খুলনা: খুলনা মহানগরীর খালিশপুরের স্কুলছাত্র রিফাত লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। মঙ্গলবার দিকে তার শারীরিক সমস্যা প্রকট হয়ে ওঠে। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ একে একে ৪টি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে নেয়া হয়। কিন্তু কেউ তাকে ভর্তি নেয়নি। শেষ পর্যন্ত সন্ধ্যায় রিফাত মারা যায়। রিফাত খালিশপুর হাউজিং বিহারি ক্যাম্প নং-১-এর বাসিন্দা মোহাম্মদ কাশেমের ছেলে।
নিহতের নানা কলিমুদ্দীন জানান, তার নাতি রিফাতকে মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক নেই বলে তাকে ভর্তি নেয়া হয়নি। কাগজে ওষুধ লিখে দিয়ে পরে সমস্যা হলে বুধবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়।
এরপর তিনি রিফাতকে নিয়ে খালিশপুর ক্লিনিকে যান। সেখানে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বলে দেয় কোনও চিকিৎসক নেই। রোগী ভর্তি করা যাবে না। এরপর তাদের পরামর্শে রিফাতকে সার্জিক্যাল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেও তাকে ভর্তি না নিয়ে ময়লাপোতা হাসপাতালে পাঠানো হয়। তারাও একইভাবে রোগীকে ভর্তি না নিয়ে ফেরত দেয়। এভাবে হাসপাতাল ঘুরতে ঘুরতে রিফাত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মারা যায়। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে রিফাতের লাশ খুলনা মহানগরীর গোয়ালখালী কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. শেখ আতিয়ার রহমান জানান, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে চিকিৎসকরা চাপের মধ্যে রয়েছেন। কিন্তু সাধারণ রোগীরা যথাযথ চিকিৎসা সেবা পাবেন না সেরকম পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি। বিষয়টি আমি খোঁজ-খবর নিয়ে দেখবো।
মহানগরীর খালিশপুর ক্লিনিকের এমডি মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, লিভার সিরোসিস রোগীর জন্য আইসিইউ দরকার হয়। জটিল অবস্থায় থাকার কারণেই ওই রোগীকে ভর্তি না নিয়ে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে সার্জিক্যালে রেফার করেছেন হয়তো। এটা আমাদের ক্লিনিকের নিয়ম মেনেই করা হতে পারে। তারপরও বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে দেখা হবে।
খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ জানান, কোনও হাসপাতালে সাধারণ রোগীর চিকিৎসা বন্ধ করা হয়নি। তবে, হাসপাতাল ও ক্লিনিকে করোনার কারণে মানবিকতা কমছে। দায়বদ্ধতা থেকে এ রোগীর চিকিৎসাসেবা দেওয়া উচিত ছিল। তবে কেন রোগীকে যথাযথ চিকিৎসা সেবা দেওয়া হলো না তা খোঁজ নিয়ে দেখা হবে