ঢাকা: সারা পৃথিবীজুড়েই করোনাভাইরাস আতঙ্ক। বাংলাদেশে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। কিভাবে এই ভাইরাস মোকাবেলা করবে সেটা নিয়ে মানুষের মধ্যে আছে দুশ্চিন্তা। টকশো, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় শুধু কথার ফুলঝুড়ি। করোনাভাইরাসের কারণে সবচেয়ে বেশি বেশি সমস্যায় পড়েছে দরিদ্র আর অতিদরিদ্র্য শ্রমজীবী পরিবারের মানুষগুলো যারা দিন আনে দিন খায়। কারণ সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও করোনা আক্রান্তের পর দেশের মানুষ উদ্বেগ আর উত্কণ্ঠায় দিন পাড় করছে। স্কুল কলেজসহ শিক্ষপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মানুষ এখন ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে। ফলে হাট বাজার, মার্কেটসহ বিভিন্ন সেক্টরের কর্মহীন হয়ে পড়েছে হাজার হাজার শ্রমজীবী মানুষ। দিন আনে দিন খায় এমন পরিবারের মানুষরা বেশি বিপাকে পড়েছে।
রাজধানী ঢাকাসহ বিভাগী সারাদেশের মানুষের পরিবারের তিন বেলা পেটের ভাতের জোগান কিভাবে, সেই চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন অসহায় মানুষগুলো। এরই মধ্যে অনেকেই এইসব অসহায় মানুষগুলোর পাশে নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী পাশে দাঁড়াচ্ছেন। কেউ নিজের বাড়ি ভাড়া মওকুফ করে দিচ্ছেন, কেউবা এক মাসের খাবার তুলে দিচ্ছেন অতিদরিদ্র পরিবারের মাঝে। কেউবা দরিদ্র পরিবারের মানুষের হাত ধোয়া ও মাইকিং করে সচেতন করে তুলছেন। অতিদরিদ্র পরিবারের পাশে দাঁড়ানো এমনই একজন গাজীপুর মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেল।
তিনি সোমবার দুপুরে নগরীরর দুই শতাধিক অতিদরিদ্র শ্রমজীবী পরিবারের মাঝে এক মাসের চাল, ডাল, তেলসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তুলে দিয়েছেন। কর্মহীন দুই শতাধিক পরিবারের মধ্যে এক মাসের খাবারের দুশ্চিন্তা দূর করলেন রাসেল সরকার। গাজীপুরের ভোগড়া এলাকার নিজবাড়ির পাশেই ওইসব মানুষের মধ্যে এক মাসের খাবার তুলে দেন তিনি। করোনা সচেতনতায় লোক সমাগম কমিয়ে এসব খাবার সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এদিকে এমন দুঃসময়ে খেটে খাওয়া মানুষগুলো খাবার পেয়ে বেজায় বেশ খুশি।
লক্ষ্মীপুর থেকে আসা প্রতিবন্ধী আশরাফুল ইসলাম বলেন, চৌরাস্তায় বসে বাদাম বিক্রি করে যা পেতাম তাই দিয়ে সংসার চলতো, কিন্তু এখন রাস্তায় কোন লোক নাই বিক্রিও নাই। পরিবারের খাবার নিয়ে খুব চিন্তায় ছিলাম, কিন্তু আল্লাহর রহমত হইছে রাসেল সরকার আমাদের এক মাসের খাবার দিয়েছে।
জয়দেবপুর বাজারের পান বিক্রেতা ষাটোর্ধ্ব কালাম বলেন, জন্মের পর এমন অবস্থা কোন সময় দেখি নাই, করোনার কারণে মানুষ সবাই ঘরে ঢুকছে কিন্তু আমাগো পেট তো বন্ধ রাখতে পারি না, খুব চিন্তায় ছিলাম। অন্তত এক মাস খাবার নিয়ে ভাবতে হবে না।
১০ কেজি চাল, আলু ৫ কেজি, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিরতরণ করেছেন। এসব পরিবারে অন্তত আগামী একমাস তাদেরকে তিনবেলা খাবার নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। অনেকেই বলছেন, গাজীপুরের যুবলীগ নেতা শুধু রাসেল সরকারের মতো এই ভাবে প্রতিটি জেলার প্রতিটি শহরএবং গ্রামের যারা বিত্তশালী যারা সচ্ছল তারা সবাই এভাবে দরিদ্র অতি দরিদ্র মানুষদের পাশে এসে দাঁড়ালেই অতিদরিদ্ররা কিছুটা হলেও উপকৃত হবেন।
কামরুল আহসান সরকার বলেন, আমি খুব কাছ থেকে দেখছিলাম, তারা খুব কষ্টের মধ্যে কাটছে সময়। আমি আমার সাধ্যমতো পাশে দাড়িয়েছি। যার সামর্থ্য আছে সবারই এইসব মানুষের পাশে দাড়ানো উচিত।
একইভাবে আজকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের ছোট ছোট উদ্যোগগুলো আশাবাদী করে তুলছে মানুষের মধ্যে। ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে হাত ধোয়ার জন্য বসানো হয়েছে হাত ধোয়ার ২৫টি বেসিন। এমনকি মাইকিং করে করোনার ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরছেন স্থানীয় কাউন্সিলর ফোরকান হোসেন।
কাউন্সিলর ফোরকান হোসেন বলেন, শ্রমজীবী মানুষকে করোনা সচেতনার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে, হাত ধোয়ার জন্য ২৫টি বেসিন বসানোর ব্যবস্থা করেছি।