হাফিজুল ইসলাম লস্কর, সিলেট :: বর্তমানে বিশ্বব্যাপী আতংকের নাম করোনাভাইরাস। যার প্রভাবে ইতিমাধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মহামারীর আকার ধারন করেছে। বাংলাদেশে জনজীবনে এখনো করোনা ভাইরাসের তেমন প্রভাব পড়েনি। বাংলাদেশ সরকার করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহন করেছে। বাংলাদেশে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ১০ হাজার শয্যার ব্যবস্থা করাসহ প্রতিরোধ এবং চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থার পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। তারই অংশ হিসেবে সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার ব্যাবস্থা করা হয়।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন এবং চীনের চিকিৎসা পদ্ধতির সাথে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট মিলিয়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ এবং চিকিৎসার নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। তবে এ ভাইরাস আক্রান্ত হলে সরকার নির্ধারিত হাসপাতাল ছাড়া আধুনিক বড় বড় হাসপাতাল ও বাংলাদেশের জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসা কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। আর তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই দাবী তুলেছেন ‘করোনা ভাইরাস’ সনাক্তের পরীক্ষাগার ও আইসোলেশন ইউনিট বৃদ্ধির।
করোনা ভাইরাস’ সনাক্তের পরীক্ষাগার ও আইসোলেশন ইউনিট বৃদ্ধির দাবীর সাথে সুর মিলিয়ে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী সরকারী ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ‘করোনা ভাইরাস’ সনাক্তের পরীক্ষাগার ও আইসোলেশন চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপনের দাবী জানিয়েছেন প্রতিষ্টানের চিকিৎসকগণ ও কর্তৃপক্ষ।
চিকিৎসকরা দাবী করেন, পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন, করোনা ভাইরাস’ সনাক্তের পরীক্ষাগার ও আইসোলেশন চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপনের জন্য ভবন ও চিকিৎসক রয়েছেন অত্র মেডিকেলে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেবার জন্য বিশেষ উপযোগী অত্র মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালটিতে করোনা ভাইরাস’ সনাক্তের পরীক্ষাগার ও আইসোলেশন চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন করলে চিকিৎসার গতি তরান্নিত হবে এবং গুরুত্বপুর্ন হাসপাতালটিরও অচলাবস্থা দুর হবে।
করোনা ভাইরাস’ সনাক্তের পরীক্ষাগার ও আইসোলেশন চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপনের জোড় দাবী জানিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় ও প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সরকারী ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, সিলেটের চিকিৎসক ও কর্মকর্তাবৃন্দ। তাদের মাধ্যে অন্যতম হলেন :- সরকারী ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, সিলেটের সার্জারী বিভাগের প্রভাষক ডাঃ আক্তার হোসেন,
ডাঃ মিফতাহুল হোসেন সুইট (প্রভাষক, প্যাথলজি বিভাগ), ডাঃ তাজ উদ্দিন ( প্রাক্তন বিপি, অত্র মেডিকেল কলেজ),
ডাঃ জাফর হোসেন খাঁন (সাবেক জিএস, অত্র মেডিকেল কলেজ),
ডাঃ আফরুজ হোসেন ( সাবেক বিপি, অত্র মেডিকেল কলেজ), ডাঃ জালাল উদ্দিন বাদশা ( প্রভাষক- ইএনটি বিভাগ, অত্র মেডিকেল কলেজ), ডাঃ শামীম আহমদ ( প্রভাষক- অত্র মেডিকেল কলেজ), ডাঃ সেলিম আহমদ চৌধুরী (সাবেক জিএস, অত্র মেডিকেল কলেজ)।
এ দাবী সম্পর্কে সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগের সাবেক স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ও সরকারী ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, সিলেটের প্যাথলজি বিভাগের প্রভাষক ডাঃ মিফতাহুল হোসেন সুইট বলেন, সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার ব্যাবস্থা করা হলেও তার শয্যাসংখ্যা সীমিত। যদি এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায় তবে আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হবে। অনেকে সেই দিকে দৃষ্টি রেখে আইসোলেশন ইউনিট বাড়ানোর দাবী জানাচ্ছেন। আর আমিও এই দাবীকে যুক্তিযোগ্য মনে করছি। কারন আমাদের সব পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আর যদি সরকার মহোদয় সিলেটে আইসোলেশন ইউনিট বাড়ানোর উদ্যোগ নেন। তবে আইসোলেশনের জন্য সিলেটের প্রানকেন্দ্র শাহজালাল উপশহরে অবস্থিত ” সরকারী ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, সিলেট শয্যাসংখ্যা, ভবন, যোগাযোগ অর্থাৎ চিকিৎসার জন্য সবদিক দিয়ে সবচেয়ে উপযুক্ত।
সরকারী ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, সিলেটের সাবেক জিএস ডা. জাফর হোসেন খাঁন বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই দেখেছি বিভিন্ন বেসরকারী হাসপাতালকে আইসোলেশন ইউনিট করার দাবী জানিয়েছেন। তাই আমি বলতে চাই যেখানে সরকারী ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, সিলেটের মতো একটি সরকারী প্রতিষ্টান রয়েছে সেখানে বেসরকারী হাসপাতাল কেন? বরং এই ঐতিহ্যবাহী সরকারী হাসপাতালকেই করোনা ভাইরাস’ সনাক্তের পরীক্ষাগার ও আইসোলেশন চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন করুন। তাতে চিকিৎসার গতি তরান্নিত হবে এবং অবহেলিত গুরুপুর্ন হাসপাতালটিরও অচলাবস্থা দুর হবে।