ঢাকা: মরণব্যাধি করোনা ভাইরাসের আক্রমনে বিশ্ববাসী এখন ঘরবন্দি। সকল দোকানপাট বন্ধ। চুলকাটার দোকান গুলো জরুরী সেবার বাইরে থাকায় তাও বন্ধ। তাই মানুষ চুল কাটানোর জন্য কোন জায়গা পাচ্ছেন না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ দিন ধরেই এ বিষয়টি আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। কেউ বলছেন চুল না কাটতে পারলে সবাই রবীন্দ্রনাথ হয়ে যাবো। আরেকজন ছবি সহ দিয়েছেন, তার স্ত্রী ও ছেলে তাকে ধরে মাথা থেকে চুল বিদায় করে দিয়েছেন। তিনি এখন টাকো মাথা নিয়ে সেলফ কোয়ারেন্টিনে আছেন। আজ দেখলাম আরেকজন নিজেই অন্য জনের চুল কেটে দিচ্ছেন ছাদে বসে। এই চুল কাটা নিয়ে একটি গল্পও লিখেছেন তিনি। তার গল্পটি নীচে দেয়া হল।
গল্প
যখন ছোট ছিলাম তখন শিক্ষক বাবা বুধবার উপা শীলের কাছে নিয়ে ইশারায় কি যেন বলতেন। এরপর উপা শীল জলচৌকির মধ্যে বসিয়ে নিজে দাঁড়িয়ে দুই পা দিয়ে আমার মাথাটা চাপ দিয়ে ধরে মনের ইচ্ছামতো মাথার উপর কাঁচি চালাতেন। আমার দুইচোখের পানিও তাঁকে থামাতে পারতো না। সেজন্য আমার কাছে উপা শীল এবং খগেন্দ্র শীল দু’জনেই চিরশত্রু ছিলেন। সেই তখন থেকেই স্বপ্ন ছিলো বড় হয়ে নাপিত হবো। আমার প্রিয় সুখলাল চন্দ্র বর্মণ স্যার একদিন ক্লাসে জিজ্ঞাসা করছিলেন বড় হয়ে আমরা কে কি হতে চাই। সেইদিন সবার আগে দাঁড়িয়ে আমি বলেছিলাম, ‘বড় হয়ে নাপিত হবে।’ এমন কঠিন স্যারের ক্লাসেও সেদিন হাসির বন্যা বয়ে গিয়েছিলো। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সেই স্বপ্ন পূরণ না হওয়ায় মনের এক কোণে একটা কষ্ট দলা পাকিয়েই ছিলো। আসলে কোন স্বপ্ন বুকে লালন করলে একদিন না একদিন তা পূরণ হবেই। আজ সেই মহেন্দ্রক্ষণ!! আমার স্বপ্নপূরণের পালা। অফিসে আজ ১৮ দিন যাবত অবস্থান করছি। সারা দেশে করোনা আতঙ্কে লকডাউন চলছে। আমরাও মেনে চলছি। মাথার চুল বড় হয়েছে। ছোট করার কোন উপায় নেই।দোকানপাট সব বন্ধ। তাই সহকর্মীকে দিয়েই সেই লালিত স্বপ্ন পূরণ করলাম।
ভালো থাকুন সবাই। আর নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে আমার মতো কাজে নেমে পড়তে পারেন আপনিও।
আইডি লিংক–https://www.facebook.com/profile.php?id=1362227324