ঢাকা: দেশে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের করোনা সংক্রমণের হার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। এ পর্যন্ত ৩৫৮ জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ৫টি কারণে এই সংক্রমণ বাড়ছে। এর মধ্যে আছে মান সম্পন্ন ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী না পাওয়া, রোগীদের তথ্য গোপন, এক সঙ্গে ডাক্তার/ নার্সদের ডিউটি দেয়া, ফ্লু কর্ণার না থাকা এবং করোনা চিকিৎসায় বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে যুক্ত না করা। এসব কারণেই ডাক্তার, নার্স ও মেডিকেল স্টাফরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন বলে মনে করছে চিকিৎসকদের বড় সংগঠন বিএমএ।
দেশে করোনায় আজ পর্যন্ত আক্রান্তদের মধ্যে চিকিৎসক ১৬১ জন, নার্স ৬০ জন এবং বাকি ১৩৭ জন মেডিকেলের অন্যান্য স্টাফ রয়েছেন। যা দেশে মোট আক্রান্তের প্রায় ১১ শতাংশ। ইতিমধ্যে একজন চিকিৎসক ও একজন মেডিকেল স্টাফের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তদের সংখ্যা স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বেশি। এ সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন ( বিএমএ)- এর দপ্তর সম্পাদক ডা. শহিদুল্লাহ মানবজমিনকে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, প্রতিদিনই সংখ্যা বাড়ছে।
গত একদিনে দেশে ৫৫ জন চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন। এভাবে বাড়তে থাকলে আমাদেরকে কঠিন অবস্থায় পড়তে হবে। এছাড়াও স্বাস্থ্যকর্মীদের পরিবারের সদস্যরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। শত শত স্বাস্থ্যকর্মী ইতিমধ্যে কোয়ারেন্টিনে গেছেন। এতে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাসেবায় ব্যপক বিঘœ সৃষ্টি হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. উম্মে তানিয়া নাসরিন বলেন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর অভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাদের হাসপাতালে কিছু সুরক্ষা সামগ্রী পেলোও ঢাকার বাইরের অভাব রয়েছে।
ব্র্যাকের এক গবেষণায় দেখা গেছে, চিকিৎসকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কারণে পরিবারের কথা চিন্তা করে সেবা দিতে ভয় পান। এতে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।
দেশে প্রথম করোনার রোগী শনাক্ত হয় গত ৮ই মার্চ। এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩৮২ জন। মারা গেছেন ১১০ জন, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮৭ জন। নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২৯ হাজার ৫৭৮ জনের। প্রতি ৯ জনে একজন করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে দেশে।