পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে মসজিদভিত্তিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। বড় কাহু এলাকায় দু’টি মসজিদ সিল করে দেয়ার পর এমন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এক সপ্তাহের জন্য এই বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে মসজিদের ভিতরে বসে তাবলিগ জামাতের কর্মসূচি বন্ধ থাকবে। এমন জামাতে বিদেশী এক অতিথির দেহে করোনা ভাইরাস পজেটিভ পাওয়া যায়। তারপরই মসজিদের ভিতরে আপাতত তাবলিগ জামাতের কর্মকাণ্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডন। যে মসজিদে তাবলিগ জামাত হয়েছে এবং তাতে আক্রান্ত ব্যক্তিকে যেভাবে তার গ্রুপের লোকজন ঘিরে রেখে অবস্থান করছিলেন তার সমালোচনা করেছেন ডেপুটি কমিশনার হামজা শাফকাত।
রোববার তিনি টুইটারে বলেছেন, ভয়াবহভাবে অবহেলা করা হয়েছে। অপরাধজনক বেখেয়ালিপনা হয়েছে। এটা করেছে তবলিগ জামাত ও এর দায় কিছুটা খতিবের ওপরও বর্তায়। তারা জানতেন একজনের দেখা দিয়েছে করোনার লক্ষণ। তারপরও তারা তাকে নিয়ে দলবদ্ধভাবে অবস্থান করছিলেন।
এ নিয়ে হামজা শাফকাত বলেছেন, ওই মসজিদটি জীবাণুমুক্ত করে তারপর সিল করে দেয়া হয়েছে। আক্রান্ত রোগী কিরগিজস্তানের নাগরিক। তাকে সেখান থেকে তুলে নিয়ে হাজী ক্যাম্পে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। তার অন্য সঙ্গীদের একই স্থানে কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে। তারা এর আগে অবস্থান করছিলেন বিলাল মসজিদে। সেই মসজিদও সিল করে দেয়া হয়েছে। এ মসজিদ দু’টি ইসলামাবাদের ঘনবসতিপূর্ণ বড় কাহু এলাকায় অবস্থিত। কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করছে, এত ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় এখানে করোনা দ্রুত বিস্তার ঘটাতে পারে। কিন্তু করোনা প্রতিরোধে গৃহীত পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা নিয়ে কিছু ধর্মীয় নেতার বাধার মুখে পড়েছে প্রশাসন। সরকারের এমন কর্মসূচির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছেন মাওলানা আবদুল আজিজ। শুক্রবার এসব ব্যবস্থার বিরুদ্ধে গিয়ে লাল মসজিদে বয়ান করেছেন তিনি। সেখানে জনগণের সঙ্গে তার মিশে যাওয়ার ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অবস্থার প্রেক্ষিতে প্রশাসন ও পুলিশ রাষ্ট্র মালিকানাধীন লাল মসজিদের চারপাশের ব্লকেড বা অবরোধ প্রত্যাহার করে। বর্তমানে এই মসজিদ দখলে রেখেছেন মাওলানা আবদুল আজিজ ও জামিয়া হাফসার শিক্ষার্থীরা।
প্রতি ওয়াক্তে মসজিদে না গিয়ে লোকজনকে বাড়িতে নামাজ আদায় করার জন্য ধর্মীয় নেতাদের উৎসাহী করতে আহ্বান জানানো হয়েছিল। ধর্মীয় নেতারা যাতে এমন উৎসাহ সৃষ্টি করেন এ জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল পুলিশকে। বিলাল মসজিদের কারী আজমল বলেছেন, মক্কা মসজিদের ভিতরে তাবলিগ জামাত অবস্থানকালে আমাদের ভাই ও অতিথি আবদুল মোমিনের নাক দিয়ে সর্দি ঝরা শুরু হয়, মাথা ব্যথা হয়। এলার্জি দেখা দেয়। তাবলিগ জামাতের স্থানীয় সদস্যদের একজন তাকে নিয়ে যান পিম্পস-এ। সেখানে তার পরীক্ষা হয়। যে ব্যক্তি মোমিনকে সেখানে নিয়ে গিয়েছিলেন তাকে ২১শে মার্চ ডেকে পাঠায় কর্তৃপক্ষ। তারা জানতে পারে যে, জামাতটি ২০শে মার্চ বিলাল মসজিদে অবস্থান করেছিল। সমস্যা দেখা দেয়ায় সহকারি কমিশনার, পুলিশ ও এম্বুলেন্স এসে ওই দু’টি মসজিদ সিল করে দিয়েছে।