গাজীপুর: শিল্প রাজধানীখ্যাত ঐতিহাসিক গাজীপুর ও চলমান বাস্তবতায় এই জেলায় মরণঘাতি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য ১০০ বেডের আইসোলেশন সেন্টার সহ ৭০লক্ষ্য মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে উন্নতমানের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে ২০০ বেডের একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল দাবী করেছেন গাজীপুর কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ এডভোকোট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।
মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন,বর্তমান বাস্তবতা বলছে, গাজীপুরে বিভিন্ন শিল্প কারখানায় লাখ লাখ শ্রমিক কর্মরত। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রায় দুই ডজ প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা স্বপরিবারে গাজীপুরে বসবাস করেন। এ ছাড়া রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মরত অনেক কর্মজীবী মানুষের পরিবার গাজীপুরে বসবাস করেন। একই সঙ্গে গাজীপুর এখন অনেকটা পর্যটনের অধিক্ষেত্রও বটে।
রাজধানী ঢাকার সীমানা ঘেঁষে অবস্থিত গাজীপুর জেলায় বাংলাদেশের সবচেয়ে উন্নমত মানের হাসপাতাল শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কেপিজে হাসপাতাল, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ আহসান উল্লাহ মাষ্টার জেনারেল হাসপাতাল সহ একাধিক সরকারি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল রয়েছে। এর মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা তার মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কেপিজে হাসপাতালে চিকিৎসা করেন। তাই গাজীপুরে অবস্থিত উন্নতমানের হাসপাতাল গুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মান বহন করে। এই সকল হাসপাতালে লাখ লাখ মানুষ চিকিৎসা সেবা নেয় সারা বছর। অনুকূল পরিবেশ থাকায় গাজীপুরের একাধিক স্থানে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের মত ষ্পর্শকাতর কেন্দ্রও করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিশ্ব ইজতেমা মাঠকে কোয়ারেন্টিন সেন্টার করার জন্য সরকারী সিদ্ধান্তও হয়েছে। সব মিলিয়ে বিভিন্ন বিভাগী শহরের মত শিল্পরাজধানী খ্যাত লাখ লাখ লোকের আবাসস্থল গাজীপুরে একটি হলেও করোনা সনাক্তকরণ ক্ষমতাসহ সকল নাগরিকের জন্য সারাবছর যেন উন্নত চিকিৎসা পায় তেমন ল্যাবরেটরী স্থাপন জরুরী এবং সময়ের দাবী।
মাননীয় স্বাস্থমন্ত্রীর নিকট এই হাসপাতাল দাবী করে মেয়র বলেন, বিপুল সংখ্যক গাজীপুরবাসাীর দাবীর প্রেক্ষিতে অনতিবিলম্বে গাজীপুরে করোনার রোগীর জন্য ১০০ বেডের আইসোলেশন সেন্টারসহ ২০০ বেডের একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল স্থাপন করা হউক। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আমি আশা করি পরিস্থিতি বিবেচনায় মাননীয় স্বাস্থমন্ত্রী গাজীপুবাসীর দাবীর প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমার প্রস্তাব গ্রহন করবেন।
অনুসন্ধান বলছে, করোনা ভাইরাস আক্রমন করার পর আইইডিসিআর ছাড়া কোথাও করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা হতো না। সম্প্রতি সরকার দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরী স্থাপনের ঘোষনা দিয়েছে। কিন্তু গাজীপুরে করোনা পরীক্ষার কোন ল্যাবরেটরী নেই। গাজীপুরে যথেষ্ট সহায়ক হাসপাতাল থাকার পরও করোনা ভাইরাস পরীক্ষার জন্য কোন হাসপাতালে ল্যাব স্থাপন না করায় গাজীপুরের মানুষ আক্রান্ত হলে তাকে গাজীপুরেই কোন না কোন হাসপাতালে পড়ে থাকতে হয়। ঢাকায় চিঠি লিখে অপেক্ষা করতে হয়, কখন নমুনা সংগ্রহের জন্য টিম আসবে।
গাজীপুরবাসীর অভিমত, বিনা চিকিৎসায় মারা যাওয়ার চলমান অভিযোগ থেকে মুক্তি পেতে ও করোনা ভাইরাসের আক্রমন থেকে রক্ষার জন্য গাজীপুরে করোনা ভাইরাস সনাক্তকরণের ল্যাব স্থাপন এখন সময়ের দাবী।
প্রসঙ্গত: স্থানীয় সরকারের একজন প্রতিনিধি হয়েও গাজীপুর সিটিকরপোরেশনের মেয়র আলহাজ এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম ইতোমধ্যে করোনা প্রতিরোধে জাতীয় গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ইতোমধ্যে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রায় ৫০ হাজার কিট আমদানী সহ প্রচুর পরিমান করোনা চিকিৎসা সামগ্রী বিভিন্ন দেশ থেকে এনেছেন। আরো ১ লাখ কিট ব্যবস্থা করা আছে।
এই সকল জিনিসপত্র গাজীপুরেই শুধু নয়, তিনি রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করছেন। মিডিয়া কর্মীদের জন্যও তিনি নিরাপদ পোষাক বিতরণ করছেন। এ ছাড়া তিনি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের অনুরোধে তার নির্বাচনী এলাকা নাটোরেও করোনা প্রতিরোধ সামগ্রী দিয়েছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সহ টঙ্গীতে অবস্থিত গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল, কুয়োত মৈত্রী হাসপাতাল সহ অসংখ্য বেসরকারী হাসপাতালেও তিনি চিকিৎসাসামগ্রী প্রদান করেছেন।
তাই গাজীপুরের মেয়রের আনা করোনা প্রতিরোধ সামগ্রী গাজীপুরে যথাযথভাবে ব্যবহারের জন্যও করোনা প্রতিরোধ ল্যাব স্থাপন জরুরী। আর এটা স্থাপন হলে মেয়রের আনা জিনিসপত্র দিয়েই এই ল্যাব চলতে পারবে।
তাই অনতি বিলম্বে গাজীপুরে একটি হলেও করোনা প্রতিরোধের জন্য ১০০ বেডের আইসোলেশন সেন্টার সহ ২০০ বেডের একটি হাসপাতাল স্থাপনের জন্য গাজীপুরের সর্বস্তরের মানুষের পক্ষে জিসিসির মেয়র এই দাবী করছেন।