আজকে থেকে আঠারো দিনের ছুটি। মীরা স্কুল শেষে মা’র কাছ এসে বলেঃ মা আজ থেকে আমাদের স্কুল আঠারো দিনের জন্য ছুটি দিয়েছে। তারপর মা মেয়ের এমন কথা শুনে বললো: কেন দিয়েছে? তুমি জানো মামুনি?
– হ্যাঁ, জানি। স্যার বললেন ‘করোনা’ ভাইরাসের সংক্রমণের কারনে। কিন্তু করোনা ভাইরাস কি মা?
– এটা হলো ভয়ংকর রকমের ভাইরাস। এই ভাইরাস হলো ছোঁয়াচে। এই ভাইরাস কারো শরীরে প্রবেশ করলে সে খুব কষ্ট পায়। আবার অনেকে মারা যায়।
– আচ্ছা, মা, এই ভাইরাসে কি কি সমস্যা দেখা দেয়?
– শুরুর দিকে শরীরে হালকা জ্বর থাকে, সর্দিকাশি ও হাঁচি হয়। বমিও হয়। এরপর মাথাব্যথা ও জ্বরের তীব্রতা সাথে শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে। এবং একসময় রোগী মারা যায়।
-ওহ, তাহলে কি এই রোগ সবার হবে?
– না, মামুনি, সবার হবেনা। এটা হলো মারাত্মক ভাইরাস। তাই এটা বাতাসে ছড়ায় না। এই ভাইরাসের কোন রোগীর সংস্পর্শে আসলে সে আক্রান্ত হয়। যেমন সেই রোগীকে স্পর্শ করলে, তার ব্যবহৃত সব জিনিসপত্রে ছোঁয়া লাগলে ইত্যাদি।
– তবে আমরা সেই রোগীকে চিনবো কি করে?
– এই ভাইরাস আক্রান্তের প্রথম থেকে চৌদ্দ দিন পর্যন্ত রোগীকে স্বাভাবিক মনে হয়। এজন্য রোগীকে সহজে চেনা মুশকিল। তাই আমাদের সচেতন থাকতে হবে।
– সচেতন! কিন্তু কিভাবে সচেতন থাকবো?
– প্রথমত আমাদের পরিষ্কার থাকতে হবে। তারপর দিনে অন্তত সাত-আট বার সাবান দিয়ে হাত ভালোভাবে ধুতে হবে। এরপর মাস্ক পড়তে হবে। বাইরে ঘুড়ে বেড়ানো যাবেনা। কারো সাথে কোলাকুলি ও হ্যান্ডসেক করা যাবেনা। বিশেষ কোন প্রয়োজনে বাইরে গেলে একজন আরেকজন থেকে দুরত্ব বজায় রাখতে হবে। চোখ, নাক ও মুখে হাত লাগানো থেকে বিরত থাকতে হবে। তবেই এই মহামারী সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। এমনকি শরীরে সামান্য অসুস্থতা অনুভব করলে তৎক্ষনাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রথম অবস্থাতে ডাক্তার দেখালে এই রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।
– তাই আমাদের আতংক নয়, বরং সচেতনতায় রক্ষা পেতে পারি।
– হ্যাঁ, মামুনি। ঠিক বুঝেছো।
– তাহলেতো সবাইকে আমাদের সচেতন করা উচিৎ। আমি সচেতন হলে আমার পরিচিত লোকজন সবাই বাঁচবে। তেমনি তারাও সচেতন হলে, আরো অনেক লোক বাঁচবে। এভাবেই আমরা পুরো দেশকে বাঁচাতে পারি।
মীরা আপ্লূত হয়ে উঠে। সে অনেক কিছু জানতে পেরে খুশিতে তার বন্ধুদের সচেতন হওয়ার জন্য বলতে যায়। মীরা সবাইকে সাবধানতা অবলম্বন করতে বলেন।
লেখকঃ সাইফুল ইসলাম
মো. সাইফুল ইসলাম
(সাংবাদিক সাইফুল)