মো: সাজ্জাত হোসেন, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ করোনাভাইরাস প্রতিরোধে মানুষদের ঘরমুখী রাখতে এবং খাদ্যাভাব দূর করার লক্ষ্যে সরকারের নির্দেশ মোতাবেক স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতৃবৃন্দদের এলাকার অসহায় হতদরিদ্র ও দিনমজুর মানুষদের খাদ্যসামগ্রী দেয়ার জন্য নির্দেশনা থাকলেও সমন্বয়ের অভাবে কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়নে অসহায় পরিবারগুলো পাচ্ছে না খাদ্যসামগ্রী।
১লা এপ্রিল সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপির নেতৃত্বে নাগরী ইউনিয়নের ৫শত অসহায় হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। তিনি খাদ্য সহায়তা দেয়ার পর ৭ দিন অতিবাহিত হলেও এখনোও পর্যন্ত নতুন করে অভাবগ্রস্ত মানুষেরা কোনো ধরনের ত্রাণ পাননি বলে একাধিক অসহায় পরিবারে লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়।
সরকারের নির্দেশনা মেনে এলাকার অটোরিকশা, সিএনজি, ইজিবাইক চালক, চায়ের দোকানি ও রাজমিস্ত্রিসহ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন অধিকাংশ লোক। এই কর্মহীন মানুষগুলো খাদ্যাভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে জীবনযাপন করছেন বলে কয়েকজন কর্মহীন মানুষ জানায়। নাগরী ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়হীনতার কারণে অভাবগ্রস্ত মানুষদের কাছে যাচ্ছে না খাদ্যসামগ্রী। এই নিয়ে অসহায় হতদরিদ্র মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে।
গতকাল বুধবার সকালে সরেজমিনে নাগরী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বেশিভাগ এলাকায় এলাকাবাসীদের নিজ উদ্যোগে লকডাউন করে রাখা হয়েছে।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে নাগরী ইউনিয়নের কতজন অসহায় পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী দেয়া হয়েছে নাগরী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী আব্দুল বারেক মোল্লার কাছে এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি এমপি ১লা এপ্রিল ৫ শত পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন। তারপর থেকে এখনো পর্যন্ত নতুন করে এলাকার কোনো অসহায় হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়নি।
এই ইউনিয়নে প্রায় ৫ হাজার অসহায় দিনমজুর ও কর্মহীন মানুষের খাদ্যের চাহিদা রয়েছে। এখনো পর্যন্ত সেই সব অভাবগ্রস্ত মানুষদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী দেয়া হয়নি। ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দদের নিয়ে আলাপ-আলোচনা করে সবার সমন্বয়ে অচিরে কর্মহীন মানুষদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দেয়া হবে। তবে ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দদের সাথে কোনো ধরনের সমন্বয়ের অভাব নেই বলে তিনি স্বীকার করেন।
এই সংক্রান্ত বিষয়ে নাগরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম আলী আহমেদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, নাম গোপন রেখে বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে এলাকায় অসহায় পরিবারে মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। এলাকার কর্মহীন ১ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী পৌছে দিলে এলাকায় কেউ না খেয়ে থাকবে না। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের মধ্যে সমন্বয়ে অভাব নেই বলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম আলী আহমেদ জানান। তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে অসহায় মানুষদের জন্য কাজ করা হচ্ছে।
নাগরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক অলিউল ইসলাম অলির সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি এলাকায় নেই বলে জানান।
উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রেজাউল সিকদারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, দলীয় নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়হীনতার জন্য এলাকায় অসহায় পরিবারগুলো খাদ্যসামগ্রী পেতে বিলম্বিত হচ্ছে। এখনোও পর্যন্ত এলাকায় কোনো ধরনের জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়নি। স্থানীয় এনজিও, শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো অসহায়দের মাঝে খাদ্য সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়নি।