদের ভীড় বাড়ছে। বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে লাখো মুসুল্লীদের সঙ্গে অধিক পূন্য লাভের আশায় জু’মার নামাজ আদায়ের জন্য মুসুল্লীদের ঢল নেমেছে। চিল্লাধারী মুসুল্লীদের পাশাপাশি শুধু জু’মার নামাজ আদায়ের জন্য অস্থায়ী মুসুল্লীরাও আসছেন ময়দানে।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোঃ হারুনর রশিদ বলেছেন, সরকার সাবিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পবের নিরাপত্তায় আগের চেয়ে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি মাঠে থাকা বিজিবিও ইজেতেমার শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষয় কাজ করছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য মাঠে থাকা বিজিবি সাবিক ভাবে দায়িত্ব পালন করছে।
গাজীপুর ট্রাফিক বিভাগের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, যানবাহনের নিরাপত্তায় পুলিশ বিশেষ ভূমিকা রাখছে। ইজতেমার মুসুল্লীবাহী যানবাহনের নিরাপত্তার বিষয়টি স্পশকাতর মনে করে অতিরিক্ত নজর রাখা হচ্ছে।
টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুরু হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। শুক্রবারের (১৬ জানুয়ারি) এ পর্বে যোগ দিতে ৩৩ জেলার লাখো মুসল্লি ইতোমধ্যে জড়ো হতে শুরু করেছেন ইজতেমা ময়দানে।
রোববার (১৮ জানুয়ারি) আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ইজতেমার দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব।
জানা গেছে, দ্বিতীয় পর্বের জন্য বিশ্ব ইজতেমা ময়দানকে ৩৯টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। এসব খিত্তায় দেশের ৩৩টি জেলার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অবস্থান নিয়েছেন।
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, ময়দানের ১-২ নং খিত্তায় নারায়ণগঞ্জ জেলা, ৩-৪ নং খিত্তায় ঢাকা, ৫ নং খিত্তায় কক্সবাজার, ৬ নং খিত্তায় মানিকগঞ্জ, ৭ নং খিত্তায় পিরোজপুর, ৮ নং খিত্তায় পটুয়াখালী, ৯/১ ও ৯/২ নং খিত্তায় টাঙ্গাইল, ১০/১ ও১০/২ নং খিত্তায় জামালপুর, ১১ নং খিত্তায় বরিশাল, ১২ নং খিত্তায় নেত্রকোনা, ১৩ নং খিত্তায় কুমিল্লা, ১৪ নং খিত্তায় মেহেরপুর, ১৫ ঝিনাইদহ, ১৬-১৮ নং খিত্তায় ময়মনসিংহ, ১৯ নং খিত্তায় লক্ষ্মীপুর, ২০ নং খিত্তায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ২১ নং খিত্তায় কুড়িগ্রাম, ২২ নং খিত্তায় বগুড়া, ২৩ নং খিত্তায় পঞ্চগড়, ২৪ নং খিত্তায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ২৫ নং খিত্তায় নীলফামারী, ২৬ নং খিত্তায় নোয়াখালী, ২৭ নং খিত্তায় ঠাকুরগাঁও, ২৮ নং খিত্তায় পাবনা, ২৯ নং খিত্তায় নওগাঁ, ৩০-৩১ নং খিত্তায় মুন্সীগঞ্জ, ৩২ নং খিত্তায় মাদারীপুর, ৩৩ নং খিত্তায় গোপালগঞ্জ, ৩৪ নং খিত্তায় সাতক্ষীরা, ৩৫ নং খিত্তায় মাগুরা, ৩৬ নং খিত্তায় কুষ্টিয়া, ৩৭ নং খিত্তায় সুনামগঞ্জ, ৩৮ নং খিত্তায় খুলনা ও ৩৯ নং খিত্তায় মৌলভীবাজার জেলার মুসল্লিরা অংশ নিয়েছেন।
এর আগে, গত ৯ জানুয়ারি বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হয়। ১১ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় সেই পর্ব। প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন ভারতের মাওলানা মোহাম্মদ সা’দ।