আখেরী মোনাজাতে আমিন আমিন ধ্বনিতে প্রকম্পিত তুরাগ তীর

Slider জাতীয় টপ নিউজ

10382758_424597614360110_6454270107588764028_n

মীর ফারুক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ইজতেমা ময়দান, টঙ্গী থেকে: সকাল ১১টা ২০ মিনিট থেকে ১১টা ৪৭মিনিট পযন্ত দীঘ ২৭মিনিটে শেষ হল আখেরী মোনাজাত।মোনজাদ পরিচালনা করে ভারতের মাওলানা সা’দ।

মোনাজাতে বলা হয়, দ্বীন সম্পর্কে জানা ও মেহনত করা জরুরী। দুনিয়ার কোন সম্পদ কাজে আসবে না। আল্লাহ সন্তুষ্টি লাভের জন্য আখিরাতে হাজির হতে হবে। আল্লাহর জন্য যা কিছু করা হয় তাই কাজে আসবে। দ্বীন আমল ছাড়া কোন কিছু কাজে আসবে না। আল্লাহ অসন্তোষ্ট হলে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হবো। রাতের শেষ ভাগে আল্লাহকে ডাকতে হবে। চোখের দুফোটা পানি ফেলতে হবে। পথের পাশে ভিক্ষুক বা অন্ধ দেখলে মানুষের কাছে কিছু চেয়ে কিছু না কিছু পায় তাই আল্লাহর কাছে আকুতি করে চাইলে আল্লাহ ফেরত দেন না। মোনাজাতে আরো বলা হয়, কোরান সুন্নাহর আলোকে জীবন পরিচালনা করার জন্য আল্লাহর সাহায্য কামনা করা হয়।

এই মাত্র শেষ হওয়া বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মুনাজাতে আল্লাহর রহমত ও নৈকট্য লাভ, বিশ্ব শান্তি সমৃদ্ধির জন্য অনুষ্ঠিত মোনাজাতে এসব কথা বলে প্রার্থনা করা হয়েছে। বেলা ১২টা ৫৪ মিনিটে মুনাজাত শুরু হয়। শেষ হয় ১টা ১৪মিনিটে। ২০ মিনিট স্থায়ী এই মুনাজাতে দুহাত ঊর্ধ্বমুখী করে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেওয়া কয়েক লাখ মুসল্লির আমিন আমিন ধ্বনিতে টঙ্গীর বাতাসে ভিন্ন রকম সূরের আবহ সৃষ্টি করে। এই ধ্বনিতে পুরো টঙ্গী এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে মুনাজাতের সময়। আর মুনাজাত পরিচালনাকারী ভারতের মাওলানা জোবায়রুল হাসান দোয়া করলেন বিশ্ব মুসলিমের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায়। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের জন্যও দোয়া করা হলো। আর এই আখেরি মুনাজাতের মধ্য দিয়েই শেষ হলো বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব শুরু হবে আগামী ৩১ জানুয়ারি। শেষ হবে ২ ফেব্রুয়ারী।

 

বিশ্বের ৮৮টি দেশের ৭হাজার ৫১৯ জন বিদেশী মেহমানসহ প্রায় কয়েক লাখ মানুষ এই আখেরী মুনাজাতে অংশ গ্রহণ করেন। কয়েকটি স্যাটেলাইট টেলিভিশনে সরাসরি মুনাজাত সম্প্রচারের ফলে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ পরোক্ষভাবে মুনাজাতে শরিক হতে পেরেছেন।

 

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবন ও গণবভনে ডিজিটাল পদ্ধতিতে মোনাজাতে শরীক হয়েছেন।

 

হেদায়াতি বয়ান

সকাল ১০টা থেকে মোনাজাতের আগে চলে হেদায়াতি বয়ান। বয়ানে বলা হয়, আল্লাহর গজবের বড় স্থান হচ্ছে জাহান্নাম। তিনি আল্লাহর রাস্তায় (তাবলীগে) দাওয়াতি কাজে পায়ে হেটে মানুষের কাছে দাওয়াত পৌঁছে দেয়ার পরামর্শ দেন। কারণ পায়ে হেটে বেশি মানুষকে দ্বীনের দাওয়াত দেয়া সম্ভব হবে। এতে পায়ে যে ধূলাবালি লাগবে তা জাহান্নামের আগুনকে ঠান্ডা করে দেয়। তিনি তাবলীগের দাওয়াতি কাজে গিয়ে মানুষের কাছে ইহজগতের জন্য ছওয়াল করতে বারণ করে বলেন, যে জামাত ছওয়াল করে আল্লাহর সাহায্যের দরজা তাদের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। ছওয়াল করলে দিলে শয়তান স্থান পায়। দাওয়াতি কাজে সবচেয়ে বড় কাজ হলো নিজের নিয়তকে সহি করা এবং অন্যের কাছে ছওয়াল না করা।

 

বয়ানের তাৎক্ষণিক অনুবাদ- বিশ্ব ইজতেমায় বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের তাবলিগ মারকাজের ১৫-২০জন শুরা সদস্য ও বুজর্গ বয়ান পেশ করবেন। মূল বয়ান উর্দূতে হলেও বাংলা, ইংরেজী, আরবি, তামিল, মালয়, তুর্কি ও ফরাসি ভাষায় তাৎক্ষনিক অনুবাদ হচ্ছে। বিদেশী মেহমানদের জন্য মূল বয়ান মঞ্চের উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্বপাশে হোগলা পাটিতে বসেন। বিভিন্ন ভাষাভাষি মুসুল্লীরা আলাদা আলাদা বসেন এবং তাদের মধ্যে একজন মুরুব্বী মূল বয়ানকে তাৎক্ষণিক অনুবাদ করে শুনান।

 

যারা বয়ান করলেন ভারতের মাওলানা ইসমাইল , মাওলানা মোস্তাকিম, মাওলানা জোবায়ের, পাকিস্তানের আহমেদ লাট সহ বিশিষ্ট ইসলামী আলেমগণ এবারের এজতেমায় বয়ান করবেন বলে জানিয়েছেন ইজতেমার মুরুব্বী মোঃ গিয়াস উদ্দিন।

 

ইজতেমা মাঠে ৭মুসল্লীর মৃত্যু জানাযা হয়েছে ৯জনের;

 

শীত ও অন্যান্য রোগে ইজতেমা ময়দানে ৭জন মুসুল্লী মারা গেছেন। রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় আব্দুস সোবাহান(৬৫) নামে এক মুসুল্লীর
মৃত্যু হয়। তার পিতার নাম সাহেব আলী। বাড়ি গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জ
উপজেরার হরিচাঁদপুর গ্রামে।

শনিবার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত তিন মুসুল্লী মারা যান। তাদের মধ্যে
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাত সোয়া ১১টার চুয়াডাঙ্গার আলম ডাঙ্গার বুলারধারী
এলাকার মকবুল হোসেন (৭৫), শনিবার রাত ১২টার দিকে শ্বাসকষ্টে ভুগে সিলেটের
জকিগঞ্জ থানার কাদিরপুর এলাকার সাদেকুর রহমান (২০) রাত ১টার দিকে এবং
চুয়াযাঙ্গার দামুড়হুদা থানার সুবলপুর এলাকার তোয়াজ্জেল হোসেন (৫০)
হৃদযন্ত্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। এর আগে এবারের  বিশ্বইজতেমায়যোগ
দিতে এসে ৭জন মারা গেলেন।

 

 

শুক্রবার ফজরের নামাজের পর ইস্তেমা ময়দানে নামাজে জানাযার পর তিন জনের মৃতদেহ তাদের নিজ বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন মৃত: মো: কফিলউদ্দিন নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার মাঝের নগর গ্রামের মৃত: নাদের মন্ডলের ছেলে। ভোররাত পৌনে ৪টার দিকে শ্বাসকষ্ট ও বার্ধক্যজনিত কারনে তাঁর মৃত্যূ হয়েছে। জাহাঙ্গীর আলম ঢাকার দক্ষিন বাড্ডার বাসিন্দা। বার্ধক্যজনিক কারনে তার মৃত্যূ হয়েছে। আব্দুস সালাম গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার কির্তনীয়া গ্রামের বাসিন্দা। শ্বাস কষ্ট জনিত রোগে তার মৃত্যূ হয়।

 

 

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি নেত্রী মোনাজাতে অংশ গ্রহণ করলেন যে ভাবে

 

বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মুনাজাতে অংশ নিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ বঙ্গভবনে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে ডিজিটাল পদ্ধতিতে মুনাজাতে অংশ নিয়েছেন। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এটলাস হোন্ডা কারখানা ভবনে বিশেষ মঞ্চে মুনাজাতে অংশ নিতে ১১টা ১৫ মিনিটে উপস্থিত হন ।

 

আগতদের প্রস্তুতি; আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে রোববার ভোর থেকেই টঙ্গীর ইজতেমা অভিমুখে শুরু হয় মানুষের ঢল। টঙ্গীর পথে শনিবার মধ্যরাত থেকেই ঢাকা-ময়মনসিং মহাসড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মোনাজাতে অংশ নিতে চার দিক থেকে লাখ লাখ মুসুল্লী পায়ে হেঁটেই ইজতেমাস্থলে পৌঁছেন। মধ্যরাত থেকেই ইজতেমা মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে মুসুল্লীরা মাঠের আশে-পাশের রাস্তা, অলি-গলিতে অবস্থান নেন। ইজতেমা স্থলে পোঁছুতে না পেরে কয়েক লাখ মানুষ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে মোনাজাতের জন্য পুরানা খবরের কাগজ, পাটি, সিমেন্টের বস্তা ও পলিথিন সিট বিছিয়ে বসে পড়েন। এছাড়াও পাশ্ববর্তী বাসা-বাড়ি-কলকারখানা-অফিস-দোকানের ছাদে, যানবাহনের ছাদে ও তুরাগ নদীতে নৌকায় মুসুল্লীরা অবস্থান নেন। যে দিকেই চোখ যায় সেদিকেই দেখা যায় শুধু টুপি-পাঞ্জাবি পড়া মানুষ । সবাই অপেক্ষায় আছেন কখন শুরু হবে সেই কাক্সিক্ষত আখেরি মোনাজাত। ইজতেমা স্থলের চারপাশের ৩-৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। আখেরি মোনাজাতের জন্য রোববার আশে-পাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কলকারখানাসহ বিভিন্ন অফিস-আদালতে ছিল ছুটি। কোন কোন প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা না করলেও কর্মকর্তাদের মোনাজাতে অংশ নিতে বাধা ছিল না। নানা বয়সী ও পেশার মানুষ এমনকি মহিলারাও ভিড় ঠেলে মোনাজাতে অংশ নিতে রোববার সকালেই টঙ্গী এলাকায় পৌঁছেন।

 

নিরাপত্তা; টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষ্যে সরকার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা মূলক ব্যবস্থা গ্রহন করেছে। এর মধ্যে বিভিন্ন ভাবে প্রায় ১২ হাজারের মত আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত হয়েছে। ইজতেমাস্থলে নিরাপত্তা ছিল চোখে পড়ার মতো। সেখানে বেশ সুউচ্চ ক’টি পর্যবেক্ষন টাওয়ার বসানো হয়েছে। র‌্যাব সদস্যরা ওইসব টাওয়ার থেকে ইজতেমাস্থল পর্যবেক্ষণ করছেন। আকাশে হেলিকপ্টারে ও তুরাগ নদীতে স্পীড বোটের টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া মুসুল্লীবেশে গোয়েন্দা পুলিশ মাঠে ও খিত্তার মুসল্লীদের মাঝে অবস্থান করছেন। মাঠের প্রবেশ পথে ও আশে-পাশের এলাকায় পুলিশ, র‌্যাব ও সাদা পোষাকধারী পুলিশসহ গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরা কড়া নজরদারি করছেন। প্রতিটি গেট ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা ও ভিডিও ক্যামেরা বসানো হয়েছে। মাঠের উত্তরপাশে স্থাপিত র‌্যাবের কন্ট্রোলরুম থেকে এসব ক্যামেরার মাধ্যমে পুরো এলাকা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। র‌্যাব ছাড়াও পুলিশ ও জেলা প্রশাসন এবং গাজীপুর সিটিকর্পোরেশনের উদ্যোগে ইজতেমা এলাকায় পৃথক কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে। মাঠে প্রবেশকালেও মুসুল্লীদের (সন্দেহভাজনদের) মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল¬াশী চালানো হচ্ছে।

 

ভ্রাম্যমান আদালত; ২৪ টি ভ্রাম্যমান আদালত ২৪ ঘন্টা ইজতেমা ময়দানে কাজ করছে। বিশ্ব ইজতেমায় বিশুদ্ধ খাবার নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালত ২৫টি মামলা করে প্রায় ২লাখ টাকা জড়িমানা আদায় করেছেন।

 

স্বাস্থ্য সেবা; ইজতেমা ময়দানে ৪৫টি ফ্রি মেডিক্যাল টিম স্থাপিত হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মিত ৮টি পল্টুন ব্রীজ প্রতিবারের ন্যায় নির্মিত হয়েছে। অতিরিক্ত ৪টি ট্রান্সফরমার,৩টি ফিডার ও ৫টি শক্তিশালী জেনারেটর ইজতেমা ময়দানে মুসুল¬ীদের সুবিধার জন্য স্থাপন করা হয়েছে। ঢাকা ওয়াসার পাশাপাশি ১২টি গভীর নলকূপ স্থাপন করে পানি সরবরাহের জন্য ১৩ কিঃ মিঃ পাইপ লাইন স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। ইজতেমা ময়দানে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ৪৮১৪জনকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য বিভাগের ইজতেমা কনট্রোল। বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত সন্দেহে মোট ৩৫ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ইসমাইল হোসেন।

 

৩৫হাজার বিদেশি মুসল্ল¬ী: ইজতেমায় মিসর, ওমান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব-আমিরাত, কাতার, অষ্ট্রেলিয়া, ব্রনাই, কানাডা, কম্বোডিয়া, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, জার্মানী, ইরান, জাপান, মাদাগাস্কার, মালি, মোজাম্বিক, নাইজেরিয়া, পানামা, সেনাগাল, দঃ আফ্রিকা, তাঞ্জেনিয়া, ত্রিনিদাদ, রাশিয়া, আমেরিকা, জিম্বাবুই, বেলজিয়াম, ক্যামারুন, চীন, কমোরেস, ফিজী, ফ্রান্স, ইন্দোনেশিয়া, ইটালী, কেনিয়া, মালয়শিয়া, মায়ানমার, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, সুইডেন, থাইল্যান্ড, তার্কি, যুক্তরাজ্য, জাম্বিয়া, কোরিয়া, আলজিরিয়া, ডিজিবুতি, ইথোপিয়া, ইরাক, ফিলিস্তিন, কুয়েত, মরক্কো, কাতার, সোমালিয়া, সিরিয়া, তিউনিসিয়া, ইয়েমেন, পাকিস্তান, বাহরাইন, ইরিত্রিয়া, জর্দান, মৌরিতানিয়া, ভারত, সুদান, দুবাইসহ বিশ্বের ১৩৫টি রাষ্ট্রের ৪২ হাজার মুসল্লী¬ ইজতেমায় অংশ নিয়েছেন।

 

মুসল্লীদের অবস্থান; ইতোমধ্যে কনকণে শীত ও কুয়াশা উপেক্ষা করে দেশ-বিদেশের লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান ইজতেমা মাঠে এসে উপস্থিত হয়েছেন। ১ম পর্বে ৩২ জেলার মুসুল্লীরা জেলাওয়ারী মাঠের ৪০টি খিত্তায় অবস্থান করছেন। জেলা গুলো হলো, ১ ও ২ নম্বর খিত্তায় গাজীপুর জেলা, ৩ থেকে ১২ নম্বর খিত্তায় ঢাকা জেলা, ১৩ নম্বর খিত্তায় সিরাজগঞ্জ জেলা, ১৪ নম্বর খিত্তায়- নরসিংদী জেলা, ১৫ নম্বর খিত্তায় ফরিদপুর, ১৬ নম্বর খিত্তায় রাজবাড়ি, ১৭ নম্বর খিত্তায়- শরিয়তপুর, ১৮ নম্বর খিত্তায় কিশোরগঞ্জ, ১৯ নম্বর খিত্তায় রংপুর, ২০ নম্বর খিত্তায় নাটোর, ২১ নম্বর খিত্তায়- শেরপুর, ২২ নম্বর খিত্তায় রাজশাহী, ২৩ নম্বর খিত্তায় গাইবান্ধা, ২৪ নম্বর খিত্তায় জয়পুরহাট, ২৫ নম্বর খিত্তায় লালমনিরহাট, ২৬ নম্বর খিত্তায় হবিগঞ্জ, ২৭ নম্বর খিত্তায় দিনাজপুর, ২৮ নম্বর খিত্তায় সিলেট, ২৯ নম্বর খিত্তায় চাঁদপুর, ৩০ নম্বর খিত্তায় ফেনী, ৩১ নম্বর খিত্তায় চট্টগ্রাম, ৩২ নম্বর খিত্তায়- বান্দরবন, খাড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি, ৩৩ নম্বর খিত্তায় বাগেরহাট, ৩৪ নম্বর খিত্তায় কুষ্টিয়া, ৩৫ নম্বর খিত্তায় নড়াইল, ৩৬ নম্বর খিত্তায় চুয়াডাঙ্গা, ৩৭ নম্বর খিত্তায় যশোর, ৩৮ নম্বর খিত্তায় ভোলা, ৩৯ নম্বর খিত্তায়- বরগুনা এবং ৪০ নম্বর খিত্তায়-ঝালকাঠি জেলার মুসুল¬ীরা অবস্থান নেবেন।

 

 

ইজতেমাকে কেন্দ্র করে ক্ষুদে ব্যবসায়িরা ইজতেমা মাঠের আশে-পাশে অস্থায়ী হোটেল, কাঁচা বাজার, নানা ধরনের কাপড় ও রকমারি পণ্য সামগ্রীর বাজার বসিয়েছে। এছাড়াও টঙ্গীর আশে-পাশের মার্কেটের বিভিন্ন স্থায়ী হোটেল ও দোকানে চলছে জমজমাট ব্যবসা। এসব হোটেল ও বাজারে খাদ্য মান ও দ্রব্য মূল্য যাচাইয়ে বেশ ক’টি ভ্রাম্যমান আদালতও কাজ করছে।

 

হোগলা পাটির বাজার- বছরের অন্য সময় হোগলার চাটাইয়ের তেমন কদর না থাকলেও ইজতেমা উপলক্ষে এর দাম বেড়ে যায়। ইজতেমার বাজার ধরতে ব্যবসায়িরা ১-২মাস আগে থেকে হোগলা পাতা সংগ্রহ চাটাই বুননের কাজ শুরু করেন। ইজতেমায় বিক্রির জন্য নোয়াখালীর নাছির ডুগী এলাকা থেকে ৫শ’ হোগলার চাটাই নিয়ে এসেছেন আ. মতিন নামের এক ব্যবসায়ি। ছোট থেকে বড় সাইজের চাটাই তিনি ৩০ থেকে ৮০টাকা বিক্রি করছেন। অন্য সময় তা অর্ধেক দামে বিক্রি হয় না।

 

অস্থায়ী বাজার- মন্নু কারখানার দক্ষিণে ও আশরাফ স্কুলের পশ্চিম পাশে খোলা জায়গায় বসেছে নানা পণ্যের অস্থায়ী বাজার। এখানে কম্বল, সেন্ডেল, পাজমা-পাঞ্জাবি, হাড়ি-পাতিল, চুলা, কাঁচা বাজারসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই পাওয়া যাচ্ছে। তবে এ সব বাজারে বেশি দরে পন্য বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারপরও প্রয়োজনের তাগিদেই দেশি-বিদেশি মুসুল্লীরা তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে এসব বাজারে ভিড় করছেন। আফ্রিকা থেকে আসা তিন মুসুল্লী ওমর, ইসা ও মিসের আলী শুক্রবার ওই বাজারে গেলেন সেন্ডেল কিনতে। কিন্তু দোকানী তাদের কাছ থেকে ৮০-১০০টাকার প্লাষ্টিকের সেন্ডেলের দাম রেখেছেন ১৪০ টাকা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যবসায়ি জানান, তাদের জায়গা ভাড়া নিতে হয়েছে চড়া মূল্যে। ১০বর্গহাত আকারের একটি দোকানের ভিট ১০দিনের জন্য ৩০হাজার টাকায় ভাড়া নিয়েছেন।

 

 

মোবাইল মোনাজাত

ইজতেমা স্থলে যেতে পরিবহন সংকট ও ভিড় এড়াতে গাজীপুরের কয়েকটি স্থানে এলাকাবাসি মোবাইল ফোনে মোনাজাতে অংশ নেয় বলে জানা গেছে। ইজতেমার মূল মাঠ থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূূরে গাজীপুর সদরের চান্দনা চৌরাস্তা ঈদগাহ ময়দানে কয়েক হাজার মুসুল্লী জমায়েত হন। পরে তারা মোবাইল ও পুলিশের ওয়াকিটকির মাধ্যমে ইজতেমা স্থলে যোগাযোগ রক্ষা করে বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে শরিক হয়েছেন। একই ভাবে জেলার ভোগড়া, বাসন সড়ক ও শিমুলতলী এলাকায় মোবাইল মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

 

 

কয়েক হাজার পরিত্যাক্ত জুতা

আখেরি মোনাজাত শেষে হুড়োহুড়ি করে বের হতে গিয়ে কয়েক হাজার জুতা-স্যান্ডেল ফেলেই মাঠ ত্যাগ করেন মুসুল্লীরা। মোনাজাত শেষে আশে-পাশের সড়ক-মহাসড়কগুলোতে কয়েক হাজার জুতা-স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখা গেছে। আর টোকাইদের বস্তায় ভরে ওইসব জুতা-স্যান্ডেল নিয়ে যেতে দেখা গেছে।

 

 

বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘন্টা, জানুয়ারী ১১,২০১৫

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *