ডেস্ক: করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী এক বিপর্যয়ের নাম। এরই মধ্যে ২০০টির বেশি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। এর দাপটে অসহায় হয়ে পড়েছে গোটা বিশ্ব। কোনও ধরনের ভ্যাকসিন না থাকায় মরছে মানুষ। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে বিশ্বব্যাপী আক্রান্ত হয়েছে ৭ লাখ ৮৬ হাজার মানুষ। এর মধ্যে মারা গেছে সাড়ে ৩৭ হাজার। আর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখনও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে সাড়ে ২৯ হাজার মানুষ।
এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির উপসর্গ জ্বর থেকে শুরু করে শুষ্ক কাশি- এ ধরনের একাধিক উপসর্গ দেখা দেয় বলে এতদিন জানা ছিল। এবার এর সঙ্গে আরও একটি উপসর্গ যোগ হয়েছে।
নিউ ইয়র্কের চিকিৎসকরা কম পরিচিত একটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে হার্ট অ্যাটাকের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন।
ব্রুকলিনের একটি হাসপাতালে একজন রোগী অনিয়মিত হৃদস্পন্দন এবং রক্তে ট্রোপোনিন নামক প্রোটিনের উচ্চ মাত্রা সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন- এই দুটিই হার্ট অ্যাটাকের স্পষ্ট লক্ষণ। কিন্তু পরীক্ষায় দেখা গেছে, ওই রোগীর কোনোভাবেই হার্ট অ্যাটাক ছিল না, এর পরিবর্তে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন।
হাসপাতালে ১২ দিনের চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ হয়েছিলেন। তবে চিকিত্সকরা সতর্ক করেছেন যে, তার কেসটি ব্যতিক্রম হতে পারে না। নতুন করোনাভাইরাস বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ফুসফুসকে সংক্রামিত করে, কিন্তু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা এখন বিশ্বাস করেন, এটি হার্টকেও প্রভাবিত করতে পারে।
আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজির চিফ সায়েন্স ও কোয়ালিটি অফিসার ড. জন রামসফেল্ড নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, ‘আমরা এতদিন কেবল ফুসফুস, ফুসফুস এবং ফুসফুস নিয়ে ভাবছিলাম, যা আমাদের জন্য সহায়ক বিষয় ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে আমরা হার্টের ওপর সম্ভ্যাব্য প্রভাব সম্পর্কে শুনতে শুরু করি।’
নিউ ইয়র্কের ঘটনাটি প্রকাশিত হয়েছে ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস এর হেলথ সায়েন্স সেন্টারের গবেষকদের একটি গবেষণার পরপরই। যেখানে বলা হয়েছিল- হার্টের পূর্ব সমস্যা ছাড়াই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
গবেষণাটির প্রধান গবেষক ড. মোহাম্মদ মাদজিদ বলেন, ‘আগে থেকে হৃদরোগ না থাকলেও সম্ভবত করোনাভাইরাস রোগে হার্টের টিস্যু আক্রান্ত হতে পারে। মোট কথা হৃদরোগী ছাড়াও করোনাভাইরাসে যেকোনো রোগীর হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। আর ইতিমধ্যে যাদের হৃদরোগ রয়েছে তাদের ঝুঁকি বেশি।’