ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনসমাগম এড়িয়ে চলার সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক দু’টি বিয়ে বন্ধ করা হলেও মহাধুমধামে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. শাহআলম।
শুক্রবার দুপুরে শহরের দাতিয়ারা অবকাশ এলাকার সিভিল সার্জনের সরকারি বাসভবনে এই বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
বিয়েতে সরকারি কর্মকর্তা, চিকিৎসক, বিভিন্ন ক্লিনিক মালিক, গণমাধ্যমকর্মী, রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ সিভিল সার্জন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা উপস্থিত ছিলেন। এনিয়ে শহরে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, সিভিল সার্জন ডা. মো. শাহ আলমের মেয়ে দন্ত চিকিৎসক শাহনিন আলম মেমোর সঙ্গে সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের চিনাইর গ্রামের বাসিন্দা প্রকৌশলী মঈনুল ইসলামের শুক্রবার বিয়ে সম্পন্ন হয়।
বিয়ে উপলক্ষে অবকাশ সংলগ্ন সরকারি বাসভবন চত্বরে প্যান্ডেল বানিয়ে মহাধুমধামে চলে আয়োজন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাসভবনের প্রধান ফটকের ভেতরে ফুল দিয়ে নির্মিত একটি তোরণ। ভেতরে নির্মাণ করা হয়েছে একটি প্যান্ডেল। বাসভবনের ভেতরে চলছে রান্না-বান্নার আয়োজন। জুমার নামাজের পর থেকেই শুরু হয় অতিথিদের আগমন। দুপুর দুইটার দিকে বিয়ে বাড়িতে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ফায়েজুর রহমান, জেলার বিভিন্ন ক্লিনিকের ডেন্টাল চিকিৎসকদের একটি দল, বিভিন্ন ক্লিনিকের মালিকদের একটি দল, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারি, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারিসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা যোগ দেন।
এদিকে বিয়ে বাড়িতে সাংবাদিকদের প্রবেশ ঠেকাতে শুধুমাত্র আমন্ত্রিত অতিথি ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। গেইটের বাইরেও ছিলো সিভিল সার্জনের পরিবারের লোকজনের সতর্ক পাহারা। বিয়েতে প্রায় পাঁচ শতাধিক অতিথি খাওয়ানো হয় বলে আমন্ত্রিত অতিথিদের সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. মো. শাহ আলম বলেন, আগেই বিয়ের তারিখ ঠিক করেছিলাম। এখন কিভাবে মেয়ের বিয়ে বন্ধ করে দেই? খুবই স্বল্প পরিসরে মেয়ের বিয়ের আয়োজন করেছি।
তিনি বলেন, বিয়েতে শুধু নিজের ভাই-বোন ও তাদের পরিবারের সদস্যদের দাওয়াত করেছি। বাইরের কাউকে নিমন্ত্রণ করিনি।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার বলেন, করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে সিভিল সার্জন ডা. মো. শাহআলম মেয়ের বিয়ের আয়োজন করায় আমরা বিব্রত।
জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন জানান, বিষয়টি আমরা শুনেছি। খোঁজ নিচ্ছি। করোনাভাইরাসের জন্য জনসমাগম এড়িয়ে চলার জন্য সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। কেউই জবাবদিহিতার উর্ধ্বে নয়।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ ডিসেম্বর রাতে থার্টি ফাস্ট নাইর্ট উদযাপন করতে সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে মাইক লাগিয়ে গানের আসর ও আতশবাজি ফুটিয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন সিভিল সার্জন ডা. মো. শাহআলম।
সূত্র সমকাল