নওগাঁ: আর কয়েকদিন পরই শুরু হবে বোরো ধান কাটা। আগাম জাতের ধান ইতোমধ্যে পাকতে শুরু করেছে। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রভাবে ধান কাটা শ্রমিকের তীব্র সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কৃষকরা। তবে রাণীনগর উপজেলা কৃষি অধিদফতর বলছে, কৃষকদের যাতে ধান ঘরে তোলা নিয়ে কোনও সমস্যা না হয় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাণীনগর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে উপজেলায় ১৮ হাজার ৫৮৫ হেক্টর জমিতে ধান রোপণ করা হয়েছে। শুরু থেকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধান বেশ ভালো হয়েছে। অন্য বছরের তুলনায় এবার রোগ-বালায় না থাকায় ধানের ফলন ভালো হবে বলে আশা করছেন কৃষকরা।
কৃষি অফিসের তথ্য মতে, ইতোমধ্যে আগাম জাতের ধান পাকতে শুরু করেছে। হয়তো আগামী সপ্তাহের শেষের দিকে এসব ধান কাটা শুরু হবে। কিন্তু সারাদেশে করোনাভাইরাসের কারণে একের পর এক জেলা লকডাউন করে দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে জনসমাগম এড়িয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে বলা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শ্রমিক পাওয়া বেশ কঠিন হবে।
উপজেলার করজ গ্রামের কৃষক সুলতান বলেন, ‘ধান কাটা মৌসুমে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার শ্রমিক এসে ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়ে যান। কিন্তু এবার কী হবে? ইতোমধ্যে করোনাভাইরাস রোধে বুধবার (১৫ এপ্রিল) থেকে নওগাঁকে লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রসাশন। এর মধ্যে অন্য জেলা থেকে কীভাবে শ্রমিকরা আসবেন। যদি শ্রমিকরা লকডাউনের মধ্যে সময় মতো আসতে না পারেন, তাহলে কীভাবে ধান ঘরে উঠবে? বেশ দুশ্চিন্তাই আছি।’
কালিগ্রামের কৃষক সুরুজ মিয়া বলেন, ‘আমন আবাদে ধান পাকার পরও ধান কাটতে হাতে কিছু সময় পাওয়া যায়। কিন্তু ইরি-বোরো মৌসুমে নানা রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগেই থাকে। ফলে ধান পাকার সঙ্গে সঙ্গেই কাটতে হয়। কয়েক বছর ধরে এমনিতে ধানের আবাদে নানা কারণে লোকসান গুনতে হয়েছে। এই মৌসুমেও যদি শ্রমিক সংকটে সময় মতো ধান ঘরে তোলা না যায়, তাহলে ব্যাপক লোকসানের কবলে পড়তে হবে। তাই ধান ঘরে তুলতে কৃষি শ্রমিকদের অবাধ চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।’
রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘কৃষি শ্রমিকরা যেন অবাধে আসতে পারেন এবং ধান কেটে ঘরে তুলে দিতে পারেন, সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট ওপর মহলে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ধান কাটা শ্রমিক নিয়ে কৃষকদের চিন্তার কোনও কারণ নেই। আশা করি, সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’