ঢাকা: করোনাভাইরাসের উপসর্গে মৃত্যু থামছে না। প্রায় প্রতিদিনই দশকের ঘরে থাকছে মৃতের সংখ্যা। সারাদেশে নতুন করে নারী-শিশুসহ আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জে ২, চট্টগ্রামে ২, খুলনায় ২, বরিশালে ১, বগুড়ায় ১, গাইবান্ধায় ২, গোপালগঞ্জে ১, পিরোজপুরে ১ এবং নোয়াখালীতে একজন মারা গেছেন। এ নিয়ে করোনা উপসর্গে ১৯৪ জনের মৃত্যু হলো। ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :
নারায়ণগঞ্জে করোনা উপসর্গ নিয়ে বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দু’জন মারা গেছেন। সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ জানান, নগরের আমলাপাড়া এলাকার আর কে গুপ্ত রোডের বাড়িতে রোববার সকালে মারা যান ডা. কৈলাশ বণিক। কয়েকদিন ধরে তার জ্বর ও শ্বাসকষ্ট ছিল।
১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু জানান, রোববার সকালে নগরের খানপুর আজিম ভিলার নিজ বাড়িতে মারা যান শাকিল ভুঁইয়া। তিনি মহসিন কাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তার জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট ছিল।
চট্টগ্রামে রোববার দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাটে অবস্থিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) এবং একজন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশনে মারা যান। তাদের একজনের বাড়ি চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী থানার মুরগির ফার্ম গেট এলাকায়, অন্যজনের বাকলিয়ার বলিরহাটে। দু’জনেরই করোনা উপসর্গ ছিল।
খুলনায়ও রোববার দু’জন মারা গেছেন। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে দুপুর ১২টায় মাসুমা বেগম (৪৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, ওই নারী করোনা উপসর্গ নিয়ে শনিবার রাতে ভর্তি হয়েছিলেন। তার বাড়ি পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলায়। এ ছাড়া দুপুরে ডুমুরিয়া উপজেলার নোয়াকাটি গ্রামে ইকরামুল মোল্লা (৫২) নামে এক ব্যক্তি মারা যান। তিনি আইনজীবীর সহকারী ছিলেন।
বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার বিকেলে মারা যাওয়া লিটনের (২৫) বাড়ি মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায়। তিনি পেশায় জেলে ছিলেন। করোনা উপসর্গ গোপন করে শুক্রবার হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি হন লিটন। পরে বিষয়টি প্রকাশ পেলে তাকে আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছিল।
বগুড়ার শাহজাহানপুর উপজেলার বেতগাড়িতে জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মোহাম্মদ আলী (৭০) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাতে মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে তিনি মারা যান। হাসপাতালের আরএমও ডা. শফিক আমিন কাজল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নে নারায়ণগঞ্জ ফেরত এক শ্রমিক রোববার সকালে মারা গেছেন। নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। তার জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও গলাব্যথা ছিল। অন্যদিকে সদর উপজেলা গিদারী ইউনিয়নের এক কৃষক মারা গেছেন। গাইবান্ধার সিভিল সার্জন ডা. এবিএম আবু হানিফ জানান, মৃত ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জে জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্টে সায়মা আক্তার (৮) নামে এক শিশু মারা গেছে। গতকাল রোববার সকালে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গিমাডাঙ্গা উত্তরপাড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে শিশুটি মারা যায়। সে ওই গ্রামের নুর ইসলাম শেখের মেয়ে। টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জসীম উদ্দীন জানান, শিশুটির বাবা ঢাকায় একটি মসজিদে ইমামতি করেন। কয়েকদিন আগে তিনি গ্রামে আসেন। তিনি করোনার বাহক হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। শিশুটির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার এক ব্যক্তি বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তার নাম জাহাঙ্গীর শিকদার (৩২)। বাড়ি মঠবাড়িয়া উপজেলার ছোট শৌলা গ্রামে। জাহাঙ্গীর দীর্ঘদিন শ্বাসকষ্ট ও জ্বরে ভুগছিলেন।
নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলায় ফিরোজা বেগম (৫৫) নামে এক নারী মারা গেছেন। তার জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও ডায়াবেটিস ছিল। তিনি মোহাম্মদপুর ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বেপারীবাড়ির মৃত জামাল উদ্দিনের স্ত্রী। করোনা আক্রান্ত সন্দেহে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।