বরিশাল: বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত গ্রাম পীরেরপাড়। যেখানে নেই কোনো মুসলমানদের বসতি। ফলে এখানে নেই কোনো মসজিদ-মাদ্রাসা। এ গ্রামে কখনো বেজে ওঠেনি আজানের সুমধুর ধ্বনি। দেশের চলমান প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘু (হিন্দু) অধ্যুষিত এ গ্রামটিতে চিরকালের প্রথা ভেঙে প্রথম কোনো মুসলমানের প্রকাশ্যে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হলো।
জানা গেছে, ওই গ্রামে মুসলামান পরিবারের বসতি না থাকায় মানসিক ভারসাম্যহীন ওই ব্যক্তির জানাজা হয় হিন্দু বাড়িতে। এমনকি জানাজা শেষে দাফনও হয়েছে ওই বাড়ির দিনমজুর সুশান্ত হালদার নামের এক মানবদরদী অসাম্প্রদায়িক হিন্দু ব্যক্তির দানকৃত জমিতে।
গত শনিবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের পীরেরপাড় গ্রামে ইদ্রিস জমাদ্দার (৫২) নামের মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তি হঠাৎ মারা যান। তার লাশ উদ্ধারে করোনাভাইরাসের আতঙ্কে কেউ এগিয়ে না আসায় বৃষ্টিস্নাত সারারাত লাশটি রাস্তার পাশেই পড়ে ছিল। বিষয়টি জেনে মানবতার ফেরিওয়ালাখ্যাত উজিরপুর মডেল থানার ওসি জিয়াউল আহসানের নেতৃত্বে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবী কর্মীরা লাশ উদ্ধার করে দাফন কাফনের ব্যবস্থা করেন। জানাজায়ও অংশ নেন তারা।
এ সময় ওসি জিয়াউল আহসান দাফনের কাপড়সহ যাবতীয় সামগ্রী দেওয়ার পাশাপাশি দাফন-কাফনে অংশ নেওয়াদের ৫ হাজার টাকা প্রদান করেন। এদিকে মুসলমান ব্যক্তির লাশ দাফনে সুশান্ত হালদার নামের হিন্দু ওই ব্যক্তি সম্পত্তি দান করে মানবতার অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।