শারমিন সরকার, ঢাকা: গতকাল করোনা ভাইরাস নিয়ে নিয়মিত অনলাইন লাইভ প্রেস ব্রিফিংয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, দেশে নতুন করে আরো ৫ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ জনে।
তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৪ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। আক্রান্তদের মধ্যে সব মিলিয়ে মোট ১১ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তিনি আরো জানান, নতুন রোগীদের সবাই পুরুষ। তাদের মধ্যে দুইজনের বয়স ৩০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। দুজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। আর একজন ষাটোর্ধ্ব। ডা. ফ্লোরা বলেন, ৫ জনের একজন বিদেশ থেকে এসেছিলেন। ৩ জন আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ এসে সংক্রমিত হয়েছেন। আর ১ জন কীভাবে সংক্রমিত হয়েছেন সেটা আমরা বোঝার চেষ্টা করছি। নতুন এই ৫ রোগীর মধ্যে ৪ জনের লক্ষণ মৃদু এবং একজনের মধ্যে কোমরবিডিটি (দীর্ঘমেয়াদী অন্য রোগ) আছে বলে জানান তিনি।গত ২৪ ঘণ্টায় ১২৬টি পরীক্ষা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, মোট নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে ৯২০ জনের। নমুনা পরীক্ষা করার সুযোগ বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকায় জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান এবং শিশু হাসপাতালে এবং চট্টগ্রামে বিআইটি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে পরীক্ষার আওতা আরও বাড়ানো হবে। ডা. ফ্লোরা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইইডিসিআরের হটলাইনে কল এসেছে ৩৩২১টি। এর সব ক’টিই করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত। ব্রিফিংয়ে করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে নাগরিকদের করণীয়ও তুলে ধরেন তিনি।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে ফ্লোরা বলেন, এরই মধ্যে যারা শহর ছেড়ে গ্রামে চলে গেছেন, তাদেরও প্রবাস থেকে আসাদের মত কোয়ারেন্টিনের আওতায় আনতে হবে। কারণ তারা শহরে কার সাথে মেলামেশা করেছেন, তারা কেরিয়ার কি না, এটা জানতে হবে। এ ছাড়া গ্রাম ছেড়ে শহরে আসার বিষয়টিও ভাবতে হবে। কারণ গ্রামে তারা কোন করোনা রোগীর সংস্পর্শে ছিল কি না, সেটার জন্যও ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ শে ডিসেম্বরের চীনের উহানে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনা ভাইরাস এখন বৈশ্বিক মহামারি। বিশ্বের প্রায় ২০০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এ ভাইরাসটি। এখন পর্যন্ত এই প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় পৌনে ৫ লাখ এবং মারা গেছেন ২১ হাজারের বেশি। অপরদিকে, চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ১৪ হাজারের ওপরে। বাংলাদেশে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে গত ৮ই মার্চ। এরপর দিন দিন এ ভাইরাসে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে। সর্বশেষ হিসাবে দেশে এখন পর্যন্ত ৪৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন ৫ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ১১ জন।