বিশেষ অবস্থা না মেনে ঘরের বাইরে জনগণকে দেখে ক্ষুব্ধ কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। অনলাইনে ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে লোকজন ঘরের বাইরে বিভিন্ন পার্কে, রাস্তায় এমনকি খেলার মাঠে দল বেঁধে বিচরণ করছে। এ অবস্থা দেখে ক্ষুব্দ ট্রুডোর উচ্চারণ- ঘরে ফিরুন। ঘরের ভিতর অবস্থান করুন। না হলে এর চেয়েও কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য থাকবে তার সরকার। দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে তিনি বলেছেন, তার সরকার এর চেয়েও কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে, এমন সম্ভাব্য পথও খোলা আছে। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন গার্ডিয়ান।
অনলাইনে জনগণের ওইসব ছবি দেখার পর ট্রুডো বলেছেন, আমরা অনলাইনে ওইসব মানুষের ছবি দেখেছি। তারা মনে করছেন তা অজেয়। অর্থাৎ করোনা তাদেরকে স্পর্শ করতে পারবে না। এরপরই তার কণ্ঠ কঠোর হয়ে ওঠে। তিনি ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, না, আপনারা অজেয় নন। যথেষ্ট হয়েছে। সপ্তাহান্তে তিনি তার দেশের শিশু-কিশোরদের উদ্দেশে ভাষণ দেয়ার পর এভাবে বক্তব্য রেখেছেন। অনিশ্চয়তার মধ্যে শিশু কিশোররা যে ত্যাগ স্বীকার করছে এবং আইসোলেশনে রয়েছে এ জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
উল্লেখ্য এক সপ্তাহ আগে তার স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এরপর থেকে এই দম্পতি স্বেচ্ছায় আইসোলেশনে রয়েছেন। সেখান থেকে বেরিয়ে বাসার সামনে দাঁড়িয়ে জাস্টিন ট্রুডো বলেন, সম্ভাব্য পদক্ষেপের মধ্যে তার সরকার প্রাদেশিক সীমান্তগুলোকে বন্ধ করে দিতে পারে। মানুষ যাতে কোয়ারেন্টিন আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয় তা নিশ্চিত করতে আইন ব্যবহার করতে পারেন। আইন ব্যবহার করতে পারেন সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে। সোমবার প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে জাস্টিন ট্রুডোর ফোনে কথা বলার কথা। এর আগে তিনি এমন হুঁশিয়ারি দেন দেশবাসীকে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই ফোনকলে তিনি প্রাদেশিক সীমান্তগুলি বন্ধ করে দেয়ার বিষয়ে কথা বলতে পারেন। তাছাড়া যারা দলবদ্ধভাবে চলাফেরা করবে অথবা যারা স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টিন মানবেন না, তাদের বিরুদ্ধে বড় অংকের জরিমানা করার বিষয়ে কথা বলতে পারেন।
এরই মধ্যে যে কোনো ব্যক্তি নোভা স্কশিয়া এবং প্রিন্স এডওয়ার্ড আইল্যান্ডে গেলে তাকে অবশ্যই দু’সপ্তাহের স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টিনে থাকার মতো কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। যদি কোনো ব্যক্তি কানাডার কোনো প্রদেশ থেকেও সেখানে প্রবেশ করেন তাহলে তার ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। এরই মধ্যে গত সপ্তাহে অত্যাবশ্যকীয় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এমন সফর বন্ধ করেছে কানাডা। বন্ধ করে দিয়েছে তাদের মধ্যকার অভিন্ন সীমান্ত। এখন পর্যন্ত কানাডায় করোনার পরীক্ষা করা হয়েছে এক লাখের বেশি মানুষের। তার মধ্যে প্রায় ১৫০০ জনের দেহে পাওয়া গেছে করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯। এ ভাইরাস সংক্রমণে মারা গেছেন ২০ জন।